Logo
  • Home
  • শ্রী শ্রী গীতা
  • সনাতন ধর্ম
  • সুনির্বাচিত
  • সকল সংবাদ
  • বিনোদন
  • দরকারী তথ্য
  • Online

   ভগবান শ্রীকৃষ্ণ বিশ্ববাসীর উদ্দেশ্যে অর্জুনকে শ্রীমদ্ভগবদগীতা জ্ঞান দান করেন  ১৮.মোক্ষযোগ........
 ১৭.শ্রদ্ধাত্রয়বিভাগযোগ...
  শ্রী শ্রী গীতার জ্ঞান সহজে উপলব্ধির উপায়- পৃঃ ২, ৩ , ৪ . . ১২ ১৬.দৈবাসুরসম্পদবিভাগযোগ.
 ১৫.পুরুষোত্তমযোগ.........
  শ্রীমদ্ভগবদগীতার সারমর্ম তথা গীতার সার-কথা কি ?  ১৪.গুণত্রয়বিভাগযোগ......
  প্রশ্নত্তোর শ্রীভগবানের মুখে যুদ্ধের কথা কেন ?  ১৩.ক্ষেত্রক্ষেত্রজ্ঞবিভাগ....
 ১২.ভক্তিযোগ................
  গীতাপাঠপূর্ব মঙ্গলাচরণ:- ও গীতার ধ্যান:-  ১১.বিশ্বরূপদর্শনযোগ.......
 ১০.বিভূতিযোগ.............
  শ্রীবৈষ্ণবীয়-তন্ত্রসারে গীতা-মাহাত্ম্য  ০৯.রাজবিদ্যারাজগুহ্যযোগ
  শ্রীশঙ্করাচার্য প্রণীত গীতা-মাহাত্ম্য   ০৮.অক্ষরব্রহ্মযোগ........
  ব্যাসদেব কৃত গীতা-মাহাত্ম্য   ০৭.জ্ঞানবিজ্ঞানযোগ.......
 ০৬.ধ্যানযোগ..............
  শ্রীমদ্ভাগবত    ০৫.কর্মসন্যাসযোগ........
 ০৪.জ্ঞানযোগ................
 পটভূমি   ০৩.কর্মযোগ..............
 ০২.সাংখ্যযোগ.............
০১.অর্জুনবিষাদযোগ......

কর্মষটক *

ভক্তিষটক *

জ্ঞানষটক *

শ্রীমদ্ভগবদগীতা

গীতা অডিও :১১শ অধ্যায়-
সংস্কৃত শ্লোক ও অনুবাদ-

-:Back ১১শ অধ্যায়: বিশ্বরূপদর্শনযোগ (শ্লোক: 55) শ্লোক ও অর্থ দেখতে নিচে ক্লিক করুন Next:-

1:মদনুগ্রহায়. 2:ভবাপ্যয়ৌ হি.. 3:এবমেতদ্ যথাত্থ.. 4:মন্যসে যদি. 5:পশ্য মে পার্থ 6:পশ্যাদিত্যান্
7:ইহৈকস্থং জগৎ 8: ন তু মাং শক্যসে 9:এবমুক্ত্বা ততো. 10:অনেকবক্ত্রনয়ন 11:দিব্যমাল্যাম্বরধরং 12:দিবি সূর্যসহস্রস্য
13: তত্রৈকস্থং 14:ততঃ স বিস্ময়া 15:পশ্যামি দেবাংস্তব 16:অনেকবাহূদর 17:কিরীটিনং 18:ত্বমক্ষরং পরমং
19:অনাদি মধ্যান্ত. 20:দ্যাবাপৃথিব্যোরি 21:অমী হি ত্বাং 22: রুদ্রাদিত্যা বসবো 23: রূপং মহত্তে 24: নভঃস্পৃশং
25:দংষ্ট্রাকরালানি 26: অমী চ ত্বাং 27:বক্ত্রাণি তে 28:যথা নদীনাং 29: যথা প্রদীপ্তং 30:লেলিহ্যসে গ্রসমান
31:আখ্যাহি মে কো 32:কালোহস্মি 33:তস্মাত্ত্বমুত্তিষ্ঠ যশ 34:দ্রোণং চ ভীষ্মং 35:এতচ্ছ্রুত্বা বচনং 36:স্থানে হৃষীকেশ
37: কস্মাচ্চ তে ন 38:ত্বমাদিদেবঃ 39:বায়ুর্যমোহগ্নির্বরু 40:নমঃ পুরস্তাদথ 41:সখেতি মত্বা 42:যচ্চাবহাসার্থমসৎ
43:পিতাসি লোকস্য 44:তস্মাৎ প্রণম্য 45:অদৃষ্টপূর্বং 46:কিরীটিনং গদিনং 47:ময়া প্রসন্নেন 48:ন বেদযজ্ঞাধ্যয়নৈর্ন
49:মা তে ব্যথা মা 50: ইত্যর্জুনং 51: দৃষ্ট্বেদং মানুষং 52: সুদুর্দশমিদং 53: নাহং বেদৈর্ন 54: ভক্ত্যা ত্বনন্যয়া
55:মৎকর্মকৃন্মৎপরমো উপসংহার:-
শ্লোক: . .

  অনুবাদ : . . .

১১শ অধ্যায়: বিশ্বরূপদর্শনযোগ-এর সার সংক্ষেপ:-

এই উদ্যোগটি আপনার ভাল লাগলে প্রচার কার্যে সহযোগিতা করবেন এটুকু প্রার্থনা রইল ।





শ্লোক:

=অনুবাদ=

শ্লোক: 1:
অর্জুন উবাচ
মদনুগ্রহায় পরমং গুহ্যমধ্যাত্মসংজ্ঞিতম্ ।
যত্ত্বয়োক্তং বচস্তেন মোহোহয়ং বিগতো মম ॥১॥

মৎ-অনুগ্রহায়, পরমম্, গুহ্যম্, অধ্যাত্ম-সংজ্ঞিতম্,
যৎ, ত্বয়া, উক্তম্, বচঃ, তেন, মোহঃ, অয়ম্, বিগতঃ, মম ॥১॥
অনুবাদ : অর্জুন বললেন- আমার প্রতি অনুগ্রহ করে তুমি যে অধ্যাত্মতত্ত্ব সম্বন্ধীয় পরম গুহ্য উপদেশ আমাকে দিয়েছ, তার দ্বারা আমার এই মোহ দূর হয়েছে।

শ্লোকের তাৎপর্য ও পাঠকের মতামত
শ্লোক: 2:
ভবাপ্যয়ৌ হি ভূতানাং শ্রুতৌ বিস্তরশো ময়া ।
ত্বত্তঃ কমলপত্রাক্ষ মাহাত্মমপি চাব্যয়ম্ ॥২॥

ভব-অপ্যয়ৌ, হি, ভূতানাম্, শ্রুতৌ, বিস্তরশঃ, ময়া,
ত্বৎ-তঃ, কমল-পত্র-অক্ষ, মাহাত্মম্, অপি, চ, অব্যয়ম্ ॥২॥
অনুবাদ : হে পদ্মপলাশলোচন ! সর্বভূতের উৎপত্তি ও প্রলয় তোমার থেকেই হয় এবং তোমার কাছ থেকেই আমি তোমার অব্যয় মাহাত্ম্য অবগত হলাম।

শ্লোকের তাৎপর্য ও পাঠকের মতামত
শ্লোক: 3:
এবমেতদ্ যথাত্থ ত্বমাত্মানং পরমেশ্বর ।
দ্রষ্টুমিচ্ছামি তে রূপমৈশ্বরং পুরুষোত্তম ॥৩॥

এবম্, এতৎ, যথা, আত্থ, ত্বম্, আত্মানম্, পরমেশ্বর,
দ্রষ্টুম্, ইচ্ছামি, তে, রূপম্, ঐশ্বরম্, পুরুষ-উত্তম ॥৩॥
অনুবাদ : হে পরমেশ্বর ! তোমার সম্বন্ধে যেরূপ বলেছ, যদিও আমার সম্মুখে তোমাকে সেই রূপেই দেখতে পাচ্ছি, তবুও হে পুরুষোত্তম ! তুমি যে ভাবে এই বিশ্বে প্রবেশ করেছ, আমি তোমার সেই ঐশ্বর্যময় রূপ দেখতে ইচ্ছা করি।

শ্লোকের তাৎপর্য ও পাঠকের মতামত
শ্লোক: 4:
মন্যসে যদি তচ্ছক্যং ময়া দ্রষ্টুমিতি প্রভো ।
যোগেশ্বর ততো মে ত্বং দর্শয়াত্মানমব্যয়ম্ ॥৪॥

মন্যসে, যদি, তৎ, শক্যম্, ময়া, দ্রষ্টুম্, ইতি, প্রভো,
যোগেশ্বর, ততঃ, মে, ত্বম্, দর্শয়, আত্মানম্, অব্যয়ম্ ॥৪॥
অনুবাদ : হে প্রভু, তুমি যদি মনে কর যে, আমি তোমার এই বিশ্বরূপ দর্শন করার যোগ্য, তা হলে হে যোগেশ্বর ! আমাকে তোমার সেই নিত্যস্বরূপ দেখাও।

শ্লোকের তাৎপর্য ও পাঠকের মতামত
শ্লোক: 5:
শ্রীভগবানুবাচ
পশ্য মে পার্থ রূপাণি শতশোহথ সহস্রশঃ ।
নানাবিধানি দিব্যানি নানা বর্ণাকৃতীনি চ ॥৫॥

পশ্য, মে, পার্থ, রূপাণি, শতশঃ, অথ, সহস্রশঃ,
নানাবিধানি, দিব্যানি, নানা-বর্ণ-আকৃতীনি, চ ॥৫॥
অনুবাদ : শ্রীভগবান বললেন- হে পার্থ ! নানা বর্ণ ও নানা আকৃতি-বিশিষ্ট শত শত ও সহস্র সহস্র আমার বিভিন্ন দিব্য রূপসমূহ দর্শন কর।

শ্লোকের তাৎপর্য ও পাঠকের মতামত
শ্লোক: 6:
পশ্যাদিত্যান্ বসূন্ রুদ্রানঅশ্বিনৌ মরুতস্তথা ।
বহূন্যদৃষ্টপূর্বাণি পশ্যাশ্চর্যাণি ভারত ॥৬॥

পশ্য, আদিত্যান্, বসূন্, রুদ্রান্, অশ্বিনৌ, মরুতঃ, তথা,
বহূনি, অদৃষ্ট-পূর্বাণি, পশ্য, আশ্চর্যাণি, ভারত ॥৬॥
অনুবাদ : হে ভারত, দ্বাদশ আদিত্য, অষ্টবসু, একাদশ রুদ্র, অশ্বিনীকুমারদ্বয়, উনপঞ্চাশ মরুত এবং অনেক অদৃষ্টপূর্ব আশ্চর্য রূপ দেখ।

শ্লোকের তাৎপর্য ও পাঠকের মতামত
শ্লোক: 7:
ইহৈকস্থং জগৎ কৃৎস্নং পশ্যাদ্য সচরাচরম্ ।
মম দেহে গুড়াকেশ যচ্চান্যদ্ দ্রষ্টুমিচ্ছসি ॥৭॥

ইহ, একস্থম্, জগৎ, কৃৎস্নম্, পশ্য, অদ্য, স-চর-অচরম্,
মম, দেহে, গুড়াকেশ, যৎ, চ, অন্যৎ, দ্রষ্টুম্, ইচ্ছসি ॥৭॥
অনুবাদ : হে অর্জুন ! আমার এই বিরাট শরীরে একত্রে অবস্থিত সমগ্র স্থাবর-জঙ্গমাত্মক বিশ্ব এবং অন্য যা কিছু দেখতে ইচ্ছা কর, তা এক্ষণে দর্শন কর।

শ্লোকের তাৎপর্য ও পাঠকের মতামত
শ্লোক: 8:
ন তু মাং শক্যসে দ্রষ্টুমনেনৈব স্বচক্ষুষা ।
দিব্যং দদামি তে চক্ষুঃ পশ্য মে যোগমৈশ্বরম্ ॥৮॥

ন, তু, মাম্, শক্যসে, দ্রষ্টুম্, অনেন, এব, স্ব-চক্ষুষা,
দিব্যম্, দদামি, তে, চক্ষুঃ, পশ্য, মে, যোগম্, ঐশ্বরম্ ॥৮॥
অনুবাদ : কিন্তু তুমি তোমার বর্তমান চক্ষুর দ্বারা আমাকে দর্শন করতে সক্ষম হবে না। তাই, আমি তোমাকে দিব্যচক্ষু প্রদান করছি৷ তুমি আমার অচিন্ত্য যোগৈশ্বর্য দর্শন কর !

শ্লোকের তাৎপর্য ও পাঠকের মতামত
শ্লোক: 9:
সঞ্জয় উবাচ
এবমুক্ত্বা ততো রাজন্ মহাযোগেশ্বরো হরিঃ ।
দর্শয়ামাস পার্থায় পরমং রূপমৈশ্বরম্ ॥৯॥

এবম্, উক্ত্বা, ততঃ, রাজন্, মহাযোগ-ঈশ্বরঃ, হরিঃ,
দর্শয়ামাস, পার্থায়, পরমম্, রূপম্, ঐশ্বরম্ ॥৯॥
অনুবাদ : সঞ্জয় বললেন- হে রাজন ! এভাবেই বলে, মহান যোগেশ্বর ভগবান শ্রীকৃষ্ণ অর্জুনকে তাঁর বিশ্বরূপ দেখালেন।

শ্লোকের তাৎপর্য ও পাঠকের মতামত
শ্লোক: 10:
অনেকবক্ত্রনয়নমনেকাদ্ভুতদর্শনম্ ।
অনেকদিব্যাভরণং দিব্যানেকোদ্যতায়ুধম্ ॥১০॥

অনেক-বক্ত্র-নয়নম্, অনেক-অদ্ভুত-দর্শনম্ ।
অনেক-দিব্য-আভরণম্, দিব্য-অনেক-উদ্যত-আয়ুধম্ ॥১০॥
অনুবাদ : অর্জুন সেই বিশ্বরূপে অনেক মুখ, অনেক নেত্র ও অনেক অদ্ভুত দর্শনীয় বস্তু দেখলেন৷ সেই রূপ অসংখ্য দিব্য অলঙ্কারে সজ্জিত ছিল এবং অনেক উদ্যত দিব্য অস্ত্র ধারণ করেছিল৷ সেই বিশ্বরূপ দিব্য মালা ও দিব্য বস্ত্রে ভূষিত ছিল এবং তাঁর শরীর দিব্য গন্ধ দ্বারা অনুলিপ্ত ছিল৷সবই ছিল অত্যন্ত আশ্চর্যজনক, জ্যোর্তিময়, অনন্ত ও সর্বব্যপী।

শ্লোকের তাৎপর্য ও পাঠকের মতামত
শ্লোক: 11:
দিব্যমাল্যাম্বরধরং দিব্যগন্ধানুলেপনম্ ।
সর্বাশ্চর্যময়ং দেবমনন্তং বিশ্বতোমুখম্ ॥১১॥

দিব্য-মাল্য-অম্বর-ধরম্, দিব্য-গন্ধ-অনুলেপনম্ ,
সর্ব-আশ্চর্যময়ম্, দেবম্, অনন্তম্, বিশ্বতঃ-মুখম্ ॥১১॥
শ্লোক: 12:
দিবি সূর্যসহস্রস্য ভবেদ্ যুগপদুত্থিতা ।
যদি ভাঃ সদৃশী সা স্যাদ্ ভাসস্তস্য মহাত্মনঃ ॥১২॥

দিবি, সূর্য-সহস্রস্য, ভবেৎ, যুগপৎ, উত্থিতা,
যদি, ভাঃ, সদৃশী, সা, স্যাৎ, ভাসঃ, তস্য, মহাত্মনঃ ॥১২॥
অনুবাদ : যদি আকাশে সহস্র সূর্যের প্রভা যুগপৎ উদিত হয়, তা হলে সেই মহাত্মা বিশ্বরূপের প্রভার কিঞ্চিৎ তুল্য হতে পারে।

শ্লোকের তাৎপর্য ও পাঠকের মতামত
শ্লোক: 13:
তত্রৈকস্থং জগৎ কৃৎস্নং প্রবিভক্তমনেকধা ।
অপশ্যদ্দেবদেবস্য শরীরে পাণ্ডবস্তদা ॥১৩॥

তত্র, একস্থম্, জগৎ, কৃৎস্নম্, প্রবিভক্তম্, অনেকধা,
অপশ্যৎ, দেবদেবস্য, শরীরে, পাণ্ডবঃ, তদা ॥১৩॥
অনুবাদ : তখন অর্জুন পরমেশ্বর ভগবানের বিশ্বরূপে নানাভাবে বিভক্ত সমগ্র জগৎ একত্রে অবস্থিত দেখলেন।

শ্লোকের তাৎপর্য ও পাঠকের মতামত
শ্লোক: 14:
ততঃ স বিস্ময়াবিষ্টো হৃষ্টরোমা ধনঞ্জয়ঃ ।
প্রণম্য শিরসা দেবং কৃতাঞ্জলিরভাষত ॥১৪॥

ততঃ, সঃ, বিস্ময়-আবিষ্টঃ, হৃষ্ট-রোমা, ধনঞ্জয়ঃ,
প্রণম্য, শিরসা, দেবম্, কৃতাঞ্জলিঃ, অভাষত ॥১৪॥
অনুবাদ : তারপর সেই অর্জুন বিস্মিত ও রোমাঞ্চিত হয়ে এবং অবনত মস্তকে ভগবানকে প্রণাম করে করজোড়ে বলতে লাগলেন ।

শ্লোকের তাৎপর্য ও পাঠকের মতামত
শ্লোক: 15:
অর্জুন উবাচ
পশ্যামি দেবাংস্তব দেব দেহে
সর্বাংস্তথা ভূতবিশেষসঙ্ঘান্ ।
ব্রহ্মাণমীশং কমলাসনস্থম্
ঋষীংশ্চ সর্বানুরগাংশ্চ দিব্যান্ ॥১৫॥

পশ্যামি, দেবান্, তব, দেব, দেহে,
সর্বান্, তথা, ভূতবিশেষ-সঙ্ঘান্ ।
ব্রহ্মাণম্, ঈশম্, কমলাসনস্থম্
ঋষীন্, চ, সর্বান্, উরগান্, চ, দিব্যান্ ॥১৫॥
অনুবাদ : অর্জুন বললেন- হে দেব ! তোমার দেহে দেবতাদের, বিবিধ প্রাণীদের, কমলাসনে স্থিত ব্রহ্মা, শিব, ঋষিদের ও দিব্য সর্পদেরকে দেখছি।

শ্লোকের তাৎপর্য ও পাঠকের মতামত
শ্লোক: 16:
অনেকবাহূদরবক্ত্রনেত্রং
পশ্যামি ত্বাং সর্বতোহনন্তরূপম্ ।
নান্তং ন মধ্যং ন পুনস্তবাদিং
পশ্যামি বিশ্বেশর বিশ্বরূপ ॥১৬॥

অনেক-বাহূ-উদর-বক্ত্র-নেত্রম্,
পশ্যামি, ত্বাম্, সর্বতঃ, অনন্ত-রূপম্,
ন, অন্তম্, ন, মধ্যম্, ন, পুনঃ, তব, আদিম্,
পশ্যামি, বিশ্ব-ঈশর, বিশ্বরূপ ॥১৬॥
অনুবাদ : হে বিশ্বেশ্বর ! হে বিশ্বরূপ ! তোমার দেহে অনেক বাহু, উদর, মুখ এবং সর্বত্র অনন্ত রূপ দেখছি। আমি তোমার আদি, মধ্য ও অন্ত কিছুই দেখতে পাচ্ছি না।

শ্লোকের তাৎপর্য ও পাঠকের মতামত
শ্লোক: 17:
কিরীটিনং গদিনং চক্রিণং চ
তেজোরাশিং সর্বতো দীপ্তিমন্তম্ ।
পশ্যামি ত্বাং দুর্নিরীক্ষ্যং সমন্তাদ্
দীপ্তানলার্কদ্যুতিমপ্রমেয়ম্ ॥১৭॥

কিরীটিনম্, গদিনম্, চক্রিণম্, চ,
তেজঃ-রাশিম্, সর্বতঃ, দীপ্তিমন্তম্,
পশ্যামি, ত্বাম্, দুঃ-নিরীক্ষ্যম্, সমন্তাৎ,
দীপ্ত-অনল-অর্কদ্যুতিম্, অপ্রমেয়ম্ ॥১৭॥
অনুবাদ : কিরীট শোভিত, গদা ও চক্রধারী, সর্বত্র দিপ্তীমান, তেজঃপুঞ্জ-স্বরূপ, দুর্নিরীক্ষ্য, প্রদীপ্ত অগ্নি ও সূর্যের মতো প্রভাবিশিষ্ট এবং অপ্রমেয় স্বরূপ তোমাকে আমি সর্বত্রই দেখছি।

শ্লোকের তাৎপর্য ও পাঠকের মতামত
শ্লোক: 18:
ত্বমক্ষরং পরমং বেদিতব্যং
ত্বমস্য বিশ্বস্য পরং নিধানম্ ।
ত্বমব্যয়ঃ শাশ্বতধর্মগোপ্তা
সনাতনস্ত্বং পুরুষো মতো মে ॥১৮॥

ত্বম্, অক্ষরম্, পরমম্, বেদিতব্যম্,
ত্বম্, অস্য, বিশ্বস্য, পরম্, নিধানম্,
ত্বম্, অব্যয়ঃ, শাশ্বত-ধর্ম-গোপ্তা,
সনাতনঃ, ত্বম্, পুরুষঃ, মতঃ, মে ॥১৮॥
অনুবাদ : তুমি পরম ব্রহ্ম এবং একমাত্র জ্ঞাতব্য। তুমি বিশ্বের পরম আশ্রয়৷ তুমি অব্যয়, সনাতন ধর্মের রক্ষক এবং সনাতন পরম পুরুষ৷ এই আমার অভিমত।

শ্লোকের তাৎপর্য ও পাঠকের মতামত
শ্লোক: 19:
অনাদিমধ্যান্তমনন্তবীর্যম্
অনন্তবাহুং শশিসূর্যনেত্রম্ ।
পশ্যামি ত্বাং দীপ্তহুতাশবক্ত্রং
স্বতেজসা বিশ্বমিদং তপন্তম্ ॥১৯॥

অনাদি-মধ্য-অন্তম্, অনন্ত-বীর্যম্,
অনন্ত-বাহুম্, শশি-সূর্য-নেত্রম্,
পশ্যামি, ত্বাম্, দীপ্ত-হুতাশ-বক্ত্রম্,
স্বতেজসা, বিশ্বম্, ইদম্, তপন্তম্ ॥১৯॥
অনুবাদ : আমি দেখছি তোমার আদি, মধ্য ও অন্ত নেই৷ তুমি অনন্ত বীর্যশালী ও অসংখ্য বাহুবিশিষ্ট এবং চন্দ্র ও সূর্য তোমার চক্ষুদ্বয়৷ তোমার মুখমণ্ডলে প্রদীপ্ত অগ্নির জ্যোতি এবং তুমি স্বীয় তেজে সমস্ত জগৎ সন্তপ্ত করছ।

শ্লোকের তাৎপর্য ও পাঠকের মতামত
শ্লোক: 20:
দ্যাবাপৃথিব্যোরিদমন্তরং হি
ব্যাপ্তং ত্বয়ৈকেন দিশশ্চ সর্বাঃ ।
দৃষ্ট্বাদ্ভুতং রূপমুগ্রং তবেদং
লোকত্রয়ং প্রব্যথিতং মহাত্মন্ ॥২০॥

দ্যাবা-পৃথিব্যোঃ, ইদম্, অন্তরম্, হি,
ব্যাপ্তম্, ত্বয়া, একেন, দিশঃ, চ, সর্বাঃ,
দৃষ্ট্বা, অদ্ভুতম্, রূপম্, উগ্রম্, তব, ইদম্,
লোকত্রয়ম্, প্রব্যথিতম্, মহাত্মন্ ॥২০॥
অনুবাদ : তুমি একাই স্বর্গ ও মর্ত্যের মধ্যবর্তী অন্তরীক্ষ ও দশদিক পরিব্যাপ্ত করে আছ। হে মহাত্মন্ ! তোমার এই অদ্ভুত ও ভয়ঙ্কর রূপ দর্শন করে ত্রিলোক অত্যন্ত ভীত হচ্ছে।

শ্লোকের তাৎপর্য ও পাঠকের মতামত
শ্লোক: 21:
অমী হি ত্বাং সুরসঙ্ঘাঃ বিশন্তি
কোচিদ্ ভীতাঃ প্রাঞ্জলয়ো গৃণন্তি ।
স্বস্তীত্যুক্ত্বা মহর্ষিসিদ্ধসঙ্ঘাঃ
স্তুবন্তি ত্বাং স্তুতিভিঃ পুষ্কলাভিঃ।২১॥

অমী, হি, ত্বাম্, সুরসঙ্ঘাঃ, বিশন্তি,
কোচিৎ, ভীতাঃ, প্রাঞ্জলয়ঃ, গৃণন্তি,
স্বস্তী, ইতি, উক্ত্বা, মহা-ঋষি-সিদ্ধ-সঙ্ঘাঃ,
স্তুবন্তি, ত্বাম্, স্তুতিভিঃ, পুষ্কলাভিঃ।২১॥
অনুবাদ : সমস্ত দেবতারা তোমার শরণাগত হয়ে তোমাতেই প্রবেশ করছেন। কেউ কেউ ভীত হয়ে করজোড়ে তোমার গুণগান করছেন৷ মহর্ষি ও সিদ্ধেরা 'জগতের কল্যাণ হোক' বলে প্রচুর স্তুতি বাক্যের দ্বারা তোমার স্তব করছেন।

শ্লোকের তাৎপর্য ও পাঠকের মতামত
শ্লোক: 22:
রুদ্রাদিত্যা বসবো যে চ সাধ্যা
বিশ্বেহশ্বিনৌ মরুতশ্চোষ্মপাশ্চ ।
গন্ধর্বযক্ষাসুরসিদ্ধসঙ্ঘাঃ
বীক্ষন্তে ত্বাং বিস্মিতাশ্চৈব সর্বে ॥২২॥

রুদ্র-আদিত্যাঃ, বসবঃ, যে, চ, সাধ্যাঃ,
বিশ্বে, অশ্বিনৌ, মরুতঃ, চ, উষ্মপাঃ, চ,
গন্ধর্ব-যক্ষা-অসুর-সিদ্ধসঙ্ঘাঃ,
বীক্ষন্তে, ত্বাম্, বিস্মিতাঃ, চ, এব সর্বে ॥২২॥
অনুবাদ : রুদ্রগণ, আদিত্যগণ, সাধ্য নামক দেবতারা, বসুগণ, বিশ্বদেবগণ, অশ্বিনীকুমারদ্বয়, মরুতগণ, পিতৃগণ, গন্ধর্বগণ, যক্ষগণ, অসুরগণ ও সিদ্ধগণ সকলেই বিস্মৃত হয়ে তোমাকে দর্শন করছে ।

শ্লোকের তাৎপর্য ও পাঠকের মতামত
শ্লোক: 23:
রূপং মহত্তে বহুবক্ত্রনেত্রং
মহাবাহো বহুবাহূরুপাদম্ ।
বহূদরং বহুদংষ্ট্রাকরালং
দৃষ্ট্বা লোকাঃ প্রব্যথিতাস্তথাহম্ ॥২৩॥

রূপম্, মহৎ, তে, বহু-বক্ত্র-নেত্রম্,
মহাবাহো, বহু-বাহু-ঊরু-পাদম্,
বহু-উদরম্, বহু-দংষ্ট্রা-করালম্,
দৃষ্ট্বা, লোকাঃ, প্রব্যথিতাঃ, তথা, অহম্ ॥২৩॥
অনুবাদ : হে মহাবাহু ! বহু মুখ, বহু চক্ষু, বহু বাহু , বহু উরু, বহু চরণ, বহু উদর ও অসংখ্য করাল দন্তবিশিষ্ট তোমার বিরাটরূপ দর্শন করে সমস্ত প্রাণী অত্যন্ত ব্যথিত হচ্ছে এবং আমিও অত্যন্ত ব্যথিত হচ্ছি।

শ্লোকের তাৎপর্য ও পাঠকের মতামত
শ্লোক: 24:
নভঃস্পৃশং দীপ্তমনেকবর্ণং
ব্যাত্তাননং দীপ্তবিশালনেত্রম্ ।
দৃষ্ট্বা হি ত্বাং প্রব্যথিতান্তরাত্মা
ধৃতিং ন বিন্দামি শমং চ বিষ্ণো ॥২৪॥

নভঃ-স্পৃশম্, দীপ্তম্, অনেক-বর্ণম্,
ব্যাত্ত-আননম্, দীপ্ত-বিশাল-নেত্রম্,
দৃষ্ট্বা, হি, ত্বাম্, প্রব্যথিত-অন্তরাত্মা,
ধৃতিম্, ন, বিন্দামি, শমম্, চ, বিষ্ণো ॥২৪॥
অনুবাদ : হে বিষ্ণু ! তোমার আকাশস্পর্শী, তেজময়, বিবিধ বর্ণযুক্ত, বিস্তৃত মুখমণ্ডল ও উজ্জ্বল আয়্ত চক্ষুবিশিষ্ট তোমাকে দেখে আমার হৃদয় ব্যথিত হচ্ছে এবং আমি ধৈর্য ও শম অবলম্বন করতে পারছি না।

শ্লোকের তাৎপর্য ও পাঠকের মতামত
শ্লোক: 25:
দংষ্ট্রাকরালানি চ তে মুখানি
দৃষ্ট্বৈব কালানলসন্নিভানি ।
দিশো ন জানে ন লভে চ শর্ম
প্রসীদ দেবেশ জগন্নিবাস ॥২৫॥

দংষ্ট্রা-করালানি, চ, তে, মুখানি,
দৃষ্ট্বা, এব, কাল-অনল-সন্নিভানি,
দিশঃ, ন, জানে, ন, লভে, চ, শর্ম,
প্রসীদ, দেব-ঈশ, জগৎ-নিবাস ॥২৫॥
অনুবাদ : হে দেবেশ ! হে জগন্নিবাস ! ভয়ঙ্কর দন্তযুক্ত ও প্রলয়াগ্নি তুল্য তোমার মুখসকল দেখে আমার দিকভ্রম হচ্ছে এবং আমি শান্তি পাচ্ছি না৷ তুমি আমার প্রতি প্রসন্ন হও।

শ্লোকের তাৎপর্য ও পাঠকের মতামত
শ্লোক: 26:
অমী চ ত্বাং ধৃতরাষ্ট্রস্য পুত্রাঃ
সর্বে সহৈবাবনিপালসঙ্ঘৈঃ ।
ভীষ্মো দ্রোণঃ সূতপুত্রস্তথাসৌ
সহাস্মদীয়ৈরপি যোধমুখ্যৈঃ ॥২৬॥

অমী, চ, ত্বাম্, ধৃতরাষ্ট্রস্য, পুত্রাঃ,
সর্বে, সহ, এব, অবনিপাল-সঙ্ঘৈঃ,
ভীষ্মঃ, দ্রোণঃ, সূতপুত্রঃ, তথা, অসৌ,
সহ, অস্মদীয়ৈঃ, অপি, যোধমুখ্যৈঃ ॥২৬॥

শ্লোক: 27:
বক্ত্রাণি তে ত্বরমাণা বিশন্তি
দংষ্ট্রাকরালানি ভয়ানকানি ।
কেচিদ্ বিলগ্না দশনান্তরেষু
সংদৃশ্যন্তে চুর্ণিতৈরুত্তমাঙ্গৈঃ ॥২৭॥

বক্ত্রাণি, তে, ত্বরমাণাঃ, বিশন্তি,
দংষ্ট্রা-করালানি, ভয়ানকানি,
কেচিৎ, বিলগ্নাঃ, দশন-অন্তরেষু,
সংদৃশ্যন্তে, চুর্ণিতৈঃ, উত্তম-অঙ্গৈঃ ॥২৭॥

শ্লোক: 28:
যথা নদীনাং বহবোহম্বুবেগাঃ
সমুদ্রমেবাভিমুখা দ্রবন্তি ।
তথা তবামী নরলোকবীরা
বিশন্তি বক্ত্রাণ্যভিবিজ্বলন্তি ॥২৮॥

যথা, নদীনাম্, বহবঃ, অম্বুবেগাঃ,
সমুদ্রম্, এব, অভিমুখাঃ, দ্রবন্তি,
তথা, তব, অমী, নরলোক-বীরাঃ,
বিশন্তি, বক্ত্রাণি, অভিবিজ্বলন্তি ॥২৮॥

শ্লোক: 29:
যথা প্রদীপ্তং জ্বলনং পতঙ্গা
বিশন্তি নাশায় সমৃদ্ধবেগাঃ ।
তথৈব নাশায় বিশন্তি লোকা-
স্তবাপি বক্ত্রাণি সমৃদ্ধবেগাঃ ॥২৯॥

যথা, প্রদীপ্তম্, জ্বলনম্, পতঙ্গাঃ,
বিশন্তি, নাশায়, সমৃদ্ধবেগাঃ,
তথা, এব, নাশায়, বিশন্তি, লোকাঃ,
তব, অপি, বক্ত্রাণি, সমৃদ্ধবেগাঃ ॥২৯॥

শ্লোক: 30:
লেলিহ্যসে গ্রসমানঃ সমন্তা-
ল্লোকান্ সমগ্রান্ বদনৈর্জ্বলদ্ভিঃ ।
তেজোভিরাপূর্য জগৎ সমগ্রং
ভাসস্তবোগ্রাঃ প্রতপন্তি বিষ্ণো ॥৩০॥

লেলিহ্যসে, গ্রসমানঃ, সমন্তাৎ,
লোকান্, সমগ্রান্, বদনৈঃ, জ্বলদ্ভিঃ,
তেজোভিঃ, আপূর্য, জগৎ, সমগ্রম্,
ভাসঃ, তব, উগ্রাঃ, প্রতপন্তি, বিষ্ণো ॥৩০॥
অনুবাদ : ধৃতরাষ্ট্রের পুত্রেরা, তাদের মিত্র সমস্ত রাজন্যবর্গ এবং ভীষ্ম, দ্রোণ, কর্ণ এবং আমাদের পক্ষের সমস্ত সৈন্যেরা তোমার করাল দন্তবিশিষ্ট মুখের মধ্যে দ্রুতবেগে প্রবেশ করছে এবং সেই দন্তমধ্যে বিলগ্ন হয়ে তাদের মস্তক চূর্ণিত হচ্ছে। নদীসমূহ যেমন সমুদ্রাভিমুখে প্রবাহিত হয়ে সমুদ্রে প্রবেশ করে, তেমনই নরলোকের বীরগণ তোমার জ্বলন্ত মুখবিবরে প্রবেশ করছে। পতঙ্গগণ যেমন দ্রুত গতিতে ধাবিত হয়ে মরণের জন্য জ্বলন্ত অগ্নিতে প্রবেশ করে, তেমনই এই লোকেরাও মৃত্যুর জন্য অতি বেগে তোমার মুখবিবরে প্রবেশ করছে। হে বিষ্ণু ! তুমি তোমার জ্বলন্ত মুখসমূহের দ্বারা সকল লোককে গ্রাস করছ এবং তোমার তেজোরাশির দ্বারা সমগ্র জগৎকে আবৃত করে সন্তপ্ত করছ।

শ্লোকের তাৎপর্য ও পাঠকের মতামত
শ্লোক: 31:
আখ্যাহি মে কো ভবানুগ্ররূপো
নমহস্তু তে দেববর প্রসীদ ।
বিজ্ঞাতুমিচ্ছামি ভবন্তমাদ্যং
ন হি প্রজানামি তব প্রবৃত্তিম্ ॥৩১॥

আখ্যাহি, মে, কঃ, ভবান্, উগ্ররূপঃ,
নমঃ, অস্তু, তে, দেববর, প্রসীদ,
বিজ্ঞাতুম, ইচ্ছামি, ভবন্তম্, মাদ্যম্,
ন, হি, প্রজানামি, তব, প্রবৃত্তিম্ ॥৩১॥
অনুবাদ : উগ্রমূর্তি তুমি কে, কৃপা করে আমাকে বল। হে দেবশ্রেষ্ঠ ! তোমাকে নমস্কার করি, তুমি প্রসন্ন হও। তুমি হ্চ্ছ আদিপুরুষ৷ আমি তোমার প্রবৃত্তি অবগত নই, আমি তোমাকে বিশেষভাবে জানতে ইচ্ছা করি।

শ্লোকের তাৎপর্য ও পাঠকের মতামত
শ্লোক: 32:
শ্রীভগবানুবাচ
কালোহস্মি লোকক্ষয়কৃৎ প্রবৃদ্ধো
লোকান্ সমাহর্তুমিহ প্রবৃত্তঃ ।
ঋতেহপি ত্বাং ন ভবিষ্যন্তি সর্বে
যেহবস্থিতাঃ প্রত্যনীকেষু যোধাঃ ॥৩২॥

কালঃ, অস্মি, লোকক্ষয়কৃৎ, প্রবৃদ্ধঃ,
লোকান্, সমাহর্তুম্, ইহ, প্রবৃত্তঃ,
ঋতে, অপি, ত্বাম্, ন, ভবিষ্যন্তি, সর্বে,
যে, অবস্থিতাঃ, প্রতি-অনীকেষু, যোধাঃ ॥৩২॥
অনুবাদ : শ্রীভগবান বললেন- আমি লোকক্ষয়কারী প্রবৃদ্ধ কাল এবং এই সমস্ত লোক সংহার করতে এক্ষণে প্রবৃত্ত হয়েছি৷ তোমরা (পাণ্ডবেরা) ছাড়া উভয় পক্ষীয় সমস্ত যোদ্ধারাই নিহ্ত হবে।

শ্লোকের তাৎপর্য ও পাঠকের মতামত
শ্লোক: 33:
তস্মাত্ত্বমুত্তিষ্ঠ যশো লভস্ব
জিত্বা শত্রূন্ ভুঙক্ষ্ব রাজ্যং সমৃদ্ধম্ ।
ময়ৈবৈতে নিহতাঃ পূর্বমেব
নিমিত্তমাত্রং ভব সব্যসাচিন্ ॥৩৩॥

তস্মাৎ, ত্ত্বম্, উত্তিষ্ঠ, যশঃ, লভস্ব,
জিত্বা, শত্রূন্, ভুঙক্ষ্ব, রাজ্যম্, সমৃদ্ধম্,
ময়া, এব, এতে, নিহতাঃ, পূর্বম্, এব,
নিমিত্তমাত্রম্, ভব, সব্যসাচিন্ ॥৩৩॥
অনুবাদ : অতএব, তুমি যুদ্ধ করার জন্য উত্থিত হও, যশ লাভ কর এবং শত্রুদের পরাজিত করে সমৃদ্ধশালী রাজ্য ভোগ কর। আমার দ্বারা এরা পূর্বেই নিহত হয়েছে। হে সব্যসাচী ! তুমি নিমিত্ত মাত্র হও।

শ্লোকের তাৎপর্য ও পাঠকের মতামত
শ্লোক: 34:
দ্রোণং চ ভীষ্মং চ জয়দ্রথং চ
কর্ণং তথান্যানপি যোধবীরান্ ।
ময়া হতাংস্ত্বং জহি মা ব্যথিষ্ঠা
যুধ্যস্ব জেতাসি রণে সপত্নান্॥৩৪॥

দ্রোণম্, চ, ভীষ্মম্, চ, জয়দ্রথম্, চ,
কর্ণম্, তথা, অন্যান্, অপি, যোধবীরান্,
ময়া, হতান্, ত্বম্, জহি, মা, ব্যথিষ্ঠাঃ,
যুধ্যস্ব, জেতাসি, রণে, সপত্নান্॥৩৪॥
অনুবাদ : ভীষ্ম, দ্রোণ, কর্ণ, জয়দ্রথ এবং অন্যান্য যুদ্ধ বীরগণ, পূর্বেই আমার দ্বারা নিহত হয়েছে। সুতরাং, তুমি তাদেরই বধ কর এবং বিচলিত হয়ো না৷ তুমি যুদ্ধে শত্রুদের নিশ্চয়ই জয় করবে, অতএব যুদ্ধ কর।

শ্লোকের তাৎপর্য ও পাঠকের মতামত
শ্লোক: 35:
সঞ্জয় উবাচ
এতচ্ছ্রুত্বা বচনং কেশবস্য
কৃতাঞ্জলির্বেপমানঃ কিরীটী ।
নমস্কৃত্বা ভুয় এবাহ কৃষ্ণং
সগদ্ গদং ভীতভীতঃ প্রণম্য ॥৩৫॥

এতৎ, শ্রুত্বা, বচনম্, কেশবস্য,
কৃত-অঞ্জলিঃ, বেপমানঃ, কিরীটী,
নমঃ-কৃত্বা, ভুয়ঃ, এব, আহ, কৃষ্ণম্,
সগদ্ গদম্, ভীতভীতঃ, প্রণম্য ॥৩৫॥
অনুবাদ : সঞ্জয় ধৃতরাষ্ট্রকে বললেন- হে রাজন ! ভগবান শ্রীকৃষ্ণের এই বাণী শ্রবণ করে অর্জুন অত্যন্ত ভীত হয়ে কম্পিত কলেবরে কৃতাঞ্জলিপুটে প্রণাম করে গদ্ গদ বাক্যে শ্রীকৃষ্ণকে বললেন ৷

শ্লোকের তাৎপর্য ও পাঠকের মতামত
শ্লোক: 36:
অর্জুন উবাচ
স্থানে হৃষীকেশ তব প্রকীর্ত্যা
জগৎ প্রহৃষ্যত্যনুরজ্যতে চ ।
রক্ষাংসি ভীতানি দিশো দ্রবন্তি
সর্বে নমস্যন্তি চ সিদ্ধসঙ্ঘাঃ ॥৩৬॥

স্থানে, হৃষীকেশ, তব, প্রকীর্ত্যা,
জগৎ, প্রহৃষ্যতি, অনুরজ্যতে, চ,
রক্ষাংসি, ভীতানি, দিশঃ, দ্রবন্তি,
সর্বে, নমস্যন্তি, চ, সিদ্ধসঙ্ঘাঃ ॥৩৬॥
অনুবাদ : অর্জুন বললেন– হে হৃষীকেশ ! তোমার মহিমা কীর্তনে সমস্ত জগৎ প্রহৃষ্ট হয়ে তোমার প্রতি অনুরক্ত হচ্ছে। রাক্ষসেরা ভীত হয়ে নানা দিকে পলায়ন করছে এবং সিদ্ধরা তোমাকে নমস্কার করছে। এই সমস্তই যুক্তিযুক্ত।

শ্লোকের তাৎপর্য ও পাঠকের মতামত
শ্লোক: 37:
কস্মাচ্চ তে ন নমেরন্মহাত্মন্
গরীয়সে ব্রহ্মণোহ্প্যাদিকর্ত্রে
অনন্ত দেবেশ জগন্নিবাস
ত্বমক্ষরং সদসত্তৎপরং যৎ ॥৩৭॥

কস্মাৎ, চ, তে, ন, নমেরন্, মহাত্মন্,
গরীয়সে, ব্রহ্মণঃ, অপি, আদি-কর্ত্রে,
অনন্ত, দেব-ঈশ, জগৎ, নিবাস,
ত্বম্, অক্ষরম্, সৎ, অসৎ, তৎ-পরম্, যৎ ॥৩৭॥
অনুবাদ : হে মহাত্মন্ ! তুমি এমন কি ব্রহ্মা থেকেও শ্রেষ্ঠ এবং আদি সৃষ্টিকর্তা সকলে কেন তোমাকে নমস্কার করবেন না ? হে অনন্ত ! হে দেবেশ ! হে জগন্নিবাস ! তুমি সৎ ও অসৎ উভয়ের অতীত অক্ষরতত্ত্ব ব্রহ্ম।

শ্লোকের তাৎপর্য ও পাঠকের মতামত
শ্লোক: 38:
ত্বমাদিদেবঃ পুরুষঃ পুরাণ-
স্ত্বমস্য বিশ্বস্য পরং নিধানম্ ।
বেত্তাসি বেদ্যং চ পরং চ ধাম
ত্বয়া ততং বিশ্বমনন্তরূপ ॥৩৮॥

ত্বম্, আদিদেবঃ, পুরুষঃ, পুরাণঃ,
ত্বম্, অস্য, বিশ্বস্য, পরম্, নিধানম্,
বেত্তা, অসি, বেদ্যম্, চ, পরম্, চ, ধাম,
ত্বয়া, ততম্, বিশ্বম্, অনন্তরূপ ॥৩৮॥
অনুবাদ : তুমি আদি দেব, পুরাণ পুরুষ এবং এই বিশ্বের পরম আশ্রয়। তুমি সবকিছুর জ্ঞাতা, তুমিই জ্ঞেয় এবং তুমিই গুণাতীত পরম ধামস্বরূপ৷ হে অনন্তরূপ ! এই জগৎ তোমার দ্বারা পরিব্যাপ্ত হয়ে আছে।

শ্লোকের তাৎপর্য ও পাঠকের মতামত
শ্লোক: 39:
বায়ুর্যমোহগ্নির্বরুণঃ শশাঙ্কঃ
প্রজাপতিস্ত্বং প্রপিতামহশ্চ ।
নমো নমস্তেহস্তু সহস্রকৃত্বঃ
পুনশ্চ ভূয়োহপি নমো নমস্তে ॥৩৯॥

বায়ুঃ, যমঃ, অগ্নিঃ, বরুণঃ, শশাঙ্কঃ,
প্রজাপতিঃ, ত্বম্, প্রপিতামহঃ, চ,
নমঃ, নমঃ, তে, অস্তু, সহস্রকৃত্বঃ,
পুনঃ, চ, ভূয়ঃ, অপি, নমঃ, নমঃ, তে ॥৩৯॥
অনুবাদ : তুমিই বায়ু, যম, অগ্নি, বরুণ, চন্দ্র, প্রজাপতি ব্রহ্মা ও প্রপিতামহ৷ অতএব, তোমাকে আমি সহস্রবার প্রণাম করি, পুনরায় নমস্কার করি এবং বারবার নমস্কার করি ।

শ্লোকের তাৎপর্য ও পাঠকের মতামত
শ্লোক: 40:
নমঃ পুরস্তাদথ পৃষ্ঠতস্তে
নমোহস্তু তে সর্বত এব সর্ব ।
অনন্তবীর্যামিতবিক্রমস্ত্বং
সর্বং সমাপ্নোষি ততোহসি সর্বঃ ॥৪০॥

নমঃ, পুরস্তাৎ, অথ, পৃষ্ঠতঃ, তে,
নমঃ, অস্তু, তে, সর্বতঃ, এব, সর্ব,
অনন্তবীর্য, অমিত-বিক্রমঃ, ত্বম্,
সর্বম্, সমাপ্নোষি, ততঃ, অসি, সর্বঃ ॥৪০॥
অনুবাদ : হে সর্বাত্মা ! তোমাকে সম্মুখে, পশ্চাতে ও সমস্ত দিক থেকেই নমস্কার করছি৷ হে অনন্তবীর্য ! তুমি অসীম বিক্রমশালী। তুমি সমগ্র জগতে ব্যাপ্ত, অতএব তুমিই সর্ব-স্বরূপ।

শ্লোকের তাৎপর্য ও পাঠকের মতামত
শ্লোক: 41:
সখেতি মত্বা প্রসভং যদুক্তং
হে কৃষ্ণ হে যাদব হে সখেতি ।
অজানতা মহিমানং তবেদং
ময়া প্রমাদাৎ প্রণয়েন বাপি ॥৪১॥

সখা, ইতি, মত্বা, প্রসভম্, যৎ, উক্তম্,
হে কৃষ্ণ, হে যাদব, হে সখা, ইতি,
অজানতা, মহিমানম্, তব, ইদম্,
ময়া, প্রমাদাৎ, প্রণয়েন, বা, অপি ॥৪১॥

শ্লোক: 42:
যচ্চাবহাসার্থমসৎকৃতোহসি
বিহারশয্যাসনভোজনেষু ।
একোহথবাপ্যচ্যুত তৎসমক্ষং
তৎ ক্ষাময়ে ত্বামহমপ্রমেয়ম্ ॥৪২॥

যৎ, চ, অবহাস-অর্থম্, অসৎ-কৃতঃ, অসি,
বিহার-শয্যা-আসন-ভোজনেষু,
একঃ, অথবা, অপি, অচ্যুত, তৎ-সমক্ষম্,
তৎ, ক্ষাময়ে, ত্বাম্, অহম্, অপ্রমেয়ম্ ॥৪২॥
অনুবাদ : তোমার মহিমা না জেনে, সখা মনে করে তোমাকে আমি প্রগল্ ভভাবে “হে কৃষ্ণ”, “হে যাদব”, “হে সখা”, বলে সম্বধন করেছি। প্রমাদবশত অথবা প্রণয়বশত আমি যা কিছু করেছি তা তুমি দয়া করে ক্ষমা কর। বিহার, শয়ন, উপবেশন ও ভোজনের সময় কখন একাকী এবং কখন বন্ধুদের সমক্ষে আমি যে তোমাকে অসম্মান করেছি, হে অচ্যুত ! আমার সে সমস্ত অপরাধের জন্য তোমার কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করছি।

শ্লোকের তাৎপর্য ও পাঠকের মতামত
শ্লোক: 43:
পিতাসি লোকস্য চরাচরস্য
ত্বমস্য পূজ্যশ্চ গুরুর্গরীয়ান্ ।
ন ত্বৎসমোহ্স্ত্যভ্যধিকঃ কুতোহন্যো
লোকত্রয়েহ্প্যপ্রতিমপ্রভাব ॥৪৩॥

পিতা, অসি, লোকস্য, চর-অচরস্য,
ত্বম্, অস্য, পূজ্যঃ, চ, গুরুঃ, গরীয়ান্,
ন, ত্বৎ-সমঃ, অস্তি, অভি-অধিকঃ, কুতঃ, অন্যঃ,
লোকত্রয়ে, অপি, অপ্রতিম-প্রভাব ॥৪৩॥
অনুবাদ : হে অমিত প্রভাব ! তুমি এই চরাচর জগতের পিতা, পুজ্য, গুরু ও গুরুশ্রেষ্ঠ। ত্রিভুবনে তোমার সমান আর কেউ নেই, অতএব তোমার থেকে শ্রেষ্ঠ অন্য কে হতে পারে?

শ্লোকের তাৎপর্য ও পাঠকের মতামত
শ্লোক: 44:
তস্মাৎ প্রণম্য প্রণিধায় কায়ং
প্রসাদয়ে ত্বামহমীশমীড্যম্ ।
পিতেব পুত্রস্য সখেব সখ্যুঃ
প্রিয়ঃ প্রিয়ায়ার্হসি দেব সোঢ়ুম ॥৪৪॥

তস্মাৎ, প্রণম্য, প্রণিধায়, কায়ম্,
প্রসাদয়ে, ত্বাম্, অহম্, ঈশম্, ঈড্যম্,
পিতা, ইব, পুত্রস্য, সখা, ইব, সখ্যুঃ,
প্রিয়ঃ, প্রিয়ায়াঃ, অর্হসি, দেব, সোঢ়ুম ॥৪৪॥
অনুবাদ :তুমি সমস্ত জীবের পরম পূজ্য পরমেশ্বর ভগবান৷ তাই, আমি তোমাকে দণ্ডবৎ প্রনাম করে তোমার কৃপাভিক্ষা করছি। হে দেব ! পিতা যেমন পুত্রের, সখা যেমন সখার, প্রেমিক যেমন প্রিয়ার অপরাধ ক্ষমা করেন, তুমিও সেভাবেই আমার অপরাধ ক্ষমা করতে সমর্থ।

শ্লোকের তাৎপর্য ও পাঠকের মতামত
শ্লোক: 45:
অদৃষ্টপূর্বং হৃষিতোহস্মি দৃষ্ট্বা
ভয়েন চ প্রব্যথিতং মনো মে ।
তদেব মে দর্শয় দেব রূপং
প্রসীদ দেবেশ জগন্নিবাস ॥৪৫॥

অদৃষ্টপূর্বম্, হৃষিতঃ, অস্মি, দৃষ্ট্বা,
ভয়েন, চ, প্রব্যথিতম্, মনঃ, মে,
তৎ, এব, মে, দর্শয়, দেব, রূপম্,
প্রসীদ, দেবেশ, জগৎ-নিবাস ॥৪৫॥
অনুবাদ : তোমার এই বিশ্বরূপ, যা পূর্বে কখনও দেখিনি, তা দর্শন করে আমি আনন্দিত হয়েছি, কিন্তু সেই সঙ্গে আমার মন ভয়ে ব্যথিত হয়েছে। তাই, হে দেবেশ ! হে জগন্নিবাস ! আমার প্রতি প্রসন্ন হও এবং পুনরায় তোমার সেই রূপই আমাকে দেখাও।

শ্লোকের তাৎপর্য ও পাঠকের মতামত
শ্লোক: 46:
কিরীটিনং গদিনং চক্রহস্তম্
ইচ্ছামি ত্বাং দ্রষ্টুমহং তথৈব ।
তেনৈব রূপেণ চতুর্ভুজেন
সহস্রবাহো ভব বিশ্বমূর্তে ॥৪৬॥

কিরীটিনম্, গদিনম্, চক্রহস্তম্,
ইচ্ছামি, ত্বাম্, দ্রষ্টুম্, অহম্, তথা, এব,
তেন, এব, রূপেণ, চতুঃ-ভুজেন,
সহস্রবাহো, ভব, বিশ্বমূর্তে ॥৪৬॥
অনুবাদ : হে বিশ্বমূর্তি ! হে সহস্রবাহো ! আমি তোমাকে পূর্ববৎ সেই কিরীট, গদা ও চক্রধারীরূপে দেখতে ইচ্ছা করি। এখন তুমি তোমার সেই চতুর্ভুজ রূপ ধারণ কর।

শ্লোকের তাৎপর্য ও পাঠকের মতামত
শ্লোক: 47:
শ্রীভগবানুবাচ
ময়া প্রসন্নেন তবার্জুনেদং
রুপং পরং দর্শিতমাত্মযোগাৎ ।
তেজোময়ং বিশ্বমনন্তমাদ্যং
যন্মে ত্বদন্যেন ন দৃষ্টপূর্বম্ ॥৪৭॥

ময়া, প্রসন্নেন, তব, অর্জুন, ইদম্,
রুপম্, পরম্, দর্শিতম্, আত্মযোগাৎ,
তেজঃ-ময়ম্, বিশ্বম্, অনন্তম্, আদ্যম্,
যৎ, মে, ত্বৎ-অন্যেন, ন, দৃষ্টপূর্বম্ ॥৪৭॥
অনুবাদ : শ্রীভগবান বললেন- হে অর্জুন ! আমি প্রসন্ন হয়ে তোমাকে আমার অন্তরঙ্গা শক্তি দ্বারা জড় জগতের অন্তর্গত এই শ্রেষ্ঠ রূপ দেখালাম। তুমি ছাড়া পূর্বে আর কেউই এই অনন্ত, আদি ও তেজোময় রূপ দেখেনি।

শ্লোকের তাৎপর্য ও পাঠকের মতামত
শ্লোক: 48:
ন বেদযজ্ঞাধ্যয়নৈর্ন দানৈ-
র্ন চ ক্রিয়াভির্ন তপোভিরুগ্রৈঃ ।
এবংরূপঃ শক্য অহং নৃলোকে
দ্রষ্টুং ত্বদন্যেন কুরুপ্রবীর ॥৪৮॥

ন, বেদ-যজ্ঞ-অধ্যয়নৈঃ, ন, দানৈঃ,
ন, চ, ক্রিয়াভিঃ, ন, তপোভিঃ, উগ্রৈঃ,
এবংরূপঃ, শক্যঃ, অহম্, নৃ-লোকে,
দ্রষ্টুম্, ত্বৎ-অন্যেন, কুরুপ্রবীর ॥৪৮॥
অনুবাদ : হে কুরুশ্রেষ্ঠ ! বেদ অধ্যয়ন, যজ্ঞ, দান, পুণ্যকর্ম ও কঠোর তপস্যার দ্বারা এই জড় জগতে তুমি ছাড়া অন্য কেউ আমার এই বিশ্ব রূপ দর্শন করতে সমর্থ নয়।

শ্লোকের তাৎপর্য ও পাঠকের মতামত
শ্লোক: 49:
মা তে ব্যথা মা চ বিমূঢ়ভাবো
দৃষ্ট্বা রূপং ঘোরমীদৃঙ্ মমেদম্ ।
ব্যপেতভীঃ প্রীতমনাঃ পুনস্ত্বং
তদেব মে রূপমিদং প্রপশ্য ॥৪৯॥

মা, তে, ব্যথা, মা, চ, বিমূঢ়ভাবঃ,
দৃষ্ট্বা, রূপম্, ঘোরম্, ঈদৃক্, মম, ইদম্,
ব্যপেত-ভীঃ, প্রীতমনাঃ, পুনঃ, ত্বম্,
তৎ, এব, মে, রূপম্, ইদম্, প্রপশ্য ॥৪৯॥
অনুবাদ : আমার এই প্রকার ভয়ঙ্কর বিশ্বরূপ দেখে তুমি ব্যথিত হয়ো না। সমস্ত ভয় থেকে মুক্ত হয়ে এবং প্রসন্ন চিত্তে তুমি পুনরায় আমার চতুর্ভুজ রূপ দর্শন কর।

শ্লোকের তাৎপর্য ও পাঠকের মতামত
শ্লোক: 50:
সঞ্জয় উবাচ
ইত্যর্জুনং বাসুদেবস্তথোক্ত্বা
স্বকং রুপং দর্শয়ামাস ভূয়ঃ ।
আশ্বাসয়ামাস চ ভীতমেনং
ভূত্বা পুনঃ সৌম্যবপুর্মহাত্মা ॥৫০॥

ইতি, অর্জুনম্, বাসুদেবহ, তথা, উক্ত্বা,
স্বকম্, রুপম্, দর্শয়ামাস, ভূয়ঃ,
আশ্বাসয়ামাস, চ, ভীতম্, এনম্,
ভূত্বা, পুনঃ, সৌম্যবপুঃ, মহাত্মা ॥৫০॥
অনুবাদ : সঞ্জয় ধৃতরাষ্ট্রকে বললেন- মহাত্মা বাসুদেব অর্জুনকে এভাবেই বলে তাঁর চতুর্ভুজ রূপ দেখালেন এবং পুনরায় দ্বিভুজ সৌম্যমূর্তি ধারণ করে ভীত অর্জুনকে আশ্বস্ত করলেন।

শ্লোকের তাৎপর্য ও পাঠকের মতামত
শ্লোক: 51:
অর্জুন উবাচ
দৃষ্ট্বেদং মানুষং রূপং তব সৌম্যং জনার্দন ।
ইদানীমস্মি সংবৃত্তঃ সচেতাঃ প্রকৃতিং গতঃ॥৫১॥

দৃষ্ট্বা, ইদম্, মানুষম্, রূপম্, তব, সৌম্যম্, জনার্দন,
ইদানীম্, অস্মি, সংবৃত্তঃ, সচেতাঃ, প্রকৃতিম্, গতঃ॥৫১॥
অনুবাদ :অর্জুন বললেন- হে জনার্দন ! তোমার এই সৌম্য মানুষমূর্তি দর্শন করে এখন আমার চিত্ত স্থির হল এবং আমি প্রকৃতিস্থ হলাম।

শ্লোকের তাৎপর্য ও পাঠকের মতামত
শ্লোক: 52:
শ্রীভগবানুবাচ
সুদুর্দশমিদং রূপং দৃষ্টবানসি যন্মম ।
দেবা অপ্যস্য রূপস্য নিত্যং দর্শনকাঙ্ক্ষিণঃ ॥৫২॥

সুদুর্দশম্, ইদম্, রূপম্, দৃষ্টবান্-অসি, যৎ-মম,
দেবাঃ, অপি, অস্য, রূপস্য, নিত্যম্, দর্শনকাঙ্ক্ষিণঃ ॥৫২॥
অনুবাদ : পরমেশ্বর ভগবান বললেন- তুমি আমার যে রূপ দেখছ তা অত্যন্ত দুর্লভ দর্শন। দেবতারাও এই নিত্য রূপের সর্বদা দর্শনাকাঙ্ক্ষী।

শ্লোকের তাৎপর্য ও পাঠকের মতামত
শ্লোক: 53:
নাহং বেদৈর্ন তপসা ন দানেন ন চেজ্যয়া ।
শক্য এবংবিধো দ্রষ্টুং দৃষ্টবানসি মাং যথা ॥৫৩॥

ন, অহম্, বেদৈঃ, ন, তপসা, ন, দানেন, ন, চ, ইজ্যয়া,
শক্যঃ, এবংবিধঃ, দ্রষ্টুম্, দৃষ্টবান্-অসি, মাম্, যথা ॥৫৩॥
অনুবাদ : তুমি তোমার দিব্য চক্ষুর দ্বারা আমার যেরূপ দর্শন করছ, সেই প্রকার আমাকে বেদ অধ্যয়্ন, তপস্যা, দান ও পূজার দ্বারা কেউই দর্শন করতে সমর্থ হয় না।

শ্লোকের তাৎপর্য ও পাঠকের মতামত
শ্লোক: 54:
ভক্ত্যা ত্বনন্যয়া শক্য অহমেবংবিধোহর্জুন ।
জ্ঞাতুং দ্রষ্টুং চ তত্ত্বেন প্রবেষ্টুং চ পরন্তপ ॥৫৪॥

ভক্ত্যা, তু, অনন্যয়া, শক্যঃ, অহম্, এবংবিধঃ, অর্জুন,
জ্ঞাতুম্, দ্রষ্টুম্, চ, তত্ত্বেন, প্রবেষ্টুম্, চ, পরন্তপ ॥৫৪॥
অনুবাদ : হে অর্জুন ! হে পরন্তপ ! অনন্য ভক্তির দ্বারাই কিন্তু এই প্রকার আমাকে তত্ত্বত জানতে, প্রত্যক্ষ করতে এবং আমার চিন্ময় ধামে প্রবেশ করতে সমর্থ হয়।

শ্লোকের তাৎপর্য ও পাঠকের মতামত
শ্লোক: 55:
মৎকর্মকৃন্মৎপরমো মদ্ভক্তঃ সঙ্গবর্জিতঃ ।
নির্বৈরঃ সর্বভূতেষু যঃ স মামেতি পাণ্ডব ॥৫৫॥

মৎ-কর্ম-কৃৎ, মৎ-পরমঃ, মৎ-ভক্তঃ, সঙ্গবর্জিতঃ,
নিঃ-বৈরঃ, সর্বভূতেষু, যঃ, সঃ, মাম্, এতি পাণ্ডব ॥৫৫॥
অনুবাদ : হে অর্জুন ! যিনি আমার অকৈতব সেবা করেন, আমার প্রতি নিষ্ঠাপরায়ণ, আমার ভক্ত, জড় বিষয়ে আসক্তি রহিত এবং সমস্ত প্রাণীর প্রতি শত্রুভাব রহিত, তিনিই আমাকে লাভ করেন।

শ্লোকের তাৎপর্য ও পাঠকের মতামত
ওঁ তৎসদিতি শ্রীমদ্ভগবদ্গীতাসূপনিষৎসু ব্রহ্মবিদ্যায়াং যোগশাস্ত্রে শ্রীকৃষ্ণার্জুনসংবাদে 'বিশ্বরূপদর্শনযোগো' নাম একাদশোঽধ্যায়্ঃ ॥১১॥

* * * Anupamasite-এ আপনাকে স্বাগতম। জ্ঞানই শক্তি ! তাই- আগে নিজে জানুন , প্রচারের মাধ্যমে অন্যকেও জানতে সাহায্য করুন এবং ভগবান শ্রীকৃষ্ণের আশীর্বাদ লাভ করুন। ধন্যবাদ * * *

শ্রীমদ্ভগবদগীতা          

        ০১.অর্জুনবিষাদযোগ.  ০২.সাংখ্যযোগ ..  ০৩.কর্মযোগ..  ০৪.জ্ঞানযোগ..  ০৫.কর্মসন্যাসযোগ.  ০৬.ধ্যানযোগ...
 ০৭.জ্ঞান-বিজ্ঞানযোগ..  ০৮.অক্ষরব্রহ্মযোগ..  ০৯.রাজবিদ্যারাজগুহ্যযোগ.  ১০.বিভূতিযোগ..  ১১.বিশ্বরূপদর্শনযোগ.  ১২.ভক্তিযোগ...
 ১৩.ক্ষেত্রক্ষেত্রজ্ঞবিভাগ.  ১৪.গুণত্রয়বিভাগযোগ..  ১৫.পুরুষোত্তমযোগ..  ১৬.দৈবাসুরসম্পদবিভাগযোগ.  ১৭.শ্রদ্ধাত্রয়বিভাগযোগ.  ১৮.মোক্ষযোগ..

Say something

ধন্যবাদ ! আপনার মতামত প্রেরিত হয়েছে ।
There was an error.
Please enter name.
Please enter valid email adress.
Please enter your comment.

anup02an@gmail.com

 =>   বিজ্ঞাপনের জন্য ( 0191 22 086 22 বিকাশ নম্বর- ০১৯১ ২২ ০৮৬ ২২ ) ধন্যবাদ @ এডমিন => www.anupamasite.com
পরমপিতা সকলের মঙ্গল করুন ।