ঈশ্বর সম্বন্ধীয় বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ প্রাসঙ্গিক বিষয়ঃ- দেখতে সংশ্লিষ্ট বিষয়ের উপর ক্লিক করুন-
সত্যিই কি ঈশ্বর আছেন?
-শ্রী পতিত উদ্ধারণ গৌর দাস ব্রহ্মচারী
মহাবিশ্বের এই আশ্চর্য ব্যবস্থাপনার সংগঠক কে?
মহাবিশ্বের সুন্দর শৃঙ্খল ইঙ্গিত করে যে, এর একজন সুশৃঙ্খল প্রণয়নকারী, সংগঠক বা নিয়ন্ত্রক রয়েছেন। প্রকৃতিতে সবকিছুই সুশৃঙ্খলভাবেই পরিচালিত হচ্ছে। যেমন- রংধনুতে সবসময়ই নির্দিষ্ট সাতটি রং থাকে, একটি নির্দিষ্ট শৃঙ্খলে সুর্যোদয় এবং সূর্যাস্ত হচ্ছে। সূর্যের তাপে ভূপৃষ্ঠের জল বাষ্প হয়ে আকাশে মেঘরূপে ভেসে বেড়াচ্ছে, আবার তা বৃষ্টি হয়ে ভূপৃষ্ঠে পতিত হচ্ছে। প্রকৃতিতে রয়েছে মিথোজীবী কারখানা। মিথোজীবী পন্থায় এক কারখানার পরিত্যক্ত পদার্থ অন্য কারখানার কাঁচামাল হিসেবে ব্যবহৃত হয়। এই কারখানার পরিত্যক্ত পদার্থ আবার পূর্বের কারখানার কাঁচামাল হিসেবে ব্যবহৃত হয়। এরূপ পদ্ধতি পরিবেশ এবং অর্থনীতি- দুদিক থেকেই লাভজনক।
তবে এরূপ কারখানা মানুষ এখনও সৃষ্টি করতে পারেনি, কেবলই তাত্ত্বিক। কিন্তু মিথোজীবী কারখানার ন্যায় প্রক্রিয়া প্রকৃতিতে রয়েছে। যেমন- আমরা প্রতিনিয়ত অক্সিজেন গ্রহণ করি এবং কার্বনডাই-অক্সাইড ত্যাগ করি। আর উদ্ভিদ কার্বনডাই-অক্সাইড গ্রহণ করে অক্সিজেন ত্যাগ করে, সেই অক্সিজেন পুনরায় আমরা গ্রহণ করি। অক্সিজেন আমাদের দেহের জন্য উপকারী এবং কার্বনডাই-অক্সাইড ক্ষতিকর। প্রকৃতিতে সেই ভারসাম্য বজায় রাখার ব্যবস্থা রয়েছে। পৃথিবীর সবচেয়ে বড় বিজ্ঞানী কি এ ব্যবস্থা করেছে? না। তাহলে প্রকৃতিতে এ সুষম ব্যবস্থা কার নিয়ন্ত্রণে সংঘটিত হচ্ছে?
৩. আইন প্রণেতা (Law Maker)
প্রকৃতির অনন্য আইন বা নীতি নির্দেশ করে যে, এর একজন নীতি নির্ধারক বা আইন প্রণেতা রয়েছেন। এই প্রকৃতিতে যার জন্ম হয়েছে, তার মৃত্যু অনিবার্য, মাধ্যাকর্ষণ শক্তির প্রভাবে বস্তু নিন্মগামী হয়,
গরম চা বা কফি কিছুক্ষণ পর ঠাণ্ডা হয়ে যায়, পৃথিবী একই গতিতে ঘুরছে এবং ২৪ ঘণ্টায় দিন-রাত হচ্ছে। গাছে ফল থাকলে তা এক সময় না এক সময় পাকে। এমনকি সমস্ত সৃষ্টিতেই রয়েছে
আইন- পদার্থের ক্ষুদ্রতম পরমাণুকণার ভেতর ইলেক্ট্রন কণাগুলো নিউট্রন ও প্রোটনকে কেন্দ্র করে ঘুরে, আবার চাঁদ নির্দিষ্ট গ্রহকে কেন্দ্র করে ঘুরছে এবং সেই গ্রহ আবার বিশালাকায় সূর্যকে কেন্দ্র করে ঘুরছে।
চন্দ্র বা সূর্যগ্রহণ পরবর্তী কখন হবে এবং এমনকি একহাজার বছর পূর্বেই আপনি বলতে পারবেন। কারণ এই সবকিছুই সুনির্দিষ্ট আইন বা নীতি অনুযায়ী ঘটছে- পদার্থবিজ্ঞানের আইন, থার্মোডাইনামিক্স,
মহাকর্ষ আইন ইত্যাদি। আপনি কীভাবে ভাবতে পারেন যে, কোনো বুদ্ধিমান ব্যক্তি ও তাঁর প্রণীত আইন ব্যতীত এই সমগ্র জগৎ পরিচালিত হচ্ছে? প্রকৃতির এসব আইন কীভাবে তৈরি হয়েছে যা আমরা
পরিবর্তন করতে পারি না? কেন এ মহাবিশ্ব এত সুসংগঠিত এবং কেন তা আমাদের জন্য নির্ভরযোগ্য? বড়বড় বিজ্ঞানীরা – Eugene Wigner, Galileo Galilei, Max Planck বিশ্বাস করেন যে,
মহাবিশ্ব নির্দিষ্ট নীতি অনুযায়ী ক্রিয়া করছে। তা না হলে পৃথিবী এবং অন্যান্য গ্রহগুলো অকল্পনীয়ভাবে নিমেষেই ধ্বংস হয়ে যেত। কোয়ান্টাম ইলেকট্রোডাইনামিক্স- এর ওপর নোবেল
পুরস্কার প্রাপ্ত Richard Feynman বলেন, “আমাদের দৈনন্দিন জীবনে এমন কোনো আইনের কথা কারো জানা নেই, যা কারো দ্বারা তৈরি হয়নি। বরং সমস্ত আইন সরকার বা কোনো
বুদ্ধিমান ব্যক্তির দ্বারা তৈরি করা হয়েছে। সুতরাং মহাবিশ্বের যে সূক্ষ্মাতিসূক্ষ্ম আইন রয়েছে তা একজন দক্ষ আইন প্রণেতার অস্তিত্বকেই নির্দেশ করে।”
সৃষ্টি নির্বিবাদে স্রষ্টার অস্তিত্বকেই ইঙ্গিত করে।

সে সূত্রে আমরা ইতোমধ্যেই দেখলাম যে, এই মহাবিশ্ব সৃষ্টির পেছনে রয়েছেন একজন ডিজাইনার, সংগঠক এবং আইন প্রণেতা- যা নিশ্চিত করে যে, মহাবিশ্ব সৃষ্টির পেছনে অবশ্যই একজন স্রষ্টা রয়েছেন। যদি একটি কাগজের গোলাপ সৃষ্টি করার জন্য স্রষ্টার প্রয়োজন হয়, তাহলে প্রকৃত গোলাপ কীভাবে স্রষ্টা ছাড়াই সৃষ্টি হতে পারে?
এর পর দেখুনঃ প্রকৃতি কি স্বয়ংক্রিয়ভাবেই (Automatically) কাজ করে?
আপনার পছন্দমত
যে কোন ধরনের লেখা পোস্ট করতে এখানে ক্লিক করুন
আপনাদের পোস্টকরা লেখাগুলো দেখতে এই লিংকে ক্লিক করুন ।