কৃষ্ণকৃপাশ্রীমূর্তি শ্রীল অভয়চরণারবিন্দ ভক্তিবেদান্ত স্বামী প্রভুপাদ-এর সংক্ষিপ্ত পরিচিতি
কৃষ্ণকৃপাশ্রীমূর্তি শ্রীল অভয়চরণারবিন্দ ভক্তিবেদান্ত স্বামী প্রভুপাদ আবির্ভূত হন ১৮৯৬ সালে কলকাতায়। তাঁর সঙ্গে তাঁর গুরুদেব শ্রীল ভক্তিসিদ্ধান্ত সরস্বতী গোস্বামী ঠাকুরের প্রথম মিলন হয় কলকাতায় ১৯২২ সালে। শ্রীল ভক্তিসিদ্ধান্ত সরস্বতী ঠাকুর ছিলেন তখনকার দিনের শ্রেষ্ঠ পন্ডিত এবং সর্বাগ্রগণ্য ভগবদ্ভক্ত। তিনি গৌড়ীয় মঠ প্রতিষ্ঠা করেন এবং সমস্ত ভারত জুড়ে ৬৪টি মন্দির স্থাপন করেন। এই শিক্ষিত যুবক অভয়চরণকে তাঁর খুব ভালো লাগে এবং বৈদিক জ্ঞান শিক্ষাদানের উদ্দেশ্যে নিজেকে উৎসর্গ করতে তিনি তাঁকে অনুপ্রাণিত করেন। শ্রীল প্রভুপাদ তাঁর শিষ্যত্ব গ্রহণ করেন এবং ১১ বছর পরে ১৯৩৩ সালে এলাহাবাদে তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে তাঁর থেকে দীক্ষা গ্রহণ করেন।
১৯২২ সালে যখন তাদের প্রথম মিলন হয়, তখন শ্রীল ভক্তিসিদ্ধান্ত সরস্বতী ঠাকুর শ্রীল প্রভুপাদকে ইংরেজী ভাষার মাধ্যমে বৈদিক জ্ঞান প্রচার করতে অনুরোধ করেন। শ্রীল প্রভুপাদ গৌড়ীয় মঠের কার্যে সাহায্য করতে থাকেন এবং বৈদিক শাস্ত্র গ্রন্থের সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ গ্রন্থ শ্রীমদ্ভগবদগীতার ভাষ্য রচনা করেন। ১৯৪৪ সালে এককভাবে তিনি Back to Goddead নামক একটি ইংরেজি পাক্ষিক পত্রিকা প্রকাশ করতে শুরু করেন। তিনি নিজেই পাণ্ডুলিপিগুলি টাইপ করতেন, সম্পাদনা করতেন, প্রুফ দেখতেন, সেই পত্রিকাগুলি বিতরণ করতেন এবং সেই প্রকাশনা চালিয়ে যাওয়ার জন্য সংগ্রাম করতেন। একবার শুরু হওয়ার পর সেই পত্রিকার আর বন্ধ হয়নি; এখনও পর্যন্ত সেই পত্রিকাটি ৩০টি ভাষায় তাঁর পাশ্চাত্য ও প্রাচ্য শিষ্যদের দ্বারা প্রকাশিত হচ্ছে।
শ্রীল প্রভুপাদের দার্শনিক তত্ত্বজ্ঞান ও ভক্তির স্বীকৃতি হিসাবে গৌড়ীয় বৈষ্ণব সমাজ ১৯৪৭ সালে তাঁকে ভক্তিবেদান্ত উপাধিতে ভূষিত করেন। ১৯৫০ সালে ৫৪ বছর বয়সে শ্রীল প্রভুপাদ সংসার জীবন থেকে অবসর গ্রহণ করেন। তাঁর চার বছর পরে অধ্যায়ন ও রচনার কাজে আরও গভীরভাবে মনোনিবেশ করবার জন্য তিনি বানপ্রস্থ-আশ্রম গ্রহণ করেন এবং তার কিছুদিন পরে তিনি বৃন্দাবনে গমন করেন। সেখানে প্রাচীন ঐতিহ্যপূর্ণ শ্রীশ্রীরাধা-দামোদর মন্দিরে একটি ঘরে তিনি কয়েক বছর ধরে অধ্যায়ন ও গ্রন্থরচনার কাজে গভীরভাবে মগ্ন ছিলেন। ১৯৫৯ সালে তিনি সন্ন্যাস-আশ্রম গ্রহণ করেন। শ্রীশ্রীরাধা-দামোদর মন্দিরে শ্রীল প্রভুপাদ তাঁর জীবনের শ্রেষ্ঠ অবদান- আঠারো হাজার শ্লোক সমন্বিত সমস্ত বৈদিক সাহিত্যের সার শ্রীমদ্ভাগবতের ইংরেজি অনুবাদ ও ভাষ্য রচনার কাজ শুরু করেন। তিনি সেখানে Easy Journey to the Other Planets নামক গ্রন্থটিও রচনা করেন। শ্রীমদ্ভাগবতের তিনটি খন্ড প্রকাশিত হওয়ার পর, শ্রীল প্রভুপাদ তাঁর গুরুমহারাজের ইচ্ছাকে বাস্তবে রূপায়িত করার জন্য ১৯৬৫ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে গমন করেন। তারপর শ্রীল প্রভুপাদ ভারতীয় দর্শন ও ধর্মতত্ত্বের সার সমন্বিত শাস্ত্রগ্রন্থের প্রামাণিক অনুবাদ, ভাষ্য ও মূল ভাব সহ ৮০টি গ্রন্থ রচনা করেন।
একটি মালবাহী জাহাজে করে যখন তিনি প্রথম নিউ ইয়র্ক শহরে আসেন, তখন শ্রীল প্রভুপাদ সম্পূর্ণ কপর্দকশূন্য। কিন্তু প্রায় এক বছর কঠোর সংগ্রাম করার পর, তিনি ১৯৬৬ সালের সালের জুলাই মাসে ‘আন্তর্জাতিক কৃষ্ণভাবনামৃত সংঘের’ প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯৭৭ সালের নভেম্বর মাসে তাঁর অপ্রকট লীলাবিলাস করা পর্যন্ত তিনি নিজেই এই সংস্থাটির পরিচালনা করেন এবং একশটিরও অধিক মন্দির, আশ্রম, স্কুল ও ফার্ম কমিউনিটি সমন্বিত একটি আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানে পরিণত করে যান।
১৯৬৮ সালে শ্রীল প্রভুপাদ আমেরিকার ওয়েস্ট ভার্জিনিয়ার পার্বত্য অঞ্চলে নব বৃন্দাবন নামক একটি পরীক্ষামূলক বৈদিক সমাজ গড়ে তোলেন। প্রায় ২০০০ একর জমির ওপর এই নব বৃন্দাবনের সাফল্যের দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়ে, তাঁর শিষ্যরা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও অন্যান্য অনেক দেশে এই রকম আরও কয়েকটি সমাজ গড়ে তুলেছে।
এ ছাড়া ১৯৭২ সালে শ্রীল প্রভুপাদ ডালাস ও টেক্সাসে গুরুকুল বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করে পাশ্চাত্য জগৎকে বৈদিক প্রথা অনুযায়ী প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষাব্যবস্থা দান করে গেছেন। তারপর, তাঁর তত্ত্বাবধানে তাঁর শিষ্যরা ভারতবর্ষে শ্রীধাম বৃন্দাবনে স্থাপিত প্রধান শিক্ষাকেন্দ্রের আদর্শ অনুসরণে আমেরিকা ও পৃথিবীর বিভিন্ন স্থানে শিশুদের বিদ্যালয় স্থাপন করেছেন।
১৯৭৫ সালে বৃন্দাবনে শ্রীল প্রভুপাদের অপূর্ব সুন্দর ‘কৃষ্ণ-বলরাম মন্দির’ এবং আন্তর্জাতিক অতিথিশালার উদ্বোধন হয়। তা ছাড়া সেখানে শ্রীল প্রভুপাদের কারুকার্য-খচিত স্মৃতিসৌধ ও মিউজিয়াম বিরাজ করছে। ১৯৭৮ সালে জুহুতে বোম্বাইয়ের সমুদ্র উপকূলে চার একর জমির ওপর অপূর্ব শ্রীশ্রীরাধা-রাসবিহারীর মন্দির, আধুনিক প্রেক্ষাগৃহ, অপূর্ব সুন্দর অতিথিশালা ও নিরামিষ ভোজনশালা সমন্বিত একটি বিশাল সাংস্কৃতিক কেন্দ্র প্রতিষ্ঠিত হয়। শ্রীল প্রভুপাদের সব চাইতে উচ্চাভিলাষপূর্ণ পরিকল্পনা হচ্ছে পশ্চিমবাংলার মায়াপুরে ৫০ হাজার কৃষ্ণভক্তদের নিয়ে বৈদিক শহর গড়ে তোলার পরিকল্পনা, যা পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ সংস্কৃতিসম্পন্ন বৈদিক জীবনধারার দৃষ্টান্তরূপে সমস্ত পৃথিবীর কাছে আদর্শরূপে প্রতীয়মান হবে।
শ্রীল প্রভুপাদের সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য অবদান হচ্ছে তাঁর গ্রন্থসম্ভার। বিদ্বৎ সমাজ দিব্যজ্ঞান সমন্বিত এই গ্রন্থগুলির প্রামাণিকতা, গভীরতা ও প্রাঞ্জলতা এক বাক্যে শ্রদ্ধার সঙ্গে স্বীকার করেছেন এবং এই সমস্ত গ্রন্থগুলিকে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ্যপুস্তক হিসেবে গ্রহণ করা হয়েছে। প্রভুপাদের লেখা বইগুলি প্রায় ৫০টিরও বেশি বিভিন্ন ভাষায় অনূদিত হয়েছে। ভক্তিবেদান্ত বুক ট্রাস্ট, যা প্রভুপাদের গ্রন্থগুলি প্রকাশ করবার জন্য ১৯৭২ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল, তা আজ ভারতীয় ধর্ম ও দর্শন সংক্রান্ত বৃহত্তম গ্রন্থ-প্রকাশক প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে। এই ভক্তিবেদান্ত বুক ট্রাস্ট এখন ৯টি খণ্ডে শ্রীল প্রভুপাদের ইংরেজি অনুবাদ ও ভাষ্য সমন্বিত বাংলা শাস্ত্রীয়গ্রন্থ শ্রীচৈতন্য-চরিতামৃত প্রকাশ করেছে, যা শ্রীল প্রভুপাদ কেবল ১৮ মাসের মধ্যে সম্পূর্ণ করেছিলেন।
কেবলমাত্র ১২ বছরের মধ্যে, এত বয়েস হওয়া সত্ত্বেও, শ্রীল প্রভুপাদ ছয়টি মহাদেশেরই বিভিন্ন স্থানে ভগবৎ-তত্ত্বজ্ঞান সমন্বিত ভাষণ দেওয়ার জন্য ১৪ বার পৃথিবী প্রদক্ষিণ করেছেন। এই রকম কঠোর কর্মসূচী থাকা সত্ত্বেও শ্রীল প্রভুপাদ প্রবলভাবে তাঁর লেখার কাজ চালিয়ে যান। তাঁর গ্রন্থসমূহ হচ্ছে বৈদিক দর্শন, ধর্ম, সাহিত্য ও সংস্কৃতির একটি প্রামাণ্য গ্রন্থাগার।
১৯৭৭ সালে ১৪ই নভেম্বর শ্রীল প্রভুপাদ শ্রীধাম বৃন্দাবনে তাঁর অপ্রকট লীলাবিলাস করেন। শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুর বাণী—“পৃথিবীতে আছে যত নগরাদি গ্রাম। সর্বত্র প্রচার হইবে মোর নাম’’-- সার্থক করার জন্য তিনি এখানে এসেছিলেন এবং শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুর বাণী প্রচার করে সমস্ত জগতকে ভগবানের শ্রীপাদপদ্মে আশ্রয় গ্রহণ করার অমৃতময় পথ প্রদর্শন করে গেছেন। পৃথিবীর মানুষ যে দিন বৈষয়িক জীবনের নিরর্থকতা উপলব্ধি করতে পেরে পারমার্থিক জীবনে ব্রতী হবেন, সেই দিন তাঁরা সর্বান্তঃকরণে শ্রীল প্রভুপাদের অবদান উপলব্ধি করতে পারবেন এবং শ্রদ্ধাবনত চিত্তে তাঁর চরণারবিন্দে প্রণতি জানাবেন। ১৯৭৭ সালে শ্রীধাম বৃন্দাবনে তিনি অপ্রকট হয়েছেন, কিন্তু আজও তিনি তাঁর অমৃতময় গ্রন্থের মধ্যে, ভগবানের বাণীর মধ্যে মূর্ত হয়ে আছেন। তাঁর শিক্ষায় অনুপ্রাণিত হয়ে যাঁরা ভগবানের কাছে ফিরে যাওয়ার প্রয়াসী, তাঁদের পথ দেখাবার জন্য তিনি চিরকাল তাঁদের হৃদয়ে বিরাজ করবেন। হরেকৃষ্ণ।
শ্রীল প্রভুপাদের গ্রন্থাবলীর প্রশংসা
আত্ম - উপলব্ধি সম্বন্ধে ভারতের অন্তহীন বিজ্ঞান পাশ্চাত্য জগতে নিয়ে আসার জন্য বহু মনীষী বিগত কয়েক বছর ধরে শ্রীল প্রভুপাদের লেখার ভূয়সী প্রশংসা করেছেন ।
“ শ্রীমৎ এ . সি . ভক্তিবেদান্ত স্বামী প্রভুপাদ এক অমূল্য কর্তব্য সম্পাদন করেছেন । মানব সমাজের মুক্তির জন্য তাঁর রচিত গ্রন্থগুলি এক অনবদ্য অবদান ।
শ্রীলালবাহাদুর শাস্ত্রী
ভারতের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী
“ ভারতের যোগীদের প্রদত্ত ধর্মের বিবিধ পন্থার মধ্যে শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুর দশম অধঃস্তন শ্রীল ভক্তিবেদান্ত স্বামী প্রভুপাদ প্রদত্ত কৃষ্ণভাবনামৃতের পন্থা হচ্ছে সব চাইতে বৈশিষ্ট্যপূর্ণ । দশ বছরেরও কম সময়ের মধ্যে শ্রীল ভক্তিবেদান্ত স্বামী তাঁর ব্যক্তিগত ভক্তি , একনিষ্ঠতা , অদম্য শক্তি এবং দক্ষতার দ্বারা আন্তর্জাতিক কৃষ্ণভাবনামৃত সংঘ সংগঠন করে যেভাবে হাজার হাজার মানুষকে ভগবদ্ভুক্তির মার্গে উদ্বুদ্ধ করেছেন , পৃথিবীর প্রায় সব কয়টি বড় বড় শহরে রাধাকৃষ্ণের মন্দির প্রতিষ্ঠা করেছেন এবং শ্রীকৃষ্ণ ও শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভু প্রদত্ত ভক্তিযোগের ভিত্তিতে অসংখ্য গ্রন্থ রচনা করেছেন , তা অবিশ্বাস্য । ”
প্রফেসর মহেশ মেহতা
প্রফেসর অব্ এশিয়ান স্টাডিস্ ,
ইউনিভার্সিটি অব্ উইণ্ডসর ,
অন্টারিও , কানাডা
“ এ . সি . ভক্তিবেদান্ত স্বামী প্রভুপাদ হচ্ছেন একজন অত্যন্ত বর্ধিষ্ণু আচার্য এবং এক মহান সংস্কৃতির উত্তরাধিকারী । "
জোসেফ জিন লানজো ডেল ভাস্টো
বিখ্যাত ফরাসী দার্শনিক এবং সাহিত্যিক
“ শ্রীল প্রভুপাদের বিশাল সাহিত্য - সম্ভারের পাণ্ডিত্য এবং নিষ্ঠার মাহাত্ম্য ভাষায় বর্ণনা করা যায় না । শ্রীল প্রভুপাদের প্রচেষ্টার মাধ্যমে ভবিষ্যতের মানুষেরা অবশ্যই এক সুন্দরতর পৃথিবীতে বাস করার সুযোগ পাবে । তিনি বিশ্বভ্রাতৃত্ব এবং সমস্ত মানব সমাজের ধর্মীয় ঐক্য প্রতিষ্ঠার মহান প্রতীক । ভারতবর্ষের বাইরের জগৎ , বিশেষ করে , পাশ্চাত্য জগৎ শ্রীল প্রভুপাদের কাছে গভীরভাবে কৃতজ্ঞ । কারণ তিনি অত্যন্ত বিজ্ঞানসম্মতভাবে তাদেরকে ভারতের কৃষ্ণভক্তির শ্রেষ্ঠ সম্পদ প্রদান করেছেন । ”
শ্রীবিশ্বনাথ শুক্লা , পিএইচ . ডি
প্রফেসর অব্ হিন্দি ,
এম . ইউ . আলিগড় ,
উত্তরপ্রদেশ
“ পাশ্চাত্যে বসবাসকারী একজন ভারতীয় হিসাবে যখন আমি আমাদের দেশের বহু মানুষকে এখানে এসে ভণ্ড শুরু সেজে বসতে দেখি , তখন আমার খুব খারাপ লাগে । পাশ্চাত্যে যেমন যে কোন এক সাধারণ মানুষ তার জন্ম থেকেই খ্রিস্টান সংস্কৃতির সঙ্গে পরিচিত হয় , ভারতবর্ষেও একজন সাধারণ মানুষ তেমনই তার জন্ম থেকেই ধ্যান এবং যোগের তত্ত্বের সঙ্গে পরিচিত হয় । দুর্ভাগ্যবশত , বর্তমানে বহু অসৎ লোক ভারতবর্ষ থেকে এখানে এসে যোগ সম্বন্ধে তাদের ভ্রান্ত ধারণা প্রদর্শন করে মন্ত্র দেওয়ার নামে লোক ঠকাচ্ছে এবং নিজেদের ভগবানের অবতার বলে প্রচার করছে । এই ধরনের অনেক প্রবন্ধক তাদের অন্ধ অনুগামীদের এমনভাবে প্রবঞ্চনা করছে যে ভারতীয় সংস্কৃতি সম্বন্ধে যাদেরই একটু জ্ঞান আছে তারাই অত্যন্ত উদ্বিগ্ন হয়ে পড়ছেন । সেই কারণে শ্রীল এ . সি . ভক্তিবেদান্ত স্বামী প্রভুপাদের প্রকাশিত গ্রন্থাবলী পাঠ করে আমি অত্যন্ত উৎসাহিত হয়েছি । সেগুলি ' গুরু ' এবং ' যোগী ' সম্বন্ধে ভ্রান্ত ধারণাপ্রসূত যে ভয়ঙ্কর প্রবঞ্চনা চলছে , তা বন্ধ করবে এবং সমস্ত মানুষকে প্রাচ্য সংস্কৃতির যথার্থ অর্থ হৃদয়ঙ্গম করার সুযোগ দেবে । ”
ডঃ কৈলাস বাজপেয়ী
ডাইরেক্টর অব্ ইণ্ডিয়ান স্টাডিস্
সেন্টার ফর ওরিয়েন্টাল স্টাডিস্
দি ইউনিভার্সিটি অব্ মেক্সিকো
“ এ . সি . ভক্তিবেদান্ত স্বামী প্রভুপাদের রচিত গ্রন্থগুলি কেবল সুন্দরই নয় , তা বর্তমান যুগের পক্ষে অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক , বিশেষ করে যখন সমগ্র জাতিই জীবনের আসল উদ্দেশ্য সম্পাদনের জন্য এক সাংস্কৃতিক পন্থা খুঁজছে । ”
ডঃ সি . এল . স্প্রেডবারি
প্রফেসর অব্ সোসিওলজি ,
স্টিফেন এফ অস্টিন স্টেট ইউনিভার্সিটি
“ ভক্তিবেদান্ত বুক ট্রাস্টের প্রকাশিত বই পরীক্ষা করে দেখার সুযোগ পেয়ে আমি নিজেকে ধন্য বলে মনে করছি । এই গ্রন্থগুলি শিক্ষায়তন এবং পাঠাগারগুলির জন্য এক অমূল্য সম্পদ । ভারতীয় দর্শন এবং সংস্কৃতির প্রতিটি অধ্যাপক এবং ছাত্রদের কাছে আমি বিশেষভাবে সুপারিশ করব শ্রীমদ্ভাগবত পাঠ করার জন্য । মহান পণ্ডিত ও গ্রন্থকার শ্রীমৎ এ . সি . ভক্তিবেদান্ত স্বামী হচ্ছেন এক বিশ্ববিখ্যাত মহাপুরুষ এবং আধুনিক জগতের কাছে বৈদিক দর্শনের ব্যবহারিক প্রয়োগের এক মহান পথ প্রদর্শক । বৈদিক জ্ঞান অধ্যয়ন করার জন্য সারা পৃথিবী জুড়ে তিনি একশটিরও অধিক পারমার্থিক আশ্রম প্রতিষ্ঠা করেছেন । পৃথিবীর সব কয়টি দেশে বৈদিক জীবনধারা ও সনাতন ধর্ম প্রচারে তার অবদানের কোন তুলনা হয় না । স্বামী ভক্তিবেদান্তের মতো গুণী মানুষের দ্বারা যে আজ ভাগবতের কৃত । ' বাণী সারা পৃথিবীর মঙ্গলের জন্য প্রচারিত হচ্ছে , সেইজন্য আমি তাঁর কাছে অত্যন্ত কৃতজ্ঞ।”
ডঃ আর কালিয়া
প্রেসিডেণ্ট
ইণ্ডিয়ান লাইব্রেরী অ্যাসোসিয়েশন্
“ বৈদিক শাস্ত্রের ইংরাজী অনুবাদ এবং ভাষ্য রচনা করে স্বামী ভক্তিবেদান্ত ভগবদ্ভক্তদের উদ্দেশ্যে এক মহান কর্তব্য সম্পাদন করেছেন । এই তত্ত্ব - দর্শনের বিশ্বজনীন প্রয়োগ আজকের দুর্দশাগ্রস্ত জগতে এক আশীর্বাণী বহন করে এনে এই জ্ঞানের আলোকে অজ্ঞানতার অন্ধকার দূর করেছে । প্রকৃতই এ এক মহান অনুপ্রেরণাপ্রসূত রচনা যা প্রতিটি অনুসন্ধিৎসু মানুষের জীবন সম্বন্ধে ' কেন ' , ' কবে ' এবং ' কোথায় ' প্রভৃতির অনুসন্ধানের সন্ধান দেবে । ”
ডঃ জুডিথ এম টাইবার্গ
ফাউণ্ডার এণ্ড ডিরেক্টর
ইস্ট - ওয়েস্ট কালচারাল সেন্টার
লস্ এঞ্জেলেস , ক্যালিফোর্নিয়া
" ... শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুর উত্তরাধিকারীরূপে , ভারতীয় সংস্কৃতির কর্ণধাররূপে ভক্তিবেদান্ত স্বামী প্রভুপাদ যথার্থভাবেই ' কৃষ্ণকৃপাশ্রীমূর্তি ' ( His Divine Grace ) উপাধি প্রাপ্ত হয়েছেন । স্বামী প্রভুপাদ সংস্কৃত ভাষার উপর পরিপূর্ণ দখল অর্জন করেছেন । আমাদের কাছে তাঁর ভগবদ্গীতা মহান অনুপ্রেরণা নিয়ে এসেছে , কারণ তা হচ্ছে শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভু কর্তৃক স্বীকৃত ভগবদ্গীতার প্রামাণিক বিশ্লেষণ । একজন খ্রিস্টান দার্শনিক এবং ভারত তত্ত্ববিদের এই প্রশক্তি হচ্ছে ঐকান্তিক বন্ধুত্বের অভিব্যক্তি । "
অলিভিয়ার ল্যাকোম্ব
প্রফেসর , ইউনিভার্সিটি দ্য প্যারিশ , সর্বোন
ভূতপুর্ব ডিরেক্টর , ইনস্টিটিউট অব্ ইণ্ডিয়ান সিভিলাইজেশন , প্যারিশ
“ আমি গভীর উৎসাহ , মনোযোগ এবং সাবধানতার সঙ্গে শ্রীল ভক্তিবেদান্ত স্বামীর গ্রন্থগুলি পাঠ করেছি এবং দেখেছি যে ভারতের পারমার্থিক ও সাংস্কৃতিক সম্পদ সম্বন্ধে উৎসাহী যে কোন মানুষের কাছে সেগুলির মূল্য অবর্ণনীয় । এই গ্রন্থের গ্রন্থকার গ্রন্থের প্রতিটি পৃষ্ঠায় সেই বিষয় সম্বন্ধে তাঁর অগাধ পাণ্ডিত্যের নিদর্শন দিয়ে গেছেন । বৈষ্ণব দর্শনের কঠোর নিয়মানুবর্তিতার মধ্যে প্রতিপালিত হওয়া সত্ত্বেও যে সহজ এবং সাবলীল ভঙ্গিতে তিনি অত্যন্ত জটিল ভাবধারাগুলি বর্ণনা করেছেন , তা থেকে সহজেই বোঝা যায় যে , তিনি সম্পূর্ণরূপে তার মর্ম উপলব্ধি করেছেন । তিনি অবশ্যই সেই পারমার্থিক জ্ঞানের সর্বোচ্চ আলোক প্রাপ্ত হয়েছেন , যা অতি অল্প কয়েকজন মহাপুরুষই লাভ করেছেন । ”
ডঃ এইচ . বি . কুলকার্নী
প্রফেসর অব্ ইংলিশ এণ্ড ফিলসফি
উটা স্টেট ইউনিভার্সিটি , লোগান , উটা
“ আজকের দুর্দশাগ্রস্ত জগতে ভক্তিবেদান্ত স্বামীর এই গ্রন্থগুলি নিঃসন্দেহে এক অতুলনীয় অবদান। ”
ডঃ সুদা এল ভাট
প্রফেসর অব্ ইণ্ডিয়ান ল্যাঙ্গুয়েজেস্
বোস্টন ইউনিভার্সিটি , বোস্টন , ম্যাসাচুসেট্স
“ কৃষ্ণদাস কবিরাজ গোস্বামী রচিত শ্রীচৈতন্য চরিতামৃতের এ . সি . ভক্তিবেদান্ত স্বামী প্রভুপাদ কৃত অনুবাদগুলি ভারত - তত্ত্ববিদ এবং ভারতের পারমার্থিক জ্ঞান সম্বন্ধে আগ্রহী সাধারণ মানুষ , উভয়ের কাছেই এক মহা আনন্দের বিষয় ।”
.
“ ..গভীর মনোযোগ সহকারে যে - ই এঁর ভাষ্যগুলি পাঠ করবে , সে - ই বুঝতে পারবে যে , তাঁর অন্যান্য গ্রন্থের মতো এই গ্রন্থটিও শ্রীল ভক্তিবেদান্ত স্বামীর প্রগাঢ় ভগবদ্ভক্তি , চিন্তা , আবেগ এবং বিশিষ্ট পাণ্ডিত্যপূর্ণ বুদ্ধিমত্তার এক সুষ্ঠু সমন্বয় । ”
“ ... অত্যন্ত মনোরমভাবে সংকলিত এই গ্রন্থগুলি ভারতীয় অধ্যাত্মবাদ এবং ধর্ম সম্বন্ধীয় হোন গ্রন্থে আসক্ত মানুষের পাঠাগারগুলি অলংকৃত করবে , তা তিনি পণ্ডিতই হোন , ভক্তই হোন অথবা সাধারণ পাঠকই হোন । ”
ডঃ জে . ক্রুস লঙ্গ
ডিপার্টমেন্ট অব্ এশিয়ান স্টাডিস ,
কর্ণেল ইউনিভার্সিটি
সমগ্র সৃষ্টির রহস্য ও উৎস
আপনার পছন্দমত
যে কোন ধরনের লেখা পোস্ট করতে এখানে ক্লিক করুন
আপনাদের পোস্টকরা লেখাগুলো দেখতে এই লিংকে ক্লিক করুন ।