ঈশ্বর সম্বন্ধীয় বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ প্রাসঙ্গিক বিষয়ঃ- দেখতে সংশ্লিষ্ট বিষয়ের উপর ক্লিক করুন-
সৃষ্টিকর্তা একজন , নাকি একাধিক ?
পূর্ববর্তী যুক্তিপ্রমাণ সাপেক্ষে এটাই সিদ্ধান্ত হল যে, সৃষ্টিকর্তা বা উপরওয়ালা অবশ্যই আছে। তাহলে প্রশ্ন হচ্ছে সৃষ্টিকর্তা একজন , নাকি একাধিক ? যদি সহজ সরল এবং বাস্তবতার দৃষ্টিতে দেখতে যাই তবে তা একেই পরিসমাপ্তি ঘটে, একাধিকে নয়। কারণ, -এ বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের সবকিছুই
একটি সুনির্দিস্ট নিয়মেই চলছে। সূর্য, চন্দ্র, অন্যান্য গ্রহ, নক্ষত্র, নদী-সাগর, বায়ুমণ্ডল, মহাবিশ্বের কোটি কোটি গ্যালাক্সি বা ছায়াপথ সবকিছুই একটি সুনির্দিস্ট নিয়মেই সুশৃঙ্খলভাবে চলছে।
নির্দেশনা এক জায়গা থেকে আসছে বলে নিয়মও এক। সৃষ্টিকর্তা একাধিক হলে নিয়মও একাধিক হত। যাতে শৃঙ্খলার অভাবে সংঘর্ষ বেঁধে ধ্বংস হয়ে যেত। তা যখন হচ্ছে না তাই এটা বলা যায় যে, সৃষ্টিকর্তা একজন।
যদি তাই হয়, তবে এ পৃথিবীতে এত মত-পথ কেন বা এত ধর্ম কীভাবে সৃষ্টি হল? হ্যাঁ এ প্রশ্নের উত্তর হচ্ছে- সৃষ্টিকর্তা হল সৎ-চিৎ ও আনন্দময়। একা কি আর আনন্দ হয়, তাই তিনি বহু হয়েছেন, এবং তাঁর সৃষ্টির নব নব আনন্দ আস্বাদনের জন্য তিনি পৃথিবীর বিভিন্ন জায়গায়, বিভিন্ন সময়ে, বিভিন্ন পরিবেশে, বিভিন্ন প্রয়োজনে, বিভিন্ন প্রকার জীব বা প্রজাতির সৃষ্টি করেছেন। এবং সেসকল জায়গায় সময়ের প্রয়োজনে বিভিন্ন প্রকার লীলা প্রদর্শন করে তাঁর সৃষ্টিজগৎ রক্ষা করেছেন এবং পাশাপাশি তাঁর ভক্তদেরকেও আনন্দ দিয়েছেন।
সময়ের বিবর্তনে তাঁর বিভিন্ন জায়গার ভক্ত বা অনুসারীরা আজ প্রত্যেকেই তাঁদের নিজেদের জায়গায় প্রকটিত লীলানুযায়ী তাঁদের সৃষ্টিকর্তাকে সর্বশ্রেষ্ঠ বা একমাত্র সৃষ্টিকর্তা হিসাবে প্রচার করে সেই একজনকেই
সকলের থেকে বড় বা মহান বা একমাত্র ইত্যাদি বলে তৃপ্তি পেতে চেষ্টা করে থাকেন।
এদিকে এসমস্ত কাণ্ড দেখে অন্তর্যামী উপরওয়ালা নিশ্চয়ই আনন্দই পান, কেননা তিনি হয়তো ভাবেন সকলে তো তাঁকে
নিয়েই চর্চা করছে। তবে হয়তো ব্যথাও পান যখন দেখেন তাঁর অন্ধ ভক্তরা তাঁকে কেন্দ্র করে একে অন্যকে হিংসা করছে, একে অপরের মধ্যে সংঘর্ষ বাঁধিয়ে নিজেরা নিজেরা কষ্ট পাচ্ছে। এখন বিবেচ্য বিষয়
হল তিনি যদি সকলকেই সৃষ্টি করেন তবে আপনি, আমি, আমরা সকলেই তো তাঁরই সৃষ্টি এবং তিনিই আমাদের পরমপিতা। সেই দিক থেকে আমরা প্রত্যেকে পরস্পরের আপনজন। এখন আপনজন বা ভাই-ভাই যদি একে
অপরকে হিংসা করি, ঝগড়া করি পিতার মহিমা গুণগান বর্ণনা করতে যেয়ে- তার থেকে বোকামী আর কী হতে পারে ?
হ্যাঁ এখানে একটা কথা অবশ্যই বলার আছে তা হলো- পরমপিতা যেমন সত্য তেমনি
তাঁর প্রতিটি মহিমা বা লীলাও সত্য। তবে কোথাও যদি কোন অসংগতি মনে হয় তবে সে ত্রুটি পরমপিতার নয়, বরং সে সীমাবদ্ধতা উক্ত মহিমা বর্ণনাকারীর উপরই বর্তায়। আর তাছাড়া কোন ঘটনার
বিবরণ সময়ের বিবর্তনে অতিরঞ্জিত বা বিকৃত হতেই পারে তার দায়ভার যদি কিছু থেকে থাকে তা সম্পূর্ণ বর্তায় উক্ত ঘটনা বর্ণনাকারীর উপর যেখান থেকে বা যার থেকে উক্ত বিকৃতি শুরু হয়েছে।
এখানে নিশ্চয়ই বিন্দুমাত্র দায় বা দোষ পরমপিতার উপরে বর্তায় না। তাই যারা না বুঝে অন্যের আরাধ্য সৃষ্টিকর্তাকে বা পরমপিতাকে নিয়ে কটুক্তি করেন, তারা নিশ্চয়ই একটু ঘুরিয়ে নিজের পরমপিতাকেই গালমন্দ করছেন।
অতএব সাধু সাবধান!
তাই এব্যাপারে আমার সহজ সরল অভিমত এই যে, পরমপিতার যেকোন ঘটনা বা বর্ণনার ক্ষেত্রে আপনার মন যদি কোন অসংগতি লক্ষ্য করে, আপনার মন যদি কোন ঘটনা বা
ঘটনার অংশ বা বর্ণনা মানতে না চায় বা আপনি যদি এতে কোন যুক্তি খুঁজে না পান, তবে আপনাকে তা মানতেই হবে এমন ধর্মীয় বিধি নিষেধে আমি বিশ্বাসী নই। বরং পরমপিতাকে আপনি আপনার
নিজের মত করে যুক্তিসংগত উপায়ে সাজিয়ে গুছিয়ে বিশ্বাস করেন তাও ভালো। তবুও তিনি যে নেই বা ছিলেন না এমনটি যেন কখনও আপনার সিদ্ধান্তে না পৌঁছায়। আপনার পিতা বা আমার পিতা সম্পর্কে
যদি অন্যেরা না জানে তার অর্থ কি আপনার পিতা বা আমার পিতা নেই, বা ছিলেন না? অবশ্যই নয়। কারো জানার সীমাবদ্ধতার কারণে যেমন আপনার পিতা অসত্য হতে পারে না, তেমনি পরমপিতাও
অসত্য নয়, বরং ধ্রুব সত্য এবং পৃথিবীর ভিন্ন ভিন্ন জায়গায়, বিভিন্ন মানুষের নিকট বিভিন্ন প্রয়োজনে প্রকটিত তাঁরই বিভিন্ন স্বরূপই ভিন্ন ভিন্ন নামে পরিচিত। বস্তুত সকলই একই সত্ত্বার বিভিন্ন প্রকাশ শুধু
নাম আলাদা বা ভাষা আলাদা।
তাই সবচেয়ে ভালো হতো যদি এমন একটা নাম ব্যবহার করা যেত যার অর্থ সকলের নিকট গ্রহণযোগ্য এবং সহজবোধ্য তবে নিশ্চয়ই ভালো হতো। যাহোক এবার আমরা
একটা সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে পারি এভাবে যে, এ বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের সকলেই যেহেতু তাঁরই (পরমপিতারই) কোন না কোন সময়ের প্রকটিত লীলায় মুগ্ধ হয়ে সেই সেই রূপের মহিমা অধিকতর অন্তরে ধারণপূর্বক বংশ পরম্পরাক্রমে
লালন করেন এবং প্রচার করেন তাই প্রত্যেকেই সঠিক। এবং যেহেতু প্রত্যেকেই সঠিক তাই অন্যের সাথে কারও যদি কোন দ্বন্দ্ব বা মতবিরোধ বা পার্থক্য থেকে থাকে তবে তা নিতান্তই মানুষের সৃষ্ট কোন না কোন আচার
আচরণ বা নিয়মের কারণে। তাই আমাদের ধর্মীয় যত আচার-আচরণ বা নিয়ম আছে তা যদি পরস্পরের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করে, দ্বন্দ্ব তৈরি করে, অপরকে আপন ভাবতে বাঁধা দেয় তবে যত দ্রুত সম্ভব
তা সংশোধন করা উচিত তবেই- সকলেরই পিতা হতে পারে একজনই সে হলো ‘পরমপিতা’; সবাই মন ভরে একজনকেই ডাকতে পারবে ‘হে প্রভু’; যেকোন প্রয়োজনে সবাই বলতে পারবে মাথার
উপরে তুমি তো আছ ।
হ্যাঁ যদি বলেন আপনি তবে কাকে মূল বলে মনে করেন? তবে আমার নিকট যে তথ্য উপাত্ত আছে তার আলোকে প্রসঙ্গত বলতে হয়ঃ-
অবশিষ্ট অংশ
আপনার পছন্দমত
যে কোন ধরনের লেখা পোস্ট করতে এখানে ক্লিক করুন
আপনাদের পোস্টকরা লেখাগুলো দেখতে এই লিংকে ক্লিক করুন ।