ভগবান শ্রীকৃষ্ণ : সমস্ত অবতারগণের উৎস
শ্রীকৃষ্ণ: সকল দেবদেবীর উৎস
ভগবান শ্রীকৃষ্ণ সকল দেবদেবী- শিব-ব্রহ্মা আদি সকলের উৎস৷ ভগবদ্ গীতায় শ্রীকৃষ্ণ এই তথ্য সমর্থন করেছেন যে তিনিই সকল দেবদেবীর আদি উৎস :
ন মে বিদুঃ সুরগণাঃ প্রভবং ন মহর্ষয়ঃ ।
অহমাদির্হি দেবানাং মহর্ষীনাং চ সর্বশঃ ॥
(ভ.গী. ১০/২)
"দেবতারা বা মহর্ষিরাও আমার উৎপত্তি অবগত হতে পারে না, কেন না, সর্বতোভাবে আমিই দেবতা ও মহর্ষিদের আদি কারণ।"
সকল বৈদিক শাস্ত্রে এই তথ্য সমর্থিত হয়েছে যে শ্রীকৃষ্ণ হচ্ছেন ব্রহ্মা, শিব-আদি সকল দেবগণের উৎস৷ অথর্ব-বেদে বলা হয়েছে,
যো ব্রাহ্মণং বিদধাতিঃ পূর্বং যো বৈ
বেদংশ্চ গাপয়তি স্ম কৃষ্ণঃ
"যিনি সৃষ্টির আদিতে ব্রহ্মাকে বৈদিক জ্ঞান উপদেশ করেছিলেন এবং পূর্বে বৈদিক জ্ঞান বিস্তার করেন, তিনি শ্রীকৃষ্ণই৷"
তারপর পুনরায় বলা হয়েছে,
অথ-পুরুষোঃ বৈ নারায়ণোঃ অকাম্যতা
প্রজাঃ সৃজেয়ৈতি উপক্রম্য৷
"তখন পরমপুরুষ শ্রীনারায়্ণ প্রজা সৃষ্টির ইচ্ছা করিলেন৷"
নারায়ণাদ্ ব্রহ্মা জায়তে, নারায়ণাদ্ প্রজাপতিঃ প্রজায়তে,
নারায়ণাদ্ ইন্দ্রো জায়তে, নারায়ণাদ্ অস্তৌ বাসবো জায়ন্তে,
নারায়ণাদ্ একাদশ রুদ্র জায়ন্তে, নারায়ণাদ্ দ্বাদশাদিত্যঃ৷৷
নারায়ণ থেকে ব্রহ্মার জন্ম হয়, নারায়ণ থেকে সমস্ত প্রজা-সৃষ্টা প্রজাপতিগণেরও জন্ম হয়৷ নারায়ণ থেকে ইন্দ্রের জন্ম হয়, নারায়ণ হতে অষ্ট বসুর জন্ম হয়৷ নারায়ণ হতে একাদশ রুদ্রের জন্ম হয়, নারায়ণ থেকে দ্বাদশ আদিত্যের জন্ম হয়৷"
'ব্রহ্মণ্যো দেবকী-পুত্রঃ৷'
দেবকীর পুত্র শ্রীকৃষ্ণ হচ্ছেন পরমেশ্বর ভগবান৷
একো বৈ নারায়্ণ আসীন্ ন ব্রহ্মা না ঈশানো নাপো নাগ্নি
সমৌ নেমে দ্যবা পৃথিবী ন নক্ষত্রাণি ন সূর্যঃ স একাকী
ন রমতে তস্য ধ্যানন্তঃ স্থাস্য য্ত্র ছন্দোগৈঃ
ক্রিয়্মানাষ্টকাদি-সংজ্ঞক স্তুতি-স্তোমঃ স্তোমম্ উচ্যতে৷
"সৃষ্টির আদিতে কেবল পরম পুরুষ নারায়্ণ ছিলেন৷ ব্রহ্মা ছিলেন না শিব ছিলেন না, অগ্নি ছিলেন না, আকাশে চন্দ্র, সূর্য, নক্ষত্র ছিল না৷ কেবল শ্রীকৃষ্ণ ছিলেন, যিনি সব কিছু সৃজন করেন এবং রমণ করেন৷"
(মহা উপনিষদ-১)
বরাহপুরাণে বলা হয়েছে,
নারায়্ণঃ পরো দেবস্তস্মাজ্জাতশ্চতুর্মুখঃ৷
তস্মাদ্ রুদ্রোহভবদ্ দেবঃ স চ সর্বজ্ঞতাং গতঃ৷৷
'নারায়্ণ হচ্ছেন পরম পুরুষোত্তম ভগবান এবং তাঁর থেকে ব্রহ্মার জন্ম হয়, তাঁর থেকে শিবের জন্ম হয়৷'
সূত্রঃ ভগবদগীতার সারতত্ব ছয় পর্বের প্রাথমিক পাঠক্রম।