ভগবান শ্রীকৃষ্ণের অষ্টোত্তরশত নাম
জয় জয় গোবিন্দ গোপাল গধাধর।
কৃষ্ণচন্দ্র কর কৃপা করুণাসাগর।।
জয় জয় গোবিন্দ গোপাল বনমালী।
শ্রীরাধার প্রাণধন মুকুন্দ মুরারি।।
হরিনাম বিনে রে গোবিন্দনাম বিনে।
বিফলে মনুষ্য জন্ম যায় দিনে দিনে।।
দিন গেল মিছা কাজে রাত্রি গেল নিদ্রে।
না ভজিনু রাধাকৃষ্ণ-চরণারবিন্দে।।
কৃষ্ণ ভজিবার তরে সংসারে আইনু।
মিছা-মায়ায় বদ্ধ হ’য়ে বৃক্ষসম হইনু।।
ফলরূপে পুত্র-কন্যা ডালভাঙ্গি’ পড়ে।
কালরূপে সংসারেতে পক্ষী বাসা করে।।
যখন কৃষ্ণ জন্ম নিল দৈবকী উদরে।
মথুরাতে দেবগণ পুষ্পবৃষ্টি করে।।
বসুদেব রাখি’ আইল নন্দের মন্দিরে।
নন্দের আলয়ে কৃষ্ণ দিনে দিনে বাড়ে।।
শ্রীনন্দ রাখিল নাম ‘নন্দের নন্দন’।
যশোদা রাখিল নাম ‘যাদু বাছাধন’।।
উপানন্দ নাম রাখে ‘সুন্দর গোপাল’।
ব্রজবালক নাম রাখে ‘ঠাকুর রাখাল’।।
সুবল রাখিল নাম ‘ঠাকুর কানাই’।
শ্রীদাম রাখিল নাম ‘রাখালরাজা-ভাই’।।
‘ননীচোরা’ নাম রাখে যতেক গোপিনী।
‘কালোসোনা’ নাম রাখে রাধাবিনোদিনী।।
চন্দ্রাবলী নাম রাখে ‘মোহন-বংশীধারী’।
কুব্জা রাখিল নাম ‘পতিতপাবন হরি’।।
‘অনন্ত’ রাখিল নাম অন্ত না পাইয়া।
‘কৃষ্ণ’ নাম রাখে গর্গ ধ্যানেতে জানিয়া।।
কন্বমুনি রাখে নাম ‘দেব চক্রপাণি’।
‘বনমালী’ নাম রাখে বনের হরিণী।।
গজরাজ নাম রাখে ‘শ্রীমধুসূদন’।
অজামিল নাম রাখে ‘দেব নারায়ণ’।।
পুরন্দর নাম রাখে ‘দেব শ্রীগোবিন্দ’।
দ্রৌপদী রাখিল নাম ‘দেব দীনবন্ধু’।।
সুদামা রাখিল নাম ‘দারিদ্র্যভঞ্জন’।
ব্রজবাসী নাম রাখে ‘ব্রজের জীবন’।।
‘দর্পহারী’ নাম রাখে ‘অর্জুন সুধীর।
‘পশুপতি’ নাম রাখে গরুড় মহাবীর।।
যুধিষ্ঠির নাম রাখে ‘দেব যদুবর’।
বিদূর রাখিল নাম ‘কাঙ্গালের ঠাকুর’।।
বাসুকী রাখিল নাম ‘দেব সৃষ্টি-স্থিতি’।
ধ্রুবলোকে নাম রাখে ‘ধ্রুবের সারথী’।।
নারদ রাখিল নাম ‘ভক্তপ্রাণধন’।
ভীষ্মদেব নাম রাখে ‘লক্ষ্মীনারায়ণ’।।
সত্যভামা নাম রাখে ‘সত্যের সারথী’।
জাম্ববতী নাম রাখে ‘সংসারের সার’।
অহল্যা রাখিল নাম ‘পাষাণ-উদ্ধার’।।
ভৃগুমুনি নাম রাখে ‘জগতের হরি’।
পঞ্চমুখে ‘রাম’-নাম গান ত্রিপুরারি।।
কুঞ্জকেশী নাম রাখে ‘বলী সদাচারী’।
প্রহ্লাদ রাখিল নাম ‘নৃ্সিংহ মুরারী’।।
দৈত্যারি দ্বারকানাথ দারিদ্রভঞ্জন।
দয়াময় দ্রৌপদীর লজ্জা-নিবারণ।।
স্বরূপে সবার হয় গোলোকেতে স্থিতি।
বৈকুন্ঠে বৈকুন্ঠনাথ কমলার পতি।।
বাসুদেব-প্রদ্যুম্নাদি-চতুর্বূহ-সহ।
মহৈশ্বর্যপূর্ণ হ’য়ে বিহার করহ।।
অনিরুদ্ধ সঙ্কর্শণ নৃসিংহ বামন।
মৎস-কূর্ম-বরাহাদি অবতারগণ।।
ক্ষীরোদকশায়ী হরি গর্ভোদবিহারী।
কারণসাগরে শক্তি মায়াতে সঞ্চারী।।
বৃন্দাবনে কর লীলা ধরি গোপবেশ।
সে লীলার অন্ত প্রভু নাহি পায় ‘শেষ’।।
পূতনাবিনাশকারী শকটভঞ্জন।
তৃণাবর্ত-বক-কেশী-ধেনুক-মর্দন।।
অঘারি গোবৎসহারী ব্রহ্মার মোহন।
গিরিগোবর্ধনধারী অর্জুনভঞ্জন।।
কালীয়দমনকারী যমুনাবিহারী।
গোপীকুলবস্ত্রহারী শ্রীরাসবিহারী।।
ইন্দ্রদর্পনাশকারী কুব্জামনোহারী।