শ্রীমৎ আচার্য বিবেকানন্দ গোস্বামী
এম.এ.(ট্রিপল), সপ্ততীর্থ, বি.সি.এস (শিক্ষা) প্রাক্তন সহযোগী অধ্যাপক (দর্শন) বরগুনা সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ । প্রতিষ্ঠাতা বাংলাদেশ সেবাশ্রম। -এর স্বহস্তে লিখিত গ্রন্থ
মৃত্যু হতে অমৃতলোকে
For Ad Contact
0183 45 45 989
অতএব সকলেরই ফলাকাঙ্ক্ষা বর্জিত হয়ে কর্তব্যানুরোধে দান করা কর্তব্য। প্রত্যহ দান করতে না পারলেও বিহিত দিনে যথাসাধ্য দান করা। কোন কোন দিনে কর্তব্য তা শাস্ত্রে নির্দিষ্ট আছে। যথা-
(১৬)
মাস, বৎসর পক্ষানাম আরম্ভ দিন সম্বিকে। চতুর্দ্দশ্যাষ্টমী শুক্লা তথৈবৈকাদশীকুস্থাঃ
নিজ জন্ম দিনঞ্চৈব পিতোর্মরণ বাসরঃ। বৈধোৎসব দিনঞ্চৈব পুন্যকাল প্রকীর্তিতা। (মহানির্বান তন্ত্র চমউঃ)
অর্থাৎ মাসের ও বৎসরের আরম্ভ দিন, পক্ষের আরম্ভ দিন, চতুর্দ্দশী শুক্লপক্ষের অষ্টমী, একাদশী, অমাবশ্যা, নিজের জন্মদিন, পিতামাতার মরণ দিন এবং
বিবিহিত উৎসব দিন অর্থাৎ চন্দ্র-সূর্য্যের গ্রহণকাল, পুন্যকাল এই সমস্ত দিন ও পুণ্যতীর্থে দান করা কর্তব্য।
কেননা-
পুন্যতীর্থে, পুন্যতীথৌ গ্রহণে চন্দ্র সূর্য্যেয়ো;
জপদান প্রকুর্বানং শ্রেয়সাং নিলযো ভবেৎ। (মহানির্বান)
পুন্যতিথিতে, পুন্যতীর্থে ও চন্দ্র সূর্য্যের গ্রহণকালে জপ ও দান করলে গৃহস্থ ভোজন হবে। শাস্ত্রে দানের সময়াদি বিশদরূপে বর্ণিত আছে। শাস্ত্রানুমোদিত
সময়ে দান করবে, অল্পদানে বেশী ফল পাওয়া যায়। বার তিথি বিশেষ অক্ষয় হয়। ঐ অক্ষয় দিন পাপ বা পুন্য যে কাজ করবে, তার ক্ষয় নাই। যথা-
চতুর্থ্যহধারকে বারে অষ্টমী চ বৃহস্পতৌ;
অত্র যৎ ক্রিয়তে পাপমথবা পূন্য-সঞ্চয়,
ষষ্ঠী জন্মসহস্রানি প্রাপ্রোতি হি তদক্ষরম। (জ্যোতিষ বচন)
সোমবারে অমাবস্যা, রবিবারে সপ্তমী, মঙ্গলবারে চতুর্থী, বৃহস্পতিবারে অষ্টমী হলে সেই দিনটিকে অক্ষয়া বলা যায়। এই অক্ষয় দিনে পাপ অথবা পূন্য যে কর্ম করবে
৬০ হাজার জন্মেও তা ক্ষয় হয় না। উপযুক্ত সোম প্রভৃতি চারিবার ঐ সকল তিথির সহযোগমধ্যে হয়ে থাকে। পঞ্জিকা দেখলেই জানতে পারা যাবে। অতএব অক্ষয়া
দিনে সামর্থ্যানুসারে কিঞ্চিৎ দান করা এবং জপ পর্বাদি যে কোনরূপ ধর্ম ও পূন্য করা কর্তব্য। দুর্ভাগ্যবশতঃ যদি কেহ না পারেন, তাহলে অক্ষয়া দিনে সতর্কভাবে
দিন যাপন করা উচিত। যেন কোনরূপ অধর্ম ও পাপ কার্য্য অনুষ্ঠিত না হয়। দানদ্রব্যের পরিমাণ অপেক্ষা ফলাধিক্য হওয়ার জন্য স্বরোদয় শাস্ত্রে দান করার একটি
বিশেষ বিধি আছে। এর ভাবার্থ এই যে নিঃশ্বাস গ্রহণ সময়ে যা কিছু দান করা যায় সেই দানের ফল কোটি গুন অধিক হয়। যথা-
শ্বাসে সকারসংস্থে তু যদ্দানং দীয়তে বুধৈঃ,
তদ্দার্নং জীবলোকেহস্মিন কোটি গুনং ভবেদ্বিৎ।। (স্বরোদয়)
গৃহস্থগণের কর্তব্য, যে মুষ্টি ভিক্ষা অথবা অর্থ বস্ত্রাদি যা দান করবে তা স্বাভাবিক শ্বাস গ্রহণ সময়ে দিবে। এরূপ দান করলে, দানদ্রব্যের পরিমানিক্য লাভ হবে।
এইতো গেল প্রথম উপায়। দ্বিতীয় উপায়- তপস্যা।
(১৭)
জয় রাধে শ্যাম