শ্রীমৎ আচার্য বিবেকানন্দ গোস্বামী
এম.এ.(ট্রিপল), সপ্ততীর্থ, বি.সি.এস (শিক্ষা) প্রাক্তন সহযোগী অধ্যাপক (দর্শন) বরগুনা সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ । প্রতিষ্ঠাতা বাংলাদেশ সেবাশ্রম। -এর স্বহস্তে লিখিত গ্রন্থ
মৃত্যু হতে অমৃতলোকে
For Ad Contact
0183 45 45 989
গুরুবাক্য ও যৌগিক পন্থা (4)
এহেন দেব-প্রার্থীর ভারতবর্ষে জন্মগ্রহন করে যারা ধর্মচিন্তা ও পারলৌকিক মংগল উদ্দেশ্যে কার্য্যানুষ্ঠান না করে
তারা অতি মন্দভাগ্য এবং পাপের মূর্ত্তি। সাংসারিক ও বৈষয়িক কার্য্যে নিয়ত ব্যাপৃত থেকেও সকলেরই ধর্মনুষ্ঠান ও উপাসনা করা কর্তব্য। যারা উপার্জন,
ধন সংরক্ষন ও ধনের পরিমান বৃদ্ধি করণ চিন্তায় সতত নিযুক্ত এবং যারা ২৪ কায়েমী পাট্টনিয়ে আসছেন বলে মনে করে সতত স্বার্থ সাধনে রত থেকে ধর্ম-কর্ম্ম করতে
ও ভগবানের আরাধনা করতে সময় পান নাই অথবা তৎপ্রবৃত্তি যাদের মনের মধ্যে স্থান পায় নাই তারা যদি জানতে পারেন যে মৃত্যু ভীষণ বদন ব্যাদান করে নৃত্য করছে,
আর ছয় মাস কি এক বৎসারান্তে ইহসংসারের ধন সম্পদ প্রিয়পরিজনাদি ত্যাগ করে যেতে হবে তাহলে আর কিছু হোক না হোক ঐ অল্প সময়ের মধ্যেও
পরকালের মঙ্গলজনক অনেক কার্য করতে পারেন।
(৬)
মাতার কর্তব্য
গর্ভাবস্থায় স্ত্রীলোকের কিভাবে থাকলে সু-সন্তান লাভ হয়ঃ
১। গর্ভ হলে উপবাস, মৈথুন, মল-মূত্রাদির বেগধারন, রাত্রি জাগরণ, শোকাদি পরিত্যাগ করবে।
২। গর্ভাবস্থায় বায়ুজনক আহার ও বায়ু বৃদ্ধিকর অধিক আহার করিলে গর্ভস্থ সন্তান কুঁজো অন্ধ, জড় বা বামন হয়।
৩। পিত্তবর্দ্ধক আহার ও আহরণ অধিক পরিমানে করিলে গর্ভস্থ সন্তান পিঙ্গলবর্ণ হয়।
৪। শ্লেষ্মাজনক অর্থাৎ কফ বৃদ্ধিকর আহার ও হিমাদি শৈত্যসেবা অধিক পরিমানে আহার করলে সন্তান শ্বেতরোগগ্রস্থ অথবা পান্ডুবর্ণ হয়ে থাকে। শাস্ত্রে আছে যে পিতা-মাতার অনাচার
ও উভয়ের কর্মদোষে বায়ু, পিত্ত, শ্লেষ্মার প্রকোপ হলে, গর্ভবিকার প্রাপ্ত হয় এবং সেই বিকৃতগর্ভের সন্তানও বিকৃত হয়ে সর্প বৃশ্চিক, কুষ্মান্ড প্রভৃতির ন্যায় হয়ে থাকে।
গর্ভবতী নারীর চতুর্থ মাস হতে যে যে অভিলাষ হয় তা পূর্ণ না হলেও গর্বস্থ সন্তান কুব্জ, কুনি, খুঞ্চ, বামন ও বিকৃতচক্ষু ও অন্ধ হয়। এ জন্য গর্ভাবস্থায় যা যা ভোগ
করতে কিংবা দর্শন করতে অভিলাষ/ইচ্ছা হয়, গর্ভপীড়া জন্মাবার আশংকা নিবারানার্থে সেই সকল পূর্ণ করা কর্ত্তব্য।
গর্ভবতী নারীর যে যে বস্তু আহার করতে ইচ্ছে হয়, তা আহার না করলে সন্তানের কোন না কোন দোষ জন্মে থাকে। স্ত্রীজাতি স্বভাবতঃ লজ্জাশীলা, বিশেষত
আহারের অভিলাষ কোন মতেই ব্যক্ত করতে পারে না; এ জন্য গভীর জ্ঞানসম্পন্ন প্রাচীন মহাত্মারা ‘সাধভক্ষন’ করার রীতি প্রচলন করেছিলেন ও গর্ভাবস্থায়
ইচ্ছানুরূপ আহার করতে না পারলে সন্তানের বিশেষ অনিষ্ট হবার সম্ভাবনা বলে ‘ষড়রস’ সমন্বিত বিবিধ আহার্য্য বস্তুদ্বারা ‘সাধ’ দিবার রীতি প্রচলিত আছে।
রমনীর গর্ভাবস্থায় যে যে ইন্দ্রিয়ের অভিলাষ পূর্ণ না হয়, গর্ভস্থ সন্তানেরও সেই সেই ইন্দ্রিয়ের পীড়া জন্মে; অতএব গর্ভাবস্থায় কেবল আহার বলে নয় যা যা অভিলাষ হয়,
সুসন্তান ইচ্ছা করলে তা পূর্ণ করা সর্বতোভাবে কর্ত্তব্য।
জয় রাধে শ্যাম