সনাতন ধর্মের সুনির্বাচিত বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ কিছু শ্লোকঃ-

জ্ঞান-ই শক্তি ! নিজের ধর্ম সম্পর্কে আগে ভালোভাবে জানুন এবং অন্যকেও জানতে উৎসাহিত করুন।

আপনার পছন্দমত যে কোন ধরনের লেখা পোস্ট করতে পারেন। মানসম্মত লেখা নামসহ সাইটে স্থায়ীভাবে পাবলিশ করা হয়।

গুরু / শিষ্য সম্পর্কে কিছু গুরুত্বপূর্ণ শ্লোক


  • শ্লোক: 1

    তদ্ বিদ্ধি প্রণিপাতেন পরিপ্রশ্নেন সেবয়া ।
    উপদেক্ষ্যন্তি তে জ্ঞানং জ্ঞানিনস্তত্ত্বদর্শিনঃ ।।
    (গীতা ৪/৩৪)
  • অনুবাদঃ- সদ্ গুরু শরণাগত হয়ে তত্ত্বজ্ঞান লাভ করার চেষ্টা কর। বিনম্র চিত্তে প্রশ্ন জিজ্ঞাসা কর এবং অকৃত্রিম সেবার দ্বারা তাঁকে সন্তুষ্ট কর ৷ তা হলে সেই তত্ত্বদ্রষ্টা পুরুষেরা তোমাকে জ্ঞান উপদেশ দান করবেন।

  • শ্লোক: 2

    কিবা বিপ্র, কিবা ন্যাসী, শূদ্র কেনে নয় ।
    যেই কৃষ্ণতত্ত্ববেত্তা, সেই 'গুরু' হয় ।।
    (চৈঃ চঃ মধ্য ৮/১২৮)
  • অনুবাদঃ- যিনি কৃষ্ণ-তত্ত্ববেত্তা তিনিই গুরু, তা তিনি ব্রাহ্মণ হোন, কিংবা সন্ন্যাসীই হোন অথবা শূদ্রই হোন, তাতে কিছুই যায় আসে না।

  • শ্লোক: 3

    গুরুর্ন স স্যাৎ স্বজনো ন স স্যাৎ
    পিতা ন স স্যাজ্জননী ন সা স্যাৎ ।
    দৈবং ন তৎস্যান্ন পতিশ্চ স স্যা-
    ন্ন মোচয়েদ্ যঃ সমুপেতমৃত্যুম্ ।।
    (ভাগবত ৫/৫/১৮)
  • অনুবাদঃ- যিনি তাঁর আশ্রিত জনকে সমুপস্থিত মৃত্যুরূপ সংসার মার্গ থেকে উদ্ধার করতে না পারেন, তাঁর গুরু, পিতা, পতি, জননী অথবা পূজ্য দেবতা হওয়া উচিত নয়।

  • শ্লোক: 4

    ষটকর্ম নিপুণো বিপ্রো মন্ত্রতন্ত্রবিশারদঃ ।
    অবৈষ্ণবো গুরুর্ন স্যাদ্ বৈষ্ণবঃ শ্বপচো শুরুঃ ।।
    (পদ্ম পুরাণ)
  • অনুবাদঃ- কোন ব্রাহ্মণ যদি ব্রাহ্মণের ছয়টি কর্মে নিপুণ হয় এবং মন্ত্রতন্ত্রে বিশারদও হয়, কিন্তু সে যদি কৃষ্ণভক্ত না হয়, তা হলে সে গুরু হতে পারে না, পক্ষান্তরে চণ্ডাল কুলে উদ্ভূত ব্যাক্তিও যদি শুদ্ধ কৃষ্ণভক্ত হয়, তা হলে সেই গুরু হতে পারে।

  • শ্লোক: 5

    জন্মনা জায়তে শূদ্রঃ সংস্কারাদ্ ভবেদ্দ্বিজঃ ।
    বেদপাঠাদ্ ভবেদ্বিপ্রা ব্রহ্ম জানাতীতি ব্রাহ্মণঃ ।।
    (অজ্ঞাত উৎস)
  • অনুবাদঃ- জন্মসূত্রে প্রত্যেকেই শূদ্র, প্রয়োজনীয় সংস্কারের মাধ্যমে কেউ দ্বিজ বা ব্রাহ্মণ হতে পারে, বেদ পাঠ করলে বিপ্র হওয়া যায় এবং ব্রহ্মকে উপলব্ধি করেছেন যিনি তিনিই ব্রাহ্মণ।

  • শ্লোক: 6

    মুচি হয়ে শুচি হয় যদি কৃষ্ণ ভজে ।
    শুচি হয়ে মুচি হয় যদি কৃষ্ণ ত্যজে ।।
  • অনুবাদঃ- একজন মুচি বা মুচিকুলে জাত ব্যক্তিও যদি কৃষ্ণভাবনামৃত গ্রহণ করেন, তা হলে তিনি শুদ্ধ ব্রাহ্মণের স্তরে উন্নীত হতে পারেন। কিন্তু কোন ব্রাহ্মণ যদি কৃষ্ণভাবনামৃত ত্যাগ করেন, তা হলে তিনি একজন মুচি ছাড়া আর কিছুই নন।

  • শ্লোক: 7

    মাম্, হি, পার্থ, ব্যপাশ্রিত্য, যে, অপি, স্যুঃ, পাপযোনয়ঃ।
    স্ত্রিয়ঃ, বৈশ্যাঃ, তথা, শূদ্রাঃ, তে, অপি, যান্তি, পরাম্, গতিম্ ॥
    (গীতা ৯/৩২)
  • অনুবাদঃ- হে পার্থ ! যারা আমাকে বিশেষভাবে আশ্রয় করে, তারা স্ত্রী, বৈশ্য, শূদ্র আদি নীচকুলে জাত হলেও অবিলম্বে পরাগতি লাভ করে।

  • শ্লোক: 8

    'কে আমি', 'কেনে আমায় জারে তাপত্রয়' ।
    ইহা নাহি জানি-- 'কেমনে হিত হয়' ।।
    (চৈঃ চঃ মধ্য ২০/১০২)
  • অনুবাদঃ- আমি কে? কেন জড় জগতের তিনটি তাপ আমাকে নিরন্তর দুঃখ দেয়? আমি যদি তা না জানি, তা হলে কিভাবে আমার যথার্থ মঙ্গল সাধিত হবে?

  • শ্লোক: 9

    ব্রহ্মাণ্ড ভ্রমিতে কোন ভাগ্যবান জীব ।
    গুরু-কৃষ্ণ প্রসাদে পায় ভক্তিলতা-বীজ।।
    (চৈঃ চঃ মধ্য ১৯/১৫১)
  • অনুবাদঃ- জীব তার কর্ম অনুসারে ব্রহ্মাণ্ডে ভ্রমণ করে। কখনও সে উচ্চতর লোকে উন্নীত হয় এবং কখনও নিম্নতর লোকে অধঃপতিত হয়। এভাবেই ভ্রমণরত অসংখ্য জীবের মধ্যে কদাচিৎ কোন একটি জীব তার অসীম সৌভাগ্যের ফলে, শ্রীকৃষ্ণের কৃপায় সদগুরুর সান্নিধ্য লাভ করে। এভাবেই গুরু ও কৃষ্ণ, উভয়ের কৃপার প্রভাবে জীব ভক্তিলতার বীজ প্রাপ্ত হয়।

  • শ্লোক: 10
    গুরুমুখপদ্মবাক্য, চিত্তেতে করিয়া ঐক্য,
    আর না করিহ মনে আশা ।।
    (নরোত্তম দাস ঠাকুর, প্রেমভক্তিচন্দ্রিকা)
  • অনুবাদঃ- শ্রীগুরুদেবের মুখপদ্ম-নিঃসৃত উপদেশকে তোমার চিত্তের সঙ্গে ঐক্যবদ্ধ কর এবং অন্য আর কোন কিছুই আশা করো না ।

  • শ্লোক: 11
    আচার্যোপাসনম্
    (গীতা ১৩/৮)
  • অনুবাদঃ- অকৈতবে সদ্ গুরুর সেবা ।

  • শ্লোক: 12
    ব্রহ্মচারী গুরুকুলে বসন্দান্তো গুরুর্হিতম্ ।
    আচরন্ দাসবন্নীচো গুরৌ সুদৃঢ়সৌহৃদঃ ।।
    (ভাগবত ৭/১২/১)
  • অনুবাদঃ- (নারদ মুনি বললেন--) বিদ্যার্থীর কর্তব্য পূর্ণরূপে ইন্দ্রিয়-সংযম করার অভ্যাস করা। তার কর্তব্য বিনীতভাবে শ্রীগুরুদেবের প্রতি শ্রদ্ধাসহকারে সৌহার্দ্য পরায়ণ হওয়া এবং দাসবৎ আরচণ করা। এভাবেই মহান ব্রত সহকারে, কেবলমাত্র শ্রীগুরুদেবের হিতসাধনের জন্য ব্রহ্মচারীর গুরুকুলে বাস করা উচিত।
    (মহারাজ যুধিষ্ঠিরের নিকট নারদ মুনি)

  • শ্লোক: 13
    এবং জনং নিপতিতং প্রভবাহিকূপে
    কামাভিকামমনু যঃ প্রপতন্ প্রসঙ্গাৎ ।
    কৃত্বাত্মসাৎ সুরর্ষিণা ভগবান্ গৃহীতঃ
    সোহহং কথং নু বিসৃজে তব ভৃত্যসেবাম্ ।।
    (ভাগবত ৭/৯/২৮)
  • অনুবাদঃ- হে ভগবান! একের পর এক জড় বাসনার সঙ্গ প্রভাবে আমি সাধারণ মানুষদের অনুসরণ করে সর্পপূর্ণ অন্ধকূপে পতিত হয়েছি। আপনার সেবক নারদ মুনি কৃপা করে আমাকে তাঁর শিষ্যরূপে গ্রহণ করেছেন এবং দিব্য স্থিতি প্রাপ্ত হওয়ার শিক্ষা প্রদান করেছেন। তাই আমার সর্বপ্রথম কর্তব্য তাঁর সেবা করা। তাঁর সেবা আমি কি করে পরিত্যাগ করতে পারি?
    (ভগবান শ্রীনৃসিংহদেবের প্রতি প্রহ্লাদ মহারাজ)

  • শ্লোক: 14
    তস্মাদ্ গুরুং প্রপদ্যেত জিজ্ঞাসুঃ শ্রেয় উত্তমম্ ।
    শাব্দে পরে চ নিষ্ণাতং ব্রহ্মণ্যুপশমাশ্রয়ম্ ।।
    (ভাগবত ১১/৩/২১)
  • অনুবাদঃ- অতএব কেউ যদি আন্তরিকভাবে প্রকৃত আনন্দ কামনা করেন, তাহলে তাঁকে দীক্ষা গ্রহণের মাধ্যমে একজন সদ্গুরুর আশ্রয় অবশ্যই গ্রহণ করতে হবে। সদ্গুরুর যোগ্যতা হচ্ছে যে, তিনি গভীরভাবে শাস্ত্রের সিদ্ধান্ত উপলব্ধি করেছেন এবং অন্যদেরও সেই সব সিদ্ধান্ত বিষয়ে প্রত্যয় উৎপাদন করতে সক্ষম। যাঁরা জড় সুখ সুবিধাকে অগ্রাহ্য করে পরমেশ্বরের শরণ গ্রহণ করেছেন, সেই ধরনের মহান ব্যক্তিদেরই যথার্থ গুরু বলে বুঝতে হবে।
  • (সূত্রঃ- বৈষ্ণব শ্লোকাবলী) এরপর দেখুন= গুরু / শিষ্য সম্পর্কে আরও কিছু গুরুত্বপূর্ণ শ্লোক
  • Add_6

    আপনার পছন্দমত যে কোন ধরনের লেখা পোস্ট করতে পারেন। মানসম্মত লেখা নামসহ সাইটে স্থায়ীভাবে পাবলিশ করা হয়।

    সুনির্বাচিত শ্লোকঃ-

    * * * Anupamasite-এ আপনাকে স্বাগতম। আপনার পছন্দমত যে কোন ধরনের লেখা পোস্ট করতে এখানে ক্লিক করুন।   আপনাদের পোস্ট করা লেখাগুলো এই লিংকে আছে, দেখতে এখানে ক্লিক করুন। ধন্যবাদ * * *

    জ্ঞানই শক্তি ! তাই- আগে নিজে জানুন , শেয়ার করে প্রচারের মাধ্যমে অন্যকেও জানতে সাহায্য করুন।

    Say something

    Please enter name.
    Please enter valid email adress.
    Please enter your comment.