শ্রীমৎ আচার্য বিবেকানন্দ গোস্বামী
এম.এ.(ট্রিপল), সপ্ততীর্থ, বি.সি.এস (শিক্ষা) প্রাক্তন সহযোগী অধ্যাপক (দর্শন) বরগুনা সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ । প্রতিষ্ঠাতা বাংলাদেশ সেবাশ্রম। -এর স্বহস্তে লিখিত গ্রন্থ
মৃত্যু হতে অমৃতলোকে
For Ad Contact
0183 45 45 989
মাতার কর্তব্য (2)
চতুর্থমাসে গর্ভস্থ সন্তানের সমস্ত অংগ-প্রতংগ প্রকাশ পায়, হৃদয় জন্মে ও চৈতন্য প্রকাশ পায়। এই সময় গর্ভস্থ সন্তানের নানাবিধ ভোগ করার অভিলাষ
হয়ে থাকে এবং রমনীদিগের দুই হৃদয় হয়। গর্ভবতীর তৎকালীন অভিলাষকে দৌহৃদ্য বলে, সেই অভিলাষ পূর্ণ না হলে গর্ভস্থ সন্তান নানারূপ দোষযুক্ত হয়।
এজন্য গর্ভাবস্থায় স্ত্রীলোকদিগের অভিলাষিত সামগ্রী দেওয়া বিশেষ কর্ত্তব্য।
চতুর্থ মাসে সন্তানের যেরূপ ভোগের আকাঙ্খা বৃদ্ধি হয়; সঙ্গে সঙ্গে মাতারও ভোগের স্পৃহা বৃদ্ধি পায়। সেজন্য ৫ মাসে ‘পঞ্চমত’ দিবার ব্যবস্থা করেছেন।
আজকাল অনেকে হয়তো মনে করেন, এ একটা ‘স্ত্রী’-আচার’ মাত্র কিন্তু ইহা অবহেলার বিষয় নয়। কারণ উক্ত অভিলাষের নিবৃত্তি না হলে সন্তানের মহা অনিষ্ট হয়।
চতুর্থ মাস হতে ঐরূপ দৌহৃদ্য সময় গর্ভবতী নারীর যদি রাজদর্শনে অভিলাষ হয় তবে সেই গর্ভের সন্তান মহাভাগ্যবান ও ধনবান হয়।
অলংকার অথবা রেশমী বস্ত্রের অভিলাষ হলে সন্তান মনোহর ও অলংকার প্রিয় হয়।
(৭)
দেবতা ও প্রতিমা দর্শনে অভিলাষ হলে সন্তান অতি সভ্য ও সৎ হয়। সর্পাদি ও হিংস্র জন্তুর দর্শনের অভিলাষ হলে সন্তান হিংসাশীল হয়। মৃগমাংস ভক্ষনের অভিলাষ
হলে সন্তান দ্রুতগামী ও বিক্রমশীল হয়। বরাহ মাংসের অভিলাষ হলে সন্তান পরাক্রমশালী ও নিদ্রাশীল হয়। মহিষ মাংসের অভিলাষ হলে সন্তান রক্তাক্ত, লোমযুক্ত ও
পরাক্রমশালী হয়। এতদ্ব্যতীত অন্য যে জন্তুর মাংসে অভিলাষ জন্মে সেই জন্তুর অনুরূপ স্বভাব ও আচরণ হয়ে থাকে। অথবা অন্য যে প্রকৃতির বস্তু দর্শন ও
গীতাবাদ্যাদি শ্রবনের অভিলাষ জন্মে সন্তানও সেই প্রকৃতির হয়। গর্ভবতী নারী হিংসা, দ্বেষ, মিথ্যা ভাষনাদি যেরূপ ধর্ম্ম ও সৎ চিন্তা করবে সন্তান ততই ধার্মিক সুখী হবে।
গর্ভাবস্থায় দিবানিদ্রা একেবারেই ভাল নয়। গর্ভবতী নারী দিবানিদ্রা পরিত্যাগ করবে। দিবানিদ্রা হেতু শরীর রসস্থ হয় বলে গর্ভস্থ সন্তানেরও শ্লেষ্মা বৃদ্ধি হয় এবং প্রসব সময়েও কষ্ট হয়ে থাকে।
প্রসবে কষ্ট হবার কারণ
যে সমস্ত স্ত্রীলোক গর্ভহলে কাজ করে না, কেবল শুয়ে, বসে ও নভেল পড়ে সময় কাটায়, সে সকল রমনীদের প্রসব সময়ে অত্যন্ত কষ্ট হয়। সাধারণতঃ বড় ঘরের মেয়েদেরই
প্রসব হতে বেশী কষ্ট হয় ও তাদের মধ্যে মারাও বেশী যায়। গরীবের ঘরের মেয়েরা সাংসারিক পরিশ্রমের কার্য করে বলেই তাদের প্রসবে কোন কষ্ট হয় না এবং মেয়ে ডাক্তারও
ডাকতে হয় না। বিলাতের বড় ঘরের মেয়েদের সুখে প্রসব হওয়ার জন্য ‘কসরত’ করার নানারূপ প্রণালী আছে। উহা তত সুবিধাজনক নয় কারণ সকল স্ত্রীলোকের শরীরের
গঠনও এক নয়, মনের গতিও এক নয়, সেজন্য অস্বাভাবিক উপায়ের চেয়ে স্বাভাবিক কার্য্য করে সকল রকমেই ভাল।
জয় রাধে শ্যাম