সনাতন ধর্মের সুনির্বাচিত বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ কিছু শ্লোকঃ-

জ্ঞান-ই শক্তি ! নিজের ধর্ম সম্পর্কে আগে ভালোভাবে জানুন এবং অন্যকেও জানতে উৎসাহিত করুন।

আপনার পছন্দমত যে কোন ধরনের লেখা পোস্ট করতে পারেন। মানসম্মত লেখা নামসহ সাইটে স্থায়ীভাবে পাবলিশ করা হয়।

ভক্তিমূলক সেবা সম্পর্কে কিছু গুরুত্বপূর্ণ শ্লোক

  • শ্লোক: 55

    অকামঃ সর্বকামো বা মোক্ষকাম উদারধীঃ ।
    তীব্রেণ ভক্তিযোগেন যজেত পুরুষং পরম্ ।।
    (ভাগবত ২/৩/১০)
  • অনুবাদঃ- সর্বপ্রকার কামনা যুক্ত হোন, অথবা সম্পূর্ণ নিষ্কাম হোন, অথবা মুক্তিকামীই হোন, সুবুদ্ধিমান মানুষ তীব্র শুদ্ধ ভক্তিযোগে পরম পুরুষ শ্রীকৃষ্ণের আরাধনা করবেন।
    (শ্রীল শুকদেব গোস্বামী)

  • শ্লোক: 56

    স্মর্তব্যঃ সততং বিষ্ণুর্বিস্মর্তব্যো ন জাতুচিৎ ।
    সর্বে বিধিনিষেধাঃ স্যুরেতয়োরেব কিঙ্করাঃ ।।
    (পদ্ম পুরাণ)
  • অনুবাদঃ- সর্বদা বিষ্ণুকে স্মরণ করা উচিত এবং কখনই তাঁকে ভুলে যাওয়া উচিত নয়। সমস্ত বিধি ও নিষেধ এই দুটি কথার অনুগত ।

  • শ্লোক: 57

    স হানিস্তন্ মহচ্ছিদ্রং স মোহঃ স চ বিভ্রমঃ ।
    যন্মুহূর্তং ক্ষণং বাপি বাসুদেবং ন চিন্তয়েৎ ।।
    (বিষ্ণু পুরাণ)
  • অনুবাদঃ- এক মুহূর্ত ক্ষণও যদি বাসুদেবকে স্মরণ না করে অতিক্রান্ত হয়, তা হলে সেই হানিই হচ্ছে সবচেয়ে বড় হানি। সেটিই হচ্ছে সবচেয়ে বড় মোহ এবং সবচেয়ে বড় বিভ্রম।

  • শ্লোক: 58

    কামদ্ দ্বেষাদ্ ভয়াৎ স্নেহাদ্ যথা ভক্তেশ্বরে মনঃ ।
    আবেশ্য তদঘং হিত্বা বহবস্তদ্ গতিং গতাঃ ।।
    (ভাগবত ৭/১/৩০)
  • অনুবাদঃ- ভগবানের প্রতি ভক্তির মাধ্যমে যেমন তাঁর ধাম প্রাপ্ত হওয়া যায়, তেমনই অনেকেই কাম, দ্বেষ, ভয় ও স্নেহের প্রভাবে তাঁর প্রতি মনকে আবিষ্ট করে, তাঁদের পাপ কর্ম থেকে মুক্ত হয়ে সেই গতি প্রাপ্ত হয়েছেন।
    (মহারাজ যুধিষ্ঠিরের প্রতি নারদ মুনি)

  • শ্লোক: 59

    কামং ক্রোধং ভয়ং স্নেহমৈক্যং সৌহৃদমেব চ ।
    নিত্যং হরৌ বিদধতো যান্তি তন্ময়তাং হি তে ।।
    (ভাগবত ১০/২৯/১৫)
  • অনুবাদঃ- যে সমস্ত ব্যক্তি অবিশ্রান্তভাবে তাঁদের কাম, ক্রোধ, ভয়, স্নেহ, নিরাকার ব্রহ্মের সঙ্গে ঐক্য অনুভব এবং সখ্যভাব আদি অনুভূতিকে ভগবান শ্রীহরির অভিমুখে চালিত করেন, বাস্তবিকই তাঁরা শ্রীহরির চিন্তায় তন্ময়তা লাভ করেন।
    (শ্রীল শুকদেব গোস্বামী)

  • শ্লোক: 60

    অত্যাহারঃ প্রয়াসশ্চ প্রজল্পো নিয়মাগ্রহঃ ।
    জনসঙ্গশ্চ লৌল্যঞ্চ ষড়্ ভির্ভক্তির্বিনশ্যতি ।।
    (উপদেশামৃত ২)
  • অনুবাদঃ- প্রয়োজনের অতিরিক্ত আহার গ্রহণ বা প্রয়োজনের অধিক অর্থ সঞ্চয়, পার্থিব সম্পদ লাভের জন্য অত্যধিক প্রচেষ্টা করা, কৃষ্ণবিহীন অনাবশ্যক গ্রাম্য-কথন, পারমার্থিক জীবনে উন্নতি লাভের জন্য প্রয়াস না করে শুধুমাত্র শাস্ত্রের নিয়ম-নীতিগুলি অনুসরণ করার জন্যই তাদের অনুশীলন করার প্রচেষ্টা, বা শাস্ত্রের নির্দেশ অমান্যপূর্বক ব্যক্তিগত খেয়াল বা ইচ্ছা অনুসারে কার্য সম্পাদন করার প্রচেষ্টা, কৃষ্ণ ভাবনাবিমুখ জড় বিষয়ী লোকের সঙ্গ করা, পার্থিব বিষয় লাভ করার বাসনায় ব্যাকুল হওয়া—কোন ব্যক্তি যখন উপরোক্ত ছয়টি দোষের দ্বারা আবদ্ধ হয়ে পড়ে, তখন তার পারমার্থিক জীবন বিনাশপ্রাপ্ত হয়।
    (শ্রীল রূপ গোস্বামী)

  • শ্লোক: 61

    উৎসাহান্নিশ্চয়াদ্ধৈর্যাৎ তত্তৎকর্মপ্রবর্তনাৎ ।
    সঙ্গত্যাগাৎ সতোবৃত্তেঃ ষড়্ ভির্ভক্তিঃ প্রসিধ্যতি ।।
    (উপদেশামৃত ৩)
  • অনুবাদঃ- ভক্তিযোগে ভগবানের শ্রীপাদপদ্মে সেবাকার্য সম্পাদন করার সময় অনুকূলে ছয়টি প্রধান নিয়ম বা বিধি বর্তমান আছে। যথা, সেবাকার্যে উৎসাহ, দৃঢ় বিশ্বাস বা সংকল্প, ধৈর্য ধারণ, নববিধা ভক্তির বিধি অনুসারে সেবাকার্য সম্পাদন, আসক্তি ও অসৎসঙ্গ ত্যাগ, পূর্বতন আচার্যবর্গের পদাঙ্ক অনুসরণ। এই ছয়টি বিধি অনুসারে পারমার্থিক জীবন যাপন করলে ভক্তিযোগে অবশ্যই সিদ্ধিলাভ করা যাবে।
    (শ্রীল রুপ গোস্বামী)

  • শ্লোক: 62

    কৃষ্ণভক্তিরসভাবিতা মতিঃ
    ক্রীয়তাং যদি কুতোহপি লভ্যতে ।
    তত্র লৌল্যমপি মূল্যমেকলং
    জন্মকোটিসুকৃতৈর্ন লভ্যতে ।।
    (রূপগোস্বামী, পদ্যাবলী-১৪)
  • অনুবাদঃ- কোটি কোটি জন্ম-জন্মান্তরের সুকৃতির দ্বারাও যা পাওয়া যায় না, অথচ লোভরূপ একটি মূল্য দিয়ে যা পাওয়া যায়, সেই কৃষ্ণভক্তি রসভাবিতা মতি যেখানেই পাও, অবিলম্বে তা ক্রয় করে নাও।

  • শ্লোক: 63

    সর্বোপাধিবিনির্মুক্তং তৎপরত্বেন নির্মলম্ ।
    হৃষীকেণ হৃষীকেশ-সেবনং ভক্তিরুচ্যতে ।।
    (নারদ পঞ্চরাত্র)
  • অনুবাদঃ- সমস্ত ইন্দ্রিয়ের দ্বারা ইন্দ্রিয়ের অধীশ্বর হৃষীকেশের সেবা করার নাম ভক্তি। এই সেবার দুটি ‘তটস্থ’ লক্ষণ—যথা, এই শুদ্ধ ভক্তি সমস্ত উপাধি থেকে মুক্ত এবং কেবল শ্রীকৃষ্ণের সেবায় যুক্ত হবার ফলে নির্মল ।

  • শ্লোক: 64

    অন্যাভিলাষিতাশূন্যং জ্ঞানকর্মাদ্যনাবৃতম্ ।
    আনুকূল্যেন কৃষ্ণানুশীলনং ভক্তিরুত্তমা ।।
    (ভঃ রঃ সিঃ ১/১/১১)
  • অনুবাদঃ- যখন উত্তমা ভক্তি জাগ্রত হয়, তখন ভক্তকে অবশ্যই সমস্ত জড় অভিলাষ, অদ্বৈত মায়াবাদ দর্শন এবং সকাম কর্মের বন্ধন থেকে মুক্ত হতে হবে। শ্রীকৃষ্ণের ইচ্ছার অনুকূলে ভক্তকে নিরন্তর সেবা অনুষ্ঠান করতে হবে।

  • শ্লোক: 65

    কৃষ্ণার্থে অখিল চেষ্টা
    (ভঃ রঃ সিঃ)
  • অনুবাদঃ- শুধুমাত্র শ্রীকৃষ্ণকে সন্তুষ্ট করার জন্যই আমাদের সমস্ত প্রচেষ্টা নিয়োজিত হওয়া উচিত।

  • শ্লোক: 66

    ন সাধয়তি মাং যোগো ন সাংখ্যং ধর্ম উদ্ধব ।
    ন স্বাধ্যায়স্তপস্ত্যাগো যথা ভক্তির্মমোর্জিতা ।।
    (ভাগবত ১১/১৪/২০)
  • অনুবাদঃ- [পরমেশ্বর ভগবান শ্রীকৃষ্ণ বললেন--] “হে উদ্ধব, আমার প্রতি প্রবলা ভক্তি যেমন আমাকে বশীভূত করতে পারে, অষ্টাঙ্গ-যোগ, অভেদ ব্রহ্মবাদ-রূপ সাংখ্য-জ্ঞান, বেদ অধ্যয়ন, সব রকম তপস্যা ও ত্যাগরূপ সন্ন্যাস আদির দ্বারা আমি সেই রকম বশীভূত হই না ।”
    (উদ্ধবের প্রতি শ্রীকৃষ্ণ)

  • (সূত্রঃ- বৈষ্ণব শ্লোকাবলী) এরপর দেখুন= কর্তব্য সম্পর্কে কিছু গুরুত্বপূর্ণ শ্লোক

  • Add_6

    আপনার পছন্দমত যে কোন ধরনের লেখা পোস্ট করতে পারেন। মানসম্মত লেখা নামসহ সাইটে স্থায়ীভাবে পাবলিশ করা হয়।

    সুনির্বাচিত শ্লোকঃ-

    * * * Anupamasite-এ আপনাকে স্বাগতম। আপনার পছন্দমত যে কোন ধরনের লেখা পোস্ট করতে এখানে ক্লিক করুন।   আপনাদের পোস্ট করা লেখাগুলো এই লিংকে আছে, দেখতে এখানে ক্লিক করুন। ধন্যবাদ * * *

    জ্ঞানই শক্তি ! তাই- আগে নিজে জানুন , শেয়ার করে প্রচারের মাধ্যমে অন্যকেও জানতে সাহায্য করুন।