সনাতন ধর্মের সুনির্বাচিত বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ কিছু শ্লোকঃ-

জ্ঞান-ই শক্তি ! নিজের ধর্ম সম্পর্কে আগে ভালোভাবে জানুন এবং অন্যকেও জানতে উৎসাহিত করুন।

আপনার পছন্দমত যে কোন ধরনের লেখা পোস্ট করতে পারেন। মানসম্মত লেখা নামসহ সাইটে স্থায়ীভাবে পাবলিশ করা হয়।

শ্রীমদ্ভগবত গীতার কিছু গুরুত্বপূর্ণ শ্লোক

শ্রীমদ্ভগবদগীতার অধ্যায়গুলো

  • ১ম ২য় ৩য় ৪র্থ ৫ম ৬ষ্ঠ ৭ম ৮ম ৯ম ১০ম ১১শ ১২শ ১৩শ ১৪শ ১৫শ ১৬শ ১৭শ ১৮শ
  • শ্লোক: 97

    তত্র, তম্, বুদ্ধিসংযোগম্, লভতে, পৌর্বদেহিকম্,
    যততে, চ, ততঃ, ভূয়ঃ, সংসিদ্ধৌ, কুরুনন্দন ॥
    (গীতা ৬/৪৩)"
  • অনুবাদঃ- হে কুরুনন্দন ! সেই প্রকার জন্মগ্রহণ করার ফলে তিনি পুনরায় তাঁর পুর্ব জন্মকৃত পারমার্থিক চেতনার বুদ্ধিসংযোগ লাভ করে সিদ্ধি লাভের জন্য পুনরায় যত্নবান হন।

  • শ্লোক: 98

    শরীরং যদবাপ্নোতি যচ্চাপ্যুৎক্রামতীশ্বরঃ ।
    গৃহীত্বৈতানি সংযাতি বায়ুর্গন্ধানিবাশয়াৎ ॥
    (গীতা ১৫/৮)"
  • অনুবাদঃ- বায়ু যেমন ফুলের গন্ধ নিয়ে অন্যত্র গমন করে, তেমনই এই জড় জগতে দেহের ঈশ্বর জীব এক শরীর থেকে অন্য শরীরে তার জীবনের বিভিন্ন ধারণাগুলি নিয়ে যায়।

  • শ্লোক: 99

    অপরেয়মিতস্ত্বন্যাং প্রকৃতিং বিদ্ধি মে পরাম্ ।
    জীবভূতাং মহাবাহো যয়েদং ধার্যতে জগৎ ॥
    (গীতা ৭/৫)"
  • অনুবাদঃ- হে মহাবাহো ! এই নিকৃষ্টা প্রকৃতি ব্যতীত আমার আর একটি উৎকৃষ্টা প্রকৃতি রয়েছে। সেই প্রকৃতি চৈতন্য-স্বরূপা ও জীবভূতা; সেই শক্তি থেকে সমস্ত জীব নিঃসৃত হয়ে এই জড় জগৎকে ধারণ করে আছে।

  • শ্লোক: 100

    মমৈবাংশো জীবলোকে জীবভূতঃ সনাতনঃ ।
    মনঃষষ্ঠানীন্দ্রিয়াণি প্রকৃতিস্থানি কর্ষতি ॥
    (গীতা ১৫/৭)"
  • অনুবাদঃ- এই জড় জগতে বদ্ধ জীবসমূহ আমার সনাতন বিভিন্নাংশ। জড়া প্রকৃতির বন্ধনে আবদ্ধ হওয়ার ফলে তারা মন সহ ছয়টি ইন্দ্রিয়ের দ্বারা প্রকৃতিরূপ ক্ষেত্রে কঠোর সংগ্র্রাম করছে।

  • শ্লোক: 101

    যথা প্রকাশয়ত্যেকঃ কৃৎস্নং লোকমিমং রবিঃ ।
    ক্ষেত্রং ক্ষেত্রী তথা কৃৎস্নং প্রকাশয়তি ভারত ॥
    (গীতা ১৩/৩৪)"
  • অনুবাদঃ- হে ভারত ! এক সূর্য যেমন সমগ্র জগৎকে প্রকাশ করে, সেই রকম ক্ষেত্রী আত্মাও সমগ্র ক্ষেত্রকে প্রকাশ করে।

  • শ্লোক: 102

    অথবা বহুনৈতেন কিং জ্ঞাতেন তবার্জুন।
    বিষ্টভ্যাহমিদং কৃৎস্নমেকাংশেন স্থিতো জগৎ॥
    (গীতা ১০/৪২)"
  • অনুবাদঃ- হে অর্জুন ! অথবা এই প্রকার বহু জ্ঞানের দ্বারা তোমার কি প্রয়োজন ? আমি আমার এক অংশের দ্বারা সমস্ত জগতে ব্যাপ্ত হয়ে অবস্থিত আছি।


  • না ভব মদ্ভক্তো মদ্ যাজী মাং নমস্কুরু ।
    মামেবৈষ্যসি সত্যং তে প্রতিজানে প্রিয়োহসি মে ॥
    (গীতা ১৮/৬৫) "
  • অনুবাদঃ- তুমি আমাতে চিত্ত অর্পণ কর, আমার ভক্ত হও, আমার পূজা কর এবং আমাকে নমস্কার কর। তা হলে তুমি আমাকে অবশ্যই প্রাপ্ত হবে ৷এই জন্য আমি তোমার কাছে সত্যই প্রতিজ্ঞা করছি, যেহেতু তুমি আমার অত্যন্ত প্রিয়।

  • শ্লোক: 103

    যেষাং ত্বন্তগতং পাপং জনানাং পুণ্যকর্মণাম্ ।
    তে দ্বন্দ্বমোহনির্মুক্তা ভজন্তে মাং দৃঢ়ব্রতাঃ ॥
    (গীতা ৭/২৮) "
  • অনুবাদঃ- যে সমস্ত পুণ্যবান ব্যক্তির পাপ সম্পূর্ণরূপে দূরীভূত হয়েছে এবং যাঁরা দ্বন্দ্বমোহ থেকে মুক্ত হয়েছেন, তাঁরা দৃঢ় নিষ্ঠার সঙ্গে আমার ভজনা করেন।

  • শ্লোক: 104

    পত্রং পুষ্পং ফলং তোয়ং যো মে ভক্ত্যা প্রযচ্ছতি ।
    তদহং ভক্ত্যুপহৃতমশ্নামি প্রযতাত্মনঃ ॥
    (গীতা ৯/২৬) "
  • অনুবাদঃ- যে বিশুদ্ধচিত্ত নিষ্কাম ভক্ত ভক্তি সহকারে আমাকে এমনকি পত্র, পুষ্প, ফল ও জলও অর্পণ করেন, আমি তাঁর সেই ভক্তিপ্লুত উপহার প্রীতি সহকারে গ্রহণ করি।

  • শ্লোক: 105

    যৎকরোষি যদশ্নাসি যজ্জুহোষি দদাসি যৎ ।
    যত্তপস্যসি কৌন্তেয় তৎকুরুষ্ব মদর্পণম্ ॥
    (গীতা ৯/২৭) "
  • অনুবাদঃ- হে কৌন্তেয় ! তুমি যা অনুষ্ঠান কর, যা আহার কর, যা হোম কর, যা দান কর এবং যে তপস্যা কর, সেই সমস্তই আমাকে সমর্পণ কর।

  • শ্লোক: 106

    কর্মণ্যেবাধিকারস্তে মা ফলেষু কদাচন ।
    মা কর্মফলহেতুর্ভূর্মা তে সঙ্গোহস্ত্বকর্মণি ॥
    (গীতা ২/৪৭)"
  • অনুবাদঃ- স্বধর্ম বিহিত কর্মে তোমার অধিকার আছে, কিন্তু কোন কর্মফলে তোমার অধিকার নেই। কখনও নিজেকে কর্মফলের হেতু মনে করো না, এবং কখনও স্বধর্ম আচরণ না করার প্রতিও আসক্ত হয়ো না।

  • শ্লোক: 107

    ন হি কশ্চিৎ ক্ষণমপি জাতু তিষ্টত্যকর্মকৃৎ ।
    কার্যতে হ্যবশঃ কর্ম সর্বঃ প্রকৃতিজৈর্গুণৈঃ ॥
    (গীতা ৩/৫)"
  • অনুবাদঃ- সকলেই মায়াজাত গুণসমূহের দ্বারা প্রভাবিত হয়ে অসহায়ভাবে কর্ম করতে বাধ্য হয়; তাই কর্ম না করে কেউই ক্ষণকালও থাকতে পারে না।

  • শ্লোক: 108

    নিয়তং কুরু কর্ম ত্বং কর্ম জ্যায়ো হ্যকর্মণঃ ।
    শরীরযাত্রাপি চ তে ন প্রসিদ্ধ্যেদকর্মণ ॥
    (গীতা ৩/৮) "
  • অনুবাদঃ- তুমি শাস্ত্রক্তো কর্মের অনুষ্ঠান কর, কেন না কর্মত্যাগ থেকে কর্মের অনুষ্ঠান শ্রেয়। কর্ম না করে কেউ দেহযাত্রাও নির্বাহ করতে পারে না।

  • শ্লোক: 109

    যজ্ঞার্থাৎ কর্মণোহন্যত্র লোকোহয়ং কর্মবন্ধনঃ ।
    তদর্থং কর্ম কৌন্তেয় মুক্তসঙ্গঃ সমাচর ॥
    (গীতা ৩/৯) "
  • অনুবাদঃ- বিষ্ণুর প্রীতি সম্পাদন করার জন্য কর্ম করা উচিত; তা না হলে কর্মই এই জড় জগতে বন্ধনের কারণ। তাই, হে কৌন্তেয় ! ভগবানের সন্তুষ্টি বিধানের জন্যই কেবল তুমি তোমার কর্তব্যকর্ম অনুষ্ঠান কর এবং এভাবেই তুমি সর্বদাই বন্ধন থেকে মুক্ত থাকতে পারবে।

  • শ্লোক: 110

    অহং হি সর্বযজ্ঞানাং ভোক্তা চ প্রভুরেব চ ।
    ন তু মামভিজানন্তি তত্ত্বেনাতশ্চ্যবন্তি তে ॥
    (গীতা ৯/২৪) "
  • অনুবাদঃ- আমিই সমস্ত যজ্ঞের ভোক্তা ও প্রভু। কিন্তু যারা আমার চিন্ময় স্বরূপ জানে না, তারা আবার সংসার সমুদ্রে অধঃপতিত হয়।

  • শ্লোক: 111

    যজ্ঞশিষ্টাশিনঃ সন্তো মুচ্যন্তে সর্বকিল্বিষৈঃ ।
    ভুঞ্জতে তে ত্বঘং পাপা যে পচন্ত্যাত্মকারণাৎ ॥
    (গীতা ৩/১৩) "
  • অনুবাদঃ- ভগবাদ্ভক্তেরা সমস্ত পাপ থেকে মুক্ত হন, কারণ তাঁরা যজ্ঞাবশিষ্ট অন্নাদি গ্রহন করেন। যারা কেবল স্বার্থপর হয়ে নিজেদের ইন্দ্রিয়ের তৃপ্তির জন্য অন্নাদি পাক করে, তারা কেবল পাপই ভোজন করে।

  • শ্লোক: 112

    তদ্ বিদ্ধি প্রণিপাতেন পরিপ্রশ্নেন সেবয়া ।
    উপদেক্ষ্যন্তি তে জ্ঞানং জ্ঞানিনস্তত্ত্বদর্শিনঃ ।।
    (গীতা ৪/৩৪)"
  • অনুবাদঃ- সদ্ গুরু শরণাগত হয়ে তত্ত্বজ্ঞান লাভ করার চেষ্টা কর। বিনম্র চিত্তে প্রশ্ন জিজ্ঞাসা কর এবং অকৃত্রিম সেবার দ্বারা তাঁকে সন্তুষ্ট কর ৷ তা হলে সেই তত্ত্বদ্রষ্টা পুরুষেরা তোমাকে জ্ঞান উপদেশ দান করবেন।

  • শ্লোক: 113

    মাম্, হি, পার্থ, ব্যপাশ্রিত্য, যে, অপি, স্যুঃ, পাপযোনয়ঃ।
    স্ত্রিয়ঃ, বৈশ্যাঃ, তথা, শূদ্রাঃ, তে, অপি, যান্তি, পরাম্, গতিম্ ॥
    (গীতা ৯/৩২)"
  • অনুবাদঃ- হে পার্থ ! যারা আমাকে বিশেষভাবে আশ্রয় করে, তারা স্ত্রী, বৈশ্য, শূদ্র আদি নীচকুলে জাত হলেও অবিলম্বে পরাগতি লাভ করে।

  • শ্লোক: 114

    ক্ষেত্রজ্ঞং চাপি মাং বিদ্ধি সর্বক্ষেত্রেষু ভারত ।
    ক্ষেত্রক্ষেত্রজ্ঞয়োর্জ্ঞানং যত্তজ্ জ্ঞানং মতং মম ॥
    (গীতা ১৩/৩)"
  • অনুবাদঃ- হে ভারত ! আমাকেই সমস্ত ক্ষেত্রের ক্ষেত্রজ্ঞ বলে জানবে এবং ক্ষেত্র ও ক্ষেত্রজ্ঞ সম্বন্ধে যে জ্ঞান, সেই জ্ঞানই আমার অভিমত।

  • শ্লোক: 115

    উপদ্রষ্টানুমন্তা চ ভর্তা ভোক্তা মহেশ্বরঃ ।
    পরমাত্মেতি চাপ্যুক্তো দেহেহস্মিন্ পুরুষঃ পরঃ ॥
    (গীতা ১৩/২৩) "
  • অনুবাদঃ- এই শরীরে আর একজন পরম পুরুষ রয়েছেন, যিনি হচ্ছেন উপদ্রষ্টা, অনুমন্তা, ভর্তা, ভোক্তা, মহেশ্বর এবং তাঁকে পরমাত্মাও বলা হয়।

  • শ্লোক: 116

    ঈশ্বরঃ সর্বভূতানাং হৃদ্দেশেহর্জুন তিষ্ঠতি ।
    ভ্রাময়ন্ সর্বভূতানি যন্ত্রারূঢ়ানি মায়য়া ॥
    (গীতা ১৮/৬১)"
  • অনুবাদঃ- হে অর্জুন ! পরমেশ্বর ভগবান সমস্ত জীবের হৃদয়ে অবস্থান করছেন এবং সমস্ত জীবকে দেহরূপ যন্ত্রে আহরণ করিয়ে মায়ার দ্বারা ভ্রমণ করান।

  • শ্লোক: 117

    সর্বস্য চাহং হৃদি সন্নিবিষ্টো মত্তঃ স্মৃতির্জ্ঞানমপোহনং চ ।
    বেদৈশ্চ সর্বৈরহমেব বেদ্যো
    বেদান্তকৃদ্ বেদবিদেব চাহম্ ॥
    (গীতা ১৫/১৫)"
  • অনুবাদঃ- আমি সমস্ত জীবের হৃদয়ে অবস্থিত এবং আমার থেকেই স্মৃতি, জ্ঞান ও বিলোপ হয়। আমিই সমস্ত বেদের জ্ঞাতব্য এবং আমিই বেদান্তকর্তা ও বেদবিৎ।

  • শ্রীমদ্ভাগবত গীতার আরও কিছু গুরুত্বপূর্ণ শ্লোক

    শ্রীমদ্ভগবদগীতার অধ্যায়গুলো

    ১ম ২য় ৩য় ৪র্থ ৫ম ৬ষ্ঠ ৭ম ৮ম ৯ম ১০ম ১১শ ১২শ ১৩শ ১৪শ ১৫শ ১৬শ ১৭শ ১৮শ
  • Add_6

    আপনার পছন্দমত যে কোন ধরনের লেখা পোস্ট করতে পারেন। মানসম্মত লেখা নামসহ সাইটে স্থায়ীভাবে পাবলিশ করা হয়।

    সুনির্বাচিত শ্লোকঃ-

    * * * Anupamasite-এ আপনাকে স্বাগতম। আপনার পছন্দমত যে কোন ধরনের লেখা পোস্ট করতে এখানে ক্লিক করুন।   আপনাদের পোস্ট করা লেখাগুলো এই লিংকে আছে, দেখতে এখানে ক্লিক করুন। ধন্যবাদ * * *

    জ্ঞানই শক্তি ! তাই- আগে নিজে জানুন , শেয়ার করে প্রচারের মাধ্যমে অন্যকেও জানতে সাহায্য করুন।

    Say something

    Please enter name.
    Please enter valid email adress.
    Please enter your comment.