শ্রীমদ্ভাগবতের আরও কিছু গুরুত্বপূর্ণ শ্লোক
শ্লোক: 165
যস্য যল্লক্ষণং প্রোক্তং পুংসো বর্ণাভিব্যঞ্জকম্ ।
যদন্যত্রাপি দৃশ্যেত তত্তেনৈব বিনির্দিশেৎ ।।
(ভাগবত ৭/১১/৩৫)
অনুবাদঃ- কোনও ব্যক্তি যদি ব্রাহ্মণ, ক্ষত্রিয়, বৈশ্য বা শূদ্রের উপরোক্ত লক্ষণগুলি প্রদর্শন করে, তা হলে সে যদি অন্য বর্ণেও জাত হয়, তবুও তাকে ওই সমস্ত লক্ষণ অনুসারেই বিশেষ বর্ণের অন্তর্ভুক্ত বলে গণ্য করতে হবে।
(মহারাজ যুধিষ্ঠিরের প্রতি নারদ মুনির উক্তি)
শ্লোক: 166
য এষাং পুরুষং সাক্ষাদাত্মপ্রভবমীশ্বরম্ ।
ন ভজন্ত্যবজানন্তি স্থানাদ্ ভ্রষ্টাঃ পতন্ত্যধঃ ।।
(ভাগবত ১১/৫/৩)
অনুবাদঃ- এই চার বর্ণাশ্রমের মধ্যে যারা তাদের প্রভু ভগবান বিষ্ণুর সাক্ষাৎ ভজন না করে, নিজের নিজের বর্ণ ও আশ্রমের অহংকারে তাঁর ভজনে অবজ্ঞা করে, তারা স্থান ভ্রষ্ট হয়ে অধঃ পতিত হয়।
শ্লোক: 167
ধর্মঃ স্বনুষ্ঠিতঃ পুংসাং বিষ্বক্ সেনকথাসু যঃ ।
নোৎপাদয়েদ্ যদি রতিং শ্রম এব হি কেবলম্ ।।
(ভাগবত ১/২/৮)
অনুবাদঃ- স্বীয় বৃত্তি অনুসারে বর্ণাশ্রম পালনরূপ স্বধর্ম অনুষ্ঠান করার ফলেও যদি পরমেশ্বর ভগবানের মহিমা শ্রবণ-কীর্তনে আসক্তির উদয় না হয়, তা হলে তা বৃথা শ্রম মাত্র।
(সূত গোস্বামী)
শ্লোক: 168
অতঃ পুম্ভির্দ্বিজশ্রেষ্ঠা বর্ণাশ্রমবিভাগশঃ ।
স্বনুষ্ঠিতস্য ধর্মস্য সংসিদ্ধির্হরিতোষণম্ ।।
(ভাগবত ১/২/১৩)
অনুবাদঃ- হে দ্বিজশ্রেষ্ঠ! তাই সিদ্ধান্ত করা হয়েছে যে, স্বীয় প্রবণতা অনুসারে বর্ণাশ্রম-ধর্ম পালন করার মাধ্যমে পরমেশ্বর ভগবান শ্রীহরির সন্তুষ্টি-বিধান করাই হচ্ছে স্বধর্মের চরম ফল।
শ্লোক: 169
বিপ্রাদ্ দ্বিষড়্ গুণযুতাদরবিন্দনাভ-
পাদারবিন্দবিমুখাৎ শ্বপচং বরিষ্ঠম্ ।
মন্যে তদর্পিতমনোবচনেহিতার্থ-
প্রাণং পুনাতি স কুলং ন তু ভূরিমানঃ ।।
(ভাগবত ৭/৯/১০)
অনুবাদঃ- যাঁর মন, বচন, চেষ্টা, অর্থ ও প্রাণ শ্রীকৃষ্ণের শ্রীপাদপদ্মে অর্পিত হয়েছে, তিনি যদি চণ্ডাল কুলেও জন্মগ্রহণ করে থাকেন, তা হলেও তিনি কৃষ্ণ-পাদপদ্ম বিমুখ দ্বাদশ গুণবিশিষ্ট ব্রাহ্মণের থেকেও শ্রেষ্ঠ বলে আমি মনে করি, কেন না তিনি (শ্বপচ কুলোদ্ভূত) স্বীয় কুল পবিত্র করেন। কিন্তু অতি গর্বিত অভক্ত ব্রাহ্মণ তা করতে পারেন না।
শ্লোক: 170
কামং ববর্ষ পর্জন্যঃ সর্বকামদুঘা মহী ।
সিষিচুঃ স্ম ব্রজান্ গাবঃ পয়সোধস্বতীর্মুদা ।।
(ভাগবত ১/১০/৪)
অনুবাদঃ- মহারাজ যুধিষ্ঠিরের রাজত্বকালে মেঘরাজি মানুষের প্রয়োজন মতো যথেষ্ট বারি বর্ষণ করত এবং পৃথিবী মানুষের সমস্ত প্রয়োজনই পর্যাপ্তভাবে পূর্ণ করত। দুগ্ধবতী প্রফুল্লমনা গাভীদের স্ফীত স্তন থেকে ক্ষরিত দুগ্ধে গোচারণভূমি সিক্ত হত।
(সূত গোস্বামী)
শ্লোক: 171
ত্যক্ত্বা স্বধর্মং চরণাম্বুজং হরে-
র্ভজন্নপক্কোহথ পতেত্ততো যদি ।
যত্র ক্ব বাভদ্রমভূদমুষ্য কিং
কো বার্থ আপ্তোহভজতাং স্বধর্মতঃ ।।
(ভাগবত ১/৫/১৭)
অনুবাদঃ-
ভগবানের প্রেমময়ী সেবায় যুক্ত হওয়ার জন্য যিনি জাগতিক কর্তব্য পরিত্যাগ করেছেন, অপক্ক অবস্থায় যদি কোন কারণে তাঁর পতনও হয়, তবুও বিফল হওয়ার কোন সম্ভাবনা থাকে না। পক্ষান্তরে, অভক্ত যদি সর্বতোভাবে নৈমিত্তিক ধর্ম-অনুষ্ঠানে যুক্ত হয়, তবুও তাতে তার কোন লাভ হয় না।
(ব্যাসদেবের প্রতি নারদ মুনি)
(সূত্রঃ- বৈষ্ণব শ্লোকাবলী) এরপর দেখুন=
চৈতন্য চরিতামৃত থেকে গুরুত্বপূর্ণ শ্লোক
আপনার পছন্দমত যে কোন ধরনের লেখা পোস্ট করতে পারেন। মানসম্মত লেখা নামসহ সাইটে স্থায়ীভাবে পাবলিশ করা হয়।