সনাতন ধর্মের সুনির্বাচিত বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ কিছু শ্লোকঃ-

জ্ঞান-ই শক্তি ! নিজের ধর্ম সম্পর্কে আগে ভালোভাবে জানুন এবং অন্যকেও জানতে উৎসাহিত করুন।

আপনার পছন্দমত যে কোন ধরনের লেখা পোস্ট করতে পারেন। মানসম্মত লেখা নামসহ সাইটে স্থায়ীভাবে পাবলিশ করা হয়।

শ্রীমদ্ভগবত গীতার কিছু গুরুত্বপূর্ণ শ্লোক

শ্রীমদ্ভগবদগীতার অধ্যায়গুলো

  • ১ম ২য় ৩য় ৪র্থ ৫ম ৬ষ্ঠ ৭ম ৮ম ৯ম ১০ম ১১শ ১২শ ১৩শ ১৪শ ১৫শ ১৬শ ১৭শ ১৮শ
  • শ্লোক: 118

    নির্মানমোহা জিতসঙ্গদোষা অধ্যাত্মনিত্যা বিনিবৃত্তকামাঃ ।
    দ্বন্দ্বৈর্বিমুক্তাঃ সুখদুঃখসংজ্ঞৈ-
    র্গচ্ছন্ত্যমূঢ়াঃ পদমব্যয়ং তৎ ॥
    (গীতা ১৫/৫)"
  • অনুবাদঃ- যাঁরা অভিমান ও মোহশূন্য, সঙ্গদোষ রহিত, নিত্য-অনিত্য বিচার-পরায়ণ, কামনা-বাসনা বর্জিত, সুখ-দুঃখ আদি দ্বন্দ্বসমূহ থেকে মুক্ত এবং মোহমুক্ত, তাঁরাই সেই অব্যয় পদ লাভ করেন ।

  • শ্লোক: 119

    ন তদ্ ভাসয়তে সূর্যো ন শশাঙ্কো ন পাবকঃ ।
    যদ্ গত্বা ন নিবর্তন্তে তদ্ধাম পরমং মম ॥
    (গীতা ১৫/৬)"
  • অনুবাদঃ- সূর্য, চন্দ্র, অগ্নি বা বিদ্যুৎ আমার সেই পরম ধামকে আলোকিত করতে পারে না। সেখানে গেলে আর এই জড় জগতে ফিরে আসতে হয় না।

  • শ্লোক: 120

    মামুপেত্য পুনর্জন্ম দুঃখালয়মশাশ্বতম্ ।
    নাপ্নুবন্তি মহাত্মানঃ সংসিদ্ধিং পরমাং গতাঃ ॥
    (গীতা ৮/১৫)"
  • অনুবাদঃ- মহাত্মা, ভক্তিপরায়ণ যোগীগণ আমাকে লাভ করে আর এই দুঃখপূর্ণ নশ্বর সংসারে পুনরায় জন্মগ্রহণ করেন না, কেন না তাঁরা পরম সিদ্ধি প্র্রাপ্ত হয়েছেন।

  • শ্লোক: 121

    আব্রহ্মভুবনাল্লোকাঃ পুনরাবর্তিনোহর্জুন ।
    মামুপেত্য তু কৌন্তেয় পুনর্জন্ম ন বিদ্যতে ॥
    (গীতা ৮/১৬)"
  • অনুবাদঃ- হে অর্জুন ! এই ভুবন থেকে ব্রহ্মলোক পর্যন্ত সমস্ত লোকই পুনরাবর্তনশীল অর্থাৎ পুনর্জন্ম হয় ৷ কিন্তু হে কৌন্তেয় ! আমাকে প্রাপ্ত হলে আর পুনর্জন্ম হয় না।

  • শ্লোক: 122

    পরস্তস্মাত্তু ভাবোহন্যোহব্যক্তোহব্যক্তাৎ সনাতনঃ ।
    যঃ স সর্বেষু ভূতেষু নশ্যৎসু ন বিনশ্যতি ॥
    (গীতা ৮/২০)"
  • অনুবাদঃ- কিন্তু আর একটি অব্যক্ত প্রকৃতি রয়েছে, যা নিত্য এবং ব্যক্ত ও অব্যক্ত বস্তুর অতীত। সমস্ত ভূত বিনষ্ট হলেও তা বিনষ্ট হয় না।

  • শ্লোক: 123

    অব্যক্তোহক্ষর ইত্যুক্তস্তমাহুঃ পরমাং গতিম্ ।
    যং প্রাপ্য ন নিবর্তন্তে তদ্ধাম পরমং মম ॥
    (গীতা ৮/২১)"
  • অনুবাদঃ- সেই অব্যক্তকে অক্ষর বলে, তাই সমস্ত জীবের পরমা গতি। কেউ যখন সেখানে যায়, তখন আর তাঁকে এই জগতে ফিরে আসতে হয় না। সেটিই হচ্ছে আমার পরম ধাম।

  • শ্লোক: 124

    যুক্তাহারবিহারস্য যুক্তচেষ্টস্য কর্মসু ৷
    যুক্তস্বপ্নাববোধস্য যোগো ভবতি দুঃখহা ॥
    (গীতা ৬/১৭)"
  • অনুবাদঃ- যিনি পরিমিত আহার ও বিহার করেন, পরিমিত প্রয়াস করেন, যাঁর নিদ্রা ও জাগরণ নিয়মিত, তিনিই যোগ অভ্যাসের দ্বারা সমস্ত জড়-জাগতিক দুঃখের নিবৃত্তি সাধন করতে পারেন।

  • শ্লোক: 125

    প্রাপ্য পুণ্যকৃতাং লোকানুষিত্বা শাশ্বতীঃ সমাঃ ৷
    শুচীনাং শ্রীমতাং গেহে যোগভ্রষ্টোহভিজায়তে ॥
    (গীতা ৬/৪১)"
  • অনুবাদঃ- যোগভ্রষ্ট ব্যক্তি পুণ্যবানদের প্রাপ্য স্বর্গাদি লোকসমূহে বহুকাল বাস করে সদাচারী ব্রাহ্মণদের গৃহে অথবা শ্রীমান ধনী বণিকদের গৃহে জন্মগ্রহণ করেন।

  • শ্লোক: 126

    যোগিনামপি সর্বেষাং মদ্ গতেনান্তরাত্মনা ৷
    শ্রদ্ধাবান্ ভজতে যো মাং স মে যুক্ততমো মতঃ ॥
    (গীতা ৬/৪৭)"
  • অনুবাদঃ- যিনি শ্রদ্ধা সহকারে মদ্ গত চিত্তে আমার ভজনা করেন, তিনিই সবচেয়ে অন্তরঙ্গভাবে আমার সঙ্গে যুক্ত এবং তিনিই সমস্ত যোগীদের মধ্যে শ্রেষ্ঠ। সেটিই আমার অভিমত৷

  • শ্লোক: 127

    ময্যাসক্তমনাঃ পার্থ যোগং যুঞ্জন্মদাশ্রয়ঃ ।
    অসংশয়ং সমগ্রং মাং যথা জ্ঞাস্যসি তচ্ছৃণু ॥
    (গীতা ৭/১)"
  • অনুবাদঃ- হে পার্থ ! আমাতে আসক্তচিত্ত হয়ে, আমাতে মনোনিবেশ করে যোগাভ্যাস করলে, কিভাবে সমস্ত সংশয় থেকে মুক্ত হয়ে আমাকে জানতে পারবে, তা শ্রবণ কর।

  • শ্লোক: 128

    বিষয়া বিনিবর্তন্তে নিরাহারস্য দেহিনঃ ।
    রসবর্জং রসোহপ্যস্য পরং দৃষ্ট্বা নিবর্ততে ॥
    (গীতা ২/৫৯)"
  • অনুবাদঃ- দেহবিশিষ্ট জীব ইন্দ্রিয় সুখ ভোগ থেকে নিবৃত হতে পারে, কিন্তু তবুও ইন্দ্রিয় সুখ ভোগের আসক্তি থেকে যায়। কিন্তু উচ্চতর স্বাধ আস্বাদন করার ফলে তিনি সেই বিষয়তৃষ্ণা থেকে চিরতরে নিবৃত্ত হন।

  • শ্লোক: 129

    কর্মেন্দ্রিয়াণি সংযম্য য আস্তে মনসা স্মরন্ ।
    ইন্দ্রিয়ার্থান্ বিমুঢ়াত্মা মিথ্যাচারঃ স উচ্যতে ॥
    (গীতা ৩/৬)"
  • অনুবাদঃ- যে ব্যক্তি পঞ্চ-কর্মেন্দ্রিয় সংযত করেও মনে মনে শব্দ, রস আদি ইন্দ্রিয়গুলি স্মরণ করে, সেই মুঢ় অবশ্যই নিজেকে বিভ্রান্ত করে এবং তাকে মিথ্যাচারী ভণ্ড বলা হয়ে থাকে ।

  • শ্লোক: 130

    অনাশ্রিতঃ কর্মফলং কার্যং কর্ম করোতি যঃ ৷
    স সন্ন্যাসী চ যোগী চ নিরগ্নির্ন চাক্রিয়ঃ ॥
    (গীতা ৬/১)"
  • অনুবাদঃ- পরমেশ্বর ভগবান বললেন- যিনি অগ্নিহোত্রাদি কর্ম ত্যাগ করেছেন এবং দৈহিক চেষ্টাশূন্য তিনি সন্ন্যাসী বা যোগী নন৷ যিনি কর্মফলের প্রতি আসক্ত না হয়ে তাঁর কর্তব্য কর্ম করেন তিনিই যথার্থ সন্ন্যাসী বা যোগী।

  • শ্লোক: 131

    সর্বাধর্মান্ পরিত্যজ্য মামেকং শরণং ব্রজ ।
    অহং ত্বাং সর্বপাপেভ্যো মোক্ষয়িষ্যামি মা শুচঃ ॥
    (গীতা ১৮/৬৬)"
  • অনুবাদঃ- সর্ব প্রকার ধর্ম পরিত্যাগ করে কেবল আমার শরণাগত হও। আমি তোমাকে সমস্ত পাপ থেকে মুক্ত করব। তুমি শোক করো না।

  • শ্লোক: 132

    মন্মনা ভব মদ্ভক্তো মদ্ যাজী মাং নমস্কুরু ।
    মামেবৈষ্যসি যুক্ত্বৈবমাত্মানং মৎপরায়ণঃ ॥
    (গীতা ৯/৩৪) "
  • অনুবাদঃ- তোমার মনকে আমার ভাবনায় নিযুক্ত কর, আমার ভক্ত হও, আমাকে প্রণাম কর এবং আমার পূজা কর। এভাবেই মৎপরায়্ণ হয়ে সম্পূর্ণরূপে আমাতে অভিনিবিষ্ট হলে, নিঃসন্দেহে তুমি আমাকে লাভ করবে।

  • শ্লোক: 133

    মন্মনা ভব মদ্ভক্তো মদ্ যাজী মাং নমস্কুরু ।
    মামেবৈষ্যসি সত্যং তে প্রতিজানে প্রিয়োহসি মে ॥
    (গীতা ১৮/৬৫) "
  • অনুবাদঃ- তুমি আমাতে চিত্ত অর্পণ কর, আমার ভক্ত হও, আমার পূজা কর এবং আমাকে নমস্কার কর। তা হলে তুমি আমাকে অবশ্যই প্রাপ্ত হবে ৷এই জন্য আমি তোমার কাছে সত্যই প্রতিজ্ঞা করছি, যেহেতু তুমি আমার অত্যন্ত প্রিয়।

  • শ্লোক: 134

    যেষাং ত্বন্তগতং পাপং জনানাং পুণ্যকর্মণাম্ ।
    তে দ্বন্দ্বমোহনির্মুক্তা ভজন্তে মাং দৃঢ়ব্রতাঃ ॥
    (গীতা ৭/২৮) "
  • অনুবাদঃ- যে সমস্ত পুণ্যবান ব্যক্তির পাপ সম্পূর্ণরূপে দূরীভূত হয়েছে এবং যাঁরা দ্বন্দ্বমোহ থেকে মুক্ত হয়েছেন, তাঁরা দৃঢ় নিষ্ঠার সঙ্গে আমার ভজনা করেন।

  • শ্লোক: 135

    পত্রং পুষ্পং ফলং তোয়ং যো মে ভক্ত্যা প্রযচ্ছতি ।
    তদহং ভক্ত্যুপহৃতমশ্নামি প্রযতাত্মনঃ ॥
    (গীতা ৯/২৬) "
  • অনুবাদঃ- যে বিশুদ্ধচিত্ত নিষ্কাম ভক্ত ভক্তি সহকারে আমাকে এমনকি পত্র, পুষ্প, ফল ও জলও অর্পণ করেন, আমি তাঁর সেই ভক্তিপ্লুত উপহার প্রীতি সহকারে গ্রহণ করি।

  • শ্লোক: 136

    যৎকরোষি যদশ্নাসি যজ্জুহোষি দদাসি যৎ ।
    যত্তপস্যসি কৌন্তেয় তৎকুরুষ্ব মদর্পণম্ ॥
    (গীতা ৯/২৭) "
  • অনুবাদঃ- হে কৌন্তেয় ! তুমি যা অনুষ্ঠান কর, যা আহার কর, যা হোম কর, যা দান কর এবং যে তপস্যা কর, সেই সমস্তই আমাকে সমর্পণ কর।

  • শ্লোক: 137

    বহূনাং জন্মনামন্তে জ্ঞানবান্মাং প্রপদ্যতে।
    বাসুদেবঃ সর্বমিতি স মহাত্মা সুদুর্লভঃ ॥ (গীতা ৭/১৯)"
  • অনুবাদঃ- বহু জন্মের পর তত্ত্বজ্ঞানী ব্যক্তি আমাকে সর্ব কারণের পরম কারণ রূপে জেনে আমার শরণাগত হন৷ সেইরূপ মহাত্মা অত্যন্ত দুর্লভ।

  • শ্লোক: 138

    সর্বভূতানি কৌন্তেয় প্রকৃতিং যান্তি মামিকাম্ ।
    কল্পক্ষয়ে পুনস্তানি কল্পাদৌ বিসৃজাম্যহম্ ॥
    (গীতা ৯/৭)"
  • অনুবাদঃ- হে কৌন্তেয় ! কল্পান্তে সমস্ত জড় সৃষ্ট আমারই প্রকৃতিতে প্রবেশ করে এবং পুনরায় কল্পারম্ভে প্রকৃতির দ্বারা আমি তাদের সৃষ্টি করি।

  • শ্লোক: 139

    মত্তঃ পরতরং নান্যৎ কিঞ্চিদস্তি ধনঞ্জয় ।
    ময়ি সর্বমিদং প্রোতং সূত্রে মণিগণা ইব ॥
    (গীতা ৭/৭)"
  • অনুবাদঃ- হে ধনঞ্জয় ! আমার থেকে শ্রেষ্ঠ আর কেউ নেই। সূত্রে যেমন মণিসমূহ গাঁথা থাকে, তেমনই সমস্ত বিশ্বই আমাতে ওতঃপ্রোতভাবে অবস্থান করে।

  • শ্লোক: 140

    ময়াধ্যক্ষেণ প্রকৃতিঃ সূয়তে সচরাচরম্ ।
    হেতুনানেন কৌন্তেয় জগদ্ বিপরিবর্ততে ॥
    (গীতা ৯/১০)"
  • অনুবাদঃ- হে কৌন্তেয় ! আমার অধ্যক্ষতার দ্বারা জড়া প্রকৃতি এই চরাচর বিশ্ব সৃষ্টি করে। প্রকৃতির নিয়মে এই জগৎ পুনঃ পুনঃ সৃষ্টি হয় এবং ধ্বংস হয়।

  • শ্লোক: 141

    অহং সর্বস্য প্রভবো মত্তঃ সর্বং প্রবর্ততে ।
    ইতি মত্বা ভজন্তে মাং বুধা ভাবসমন্বিতাঃ ॥
    (গীতা ১০/৮)"
  • অনুবাদঃ- আমি জড় ও চেতন জগতের সব কিছুর উৎস। সব কিছু আমার থেকেই প্রবর্তিত হয়। সেই তত্ত্ব অবগত হয়ে পণ্ডিতগণ শুদ্ধ ভক্তি সহকারে আমার ভজনা করেন।

  • (সূত্রঃ- বৈষ্ণব শ্লোকাবলী) এরপর দেখুন= চৈতন্য চরিতামৃত থেকে কিছু গুরুত্বপূর্ণ শ্লোক

  • Add_6

    আপনার পছন্দমত যে কোন ধরনের লেখা পোস্ট করতে পারেন। মানসম্মত লেখা নামসহ সাইটে স্থায়ীভাবে পাবলিশ করা হয়।

    সুনির্বাচিত শ্লোকঃ-

    * * * Anupamasite-এ আপনাকে স্বাগতম। আপনার পছন্দমত যে কোন ধরনের লেখা পোস্ট করতে এখানে ক্লিক করুন।   আপনাদের পোস্ট করা লেখাগুলো এই লিংকে আছে, দেখতে এখানে ক্লিক করুন। ধন্যবাদ * * *

    জ্ঞানই শক্তি ! তাই- আগে নিজে জানুন , শেয়ার করে প্রচারের মাধ্যমে অন্যকেও জানতে সাহায্য করুন।