সনাতন ধর্মের সুনির্বাচিত বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ কিছু শ্লোকঃ-

জ্ঞান-ই শক্তি ! নিজের ধর্ম সম্পর্কে আগে ভালোভাবে জানুন এবং অন্যকেও জানতে উৎসাহিত করুন।

আপনার পছন্দমত যে কোন ধরনের লেখা পোস্ট করতে পারেন। মানসম্মত লেখা নামসহ সাইটে স্থায়ীভাবে পাবলিশ করা হয়।

শ্রীমদ্ভগবত গীতার কিছু গুরুত্বপূর্ণ শ্লোক

শ্রীমদ্ভগবদগীতার অধ্যায়গুলো

  • ১ম ২য় ৩য় ৪র্থ ৫ম ৬ষ্ঠ ৭ম ৮ম ৯ম ১০ম ১১শ ১২শ ১৩শ ১৪শ ১৫শ ১৬শ ১৭শ ১৮শ
  • শ্লোক: 48

    বহূনাং জন্মনামন্তে জ্ঞানবান্মাং প্রপদ্যতে।
    বাসুদেবঃ সর্বমিতি স মহাত্মা সুদুর্লভঃ ॥ (গীতা ৭/১৯)"
  • অনুবাদঃ- বহু জন্মের পর তত্ত্বজ্ঞানী ব্যক্তি আমাকে সর্ব কারণের পরম কারণ রূপে জেনে আমার শরণাগত হন৷ সেইরূপ মহাত্মা অত্যন্ত দুর্লভ।

  • শ্লোক: 49

    সর্বভূতানি কৌন্তেয় প্রকৃতিং যান্তি মামিকাম্ ।
    কল্পক্ষয়ে পুনস্তানি কল্পাদৌ বিসৃজাম্যহম্ ॥
    (গীতা ৯/৭)"
  • অনুবাদঃ- হে কৌন্তেয় ! কল্পান্তে সমস্ত জড় সৃষ্ট আমারই প্রকৃতিতে প্রবেশ করে এবং পুনরায় কল্পারম্ভে প্রকৃতির দ্বারা আমি তাদের সৃষ্টি করি।

  • শ্লোক: 50

    মত্তঃ পরতরং নান্যৎ কিঞ্চিদস্তি ধনঞ্জয় ।
    ময়ি সর্বমিদং প্রোতং সূত্রে মণিগণা ইব ॥
    (গীতা ৭/৭)"
  • অনুবাদঃ- হে ধনঞ্জয় ! আমার থেকে শ্রেষ্ঠ আর কেউ নেই। সূত্রে যেমন মণিসমূহ গাঁথা থাকে, তেমনই সমস্ত বিশ্বই আমাতে ওতঃপ্রোতভাবে অবস্থান করে।

  • শ্লোক: 51

    ময়াধ্যক্ষেণ প্রকৃতিঃ সূয়তে সচরাচরম্ ।
    হেতুনানেন কৌন্তেয় জগদ্ বিপরিবর্ততে ॥
    (গীতা ৯/১০)"
  • অনুবাদঃ- হে কৌন্তেয় ! আমার অধ্যক্ষতার দ্বারা জড়া প্রকৃতি এই চরাচর বিশ্ব সৃষ্টি করে। প্রকৃতির নিয়মে এই জগৎ পুনঃ পুনঃ সৃষ্টি হয় এবং ধ্বংস হয়।

  • শ্লোক: 52

    অহং সর্বস্য প্রভবো মত্তঃ সর্বং প্রবর্ততে ।
    ইতি মত্বা ভজন্তে মাং বুধা ভাবসমন্বিতাঃ ॥
    (গীতা ১০/৮)"
  • অনুবাদঃ- আমি জড় ও চেতন জগতের সব কিছুর উৎস। সব কিছু আমার থেকেই প্রবর্তিত হয়। সেই তত্ত্ব অবগত হয়ে পণ্ডিতগণ শুদ্ধ ভক্তি সহকারে আমার ভজনা করেন।

  • শ্লোক: 53

    পরং ব্রহ্ম পরং ধাম পবিত্রং পরমং ভবান্ ।
    পুরুষং শাশ্বতং দিব্যমাদিদেবমজং বিভুম্ ॥
    আহুস্তামৃষয়ঃ সর্বে দেবর্ষির্নারদস্তথা ।
    অসিতো দেবলো ব্যাসঃ স্বয়ং চৈব ব্রবীষি মে ॥
    (গীতা ১০/১২-১৩)"
  • অনুবাদঃ- অর্জুন বললেন- তুমি পরম ব্রহ্ম, পরম ধাম, পরম পবিত্র ও পরম পুরুষ৷ তুমি নিত্য, দিব্য, আদি দেব, অজ ও বিভু। দেবর্ষি নারদ, অসিত, দেবল, ব্যাস আদি ঋষিরা তোমাকে সেভাবেই বর্ণনা করেছেন এবং তুমি নিজেও এখন আমাকে তা বলছ।

  • শ্লোক: 54

    যদ্ যদ্বিভূতীমৎ সত্ত্বং শ্রীমদূর্জিতমেব বা ।
    তত্তদেবাবগচ্ছ ত্বং মম তেজোহংশসম্ভবম্ ॥
    (গীতা ১০-৪১)"
  • অনুবাদঃ- ঐশ্বর্য্যযুক্ত, শ্রী-সম্পন্ন ও বল-প্রভাবাদির আধিক্যযুক্ত যত বস্তু আছে, সে সবই আমার তেজাংশসম্ভূত বলে জানবে।

  • শ্লোক: 55

    মম যোনির্মহদ্ ব্রহ্ম তস্মিন্ গর্ভং দধাম্যহম্।
    সম্ভবঃ সর্বভূতানাং ততো ভবতি ভারত ॥
    (গীতা ১৪/৩)"
  • অনুবাদঃ- হে ভারত ! প্রকৃতি সংজ্ঞক ব্রহ্ম আমার যোনিস্বরূপ এবং সেই ব্রহ্মে আমি গর্ভাধান করি, যার ফলে সমস্ত জীবের জন্ম হয়।

  • শ্লোক: 56

    সর্বযোনিষু কৌন্তেয় মূর্তয়ঃ সম্ভবন্তি যাঃ ।
    তাসাং ব্রহ্ম মহদ্ যোনিরহং বীজপ্রদঃ পিতা ॥
    (গীতা ১৪/৪)"
  • অনুবাদঃ- হে কৌন্তেয় ! সকল যোনিতে যে সমস্ত মূর্তি প্রকাশিত হয়, ব্রহ্মরূপী যোনিই তাদের জননী-স্বরূপা এবং আমি তাদের বীজ প্রদানকারী পিতা।

  • শ্লোক: 57

    ভূমিরাপোহনলো বায়ুঃ খং মনো বুদ্ধিরেব চ ।
    অহঙ্কার ইতীয়ং মে ভিন্না প্রকৃতিরষ্টধা ॥
    (গীতা ৭/৪)"
  • অনুবাদঃ- ভূমি, জল, বায়ু, অগ্নি, আকাশ, মন, বুদ্ধি ও অহঙ্কার- এই আট প্রকারে আমার ভিন্না জড়া প্রকৃতি বিভক্ত।

  • শ্লোক: 58

    যদা যদা হি ধর্মস্য গ্লানির্ভবতি ভারত ।
    অভ্যুত্থানমধর্মস্য তদাত্মানং সৃজাম্যহম্ ।।
    (গীতা ৪/৭)"
  • অনুবাদঃ- হে ভারত ! যখনই ধর্মের অধঃপতন হয় এবং অধর্মের অভ্যূত্থান হয়, তখন আমি নিজেকে প্রকাশ করে অবতীর্ণ হই।

  • শ্লোক: 59

    পরিত্রাণায় সাধূনাং বিনাশায় চ দুষ্কৃতাম্।
    ধর্মসংস্থাপনার্থায় সম্ভবামি যুগে যুগে।।
    (গীতা ৪/৮)"
  • অনুবাদঃ- সাধুদের পরিত্রাণ করার জন্য, দুষ্কৃতকারীদের বিনাশ করার জন্য এবং ধর্ম সংস্থাপনের জন্য আমি যুগে যুগে অবতীর্ণ হই।

  • শ্লোক: 60

    যস্মাৎ ক্ষরমতীতোহহমক্ষরাদপি চোত্তমঃ ।
    অতোহস্মি লোকে বেদে চ প্রথিতঃ পুরুষোত্তমঃ ॥
    (গীতা ১৫/১৮)"
  • অনুবাদঃ- যেহেতু আমি ক্ষরের অতীত এবং অক্ষর থেকেও উত্তম, সেই হেতু জগতে ও বেদে আমি পুরুষোত্তম নামে বিখ্যাত।

  • শ্লোক: 61

    ময়া ততমিদং সর্বং জগদব্যক্তমূর্তিনা ।
    মৎস্থানি সর্বভূতানি ন চাহং তেষ্ববস্থিতঃ ॥
    (গীতা ৯/৪)"
  • অনুবাদঃ- অব্যক্তরূপে আমি সমস্ত জগতে ব্যাপ্ত আছি। সমস্ত জীব আমাতেই অবস্থিত, কিন্তু আমি তাতে অবস্থিত নই।

  • শ্লোক: 62

    বেদাহং সমতীতানি বর্তমানানি চার্জুন ।
    ভবিষ্যাণি চ ভূতানি মাং তু বেদ ন কশ্চন ॥
    (গীতা ৭/২৬)"
  • অনুবাদঃ- হে অর্জুন ! পরমেশ্বর ভগবানরূপে আমি অতীত, বর্তমান ও ভবিষ্যৎ সম্বন্ধে সম্পূর্ণরূপে অবগত। আমি সমস্ত জীব সম্বন্ধে জানি, কিন্তু আমাকে কেউ জানে না।

  • শ্লোক: 63

    ন মে বিদুঃ সুরগণাঃ প্রভবং ন মহর্ষয়ঃ ।
    অহমাদির্হি দেবানাং মহর্ষীণাং চ সর্বশঃ ॥
    (গীতা ১০/২)"
  • অনুবাদঃ- দেবতারা বা মহর্ষিরাও আমার উৎপত্তি অবগত হতে পারে না, কেন না, সর্বতোভাবে আমিই দেবতা ও মহর্ষিদের আদি কারণ।

  • শ্লোক: 64

    ন মাং কর্মাণি লিম্পন্তি ন মে কর্মফলে স্পৃহা ।
    ইতি মাং যোহভিজানাতি কর্মভির্ন স বধ্যতে ।।
    (গীতা- ৪/১৪)"
  • অনুবাদঃ- কোন কর্মই আমাকে প্রভাবিত করতে পারে না এবং আমিও কোন কর্মফলের আকাঙ্ক্ষা করি না। আমার এই তত্ত্ব যিনি জানেন, তিনিও কখনও সকাম কর্মের বন্ধনে আবদ্ধ হন না।

  • শ্লোক: 65

    যো মামেবমসংমূঢ় জানাতি পুরুষোত্তমম্ ।
    স সর্ববিদ্ ভজতি মাং সর্বভাবেন ভারত ॥
    (গীতা- ১৫/১৯)"
  • অনুবাদঃ- হে ভারত ! যিনি নিঃসন্দেহে আমাকে পুরুষোত্তম বলে জানেন, তিনি সর্বজ্ঞ এবং তিনি সর্বতোভাবে আমাকে ভজনা করেন।

  • শ্লোক: 66

    বহূনি মে ব্যতীতানি জন্মানি তব চার্জুন ।
    তান্যহং বেদ সর্বাণি ন ত্বং বেত্থ পরন্তপ ।।
    (গীতা- ৪/৫)"
  • অনুবাদঃ- হে পরন্তপ অর্জুন ! আমার ও তোমার বহু জন্ম অতীত হয়েছে ৷ আমি সেই সমস্ত জন্মের কথা স্মরণ করতে পারি, কিন্তু তুমি পার না।

  • শ্লোক: 67

    অজোহপি সন্নব্যয়াত্মা ভূতানামীশ্বরোহপি সন্ ।
    প্রকৃতিং স্বামধিষ্ঠায় সম্ভবাম্যাত্মমায়য়া ।।
    (গীতা- ৪/৬)"
  • অনুবাদঃ- যদিও আমি জন্মরহিত এবং আমার চিন্ময় দেহ অব্যয় এবং যদিও আমি সর্বভূতের ঈশ্বর, তবুও আমার অন্তরঙ্গা শক্তিকে আশ্রয় করে আমি আমার আদি চিন্ময় রূপে যুগে যুগে অবতীর্ণ হই।

  • শ্লোক: 68

    রসোহহমপ্সু কৌন্তেয় প্রভাস্মি শশিসূর্যয়োঃ ।
    প্রণবঃ সর্ববেদেষু শব্দঃ খে পৌরুষং নৃষু ॥
    (গীতা- ৭/৮)"
  • অনুবাদঃ- হে কৌন্তেয় ! আমিই জলের রস, চন্দ্র ও সূর্যের প্রভা, সর্ব বেদের প্রণব, আকাশের শব্দ এবং মানুষের পৌরুষ।

  • শ্লোক: 69

    পূণ্যো গন্ধঃ পৃথিব্যাং চ তেজশ্চাস্মি বিভাবসৌ ।
    জীবনং সর্বভূতেষু তপশ্চাস্মি তপস্বিষু ॥
    (গীতা- ৭/৯)"
  • অনুবাদঃ- আমি পৃথিবীর পবিত্র গন্ধ, অগ্নির তেজ, সর্বভূতের জীবন এবং তপস্বীদের তপ।

  • শ্লোক: 70

    গামাবিশ্য চ ভূতানি ধারয়াম্যহমোজসা ।
    পুষ্ণামি চৌষধীঃ সর্বাঃ সোমো ভূত্বা রসাত্মকঃ ॥
    (গীতা- ১৫/১৩)"
  • অনুবাদঃ- আমি পৃথিবীতে প্রবিষ্ট হয়ে আমার শক্তির দ্বারা সমস্ত জীবদের ধারণ করি এবং রসাত্মক চন্দ্ররূপে ধান, যব আদি ঔষধি পুষ্ট করছি।

  • শ্লোক: 71

    যে যথা মাং প্রপদ্যন্তে তাংস্তথৈব ভজাম্যহম্।
    মম বর্ত্মানুবর্তন্তে মনুষ্যাঃ পার্থ সর্বশঃ।।
    (গীতা ৪/১১)"
  • অনুবাদঃ- যারা যেভাবে আমার প্রতি আত্মসমর্পণ করে, আমি তাদেরকে সেভাবেই পুরস্কৃত করি। হে পার্থ ! সকলেই সর্বতোভাবে আমার পথ অনুসরণ করে।

  • শ্লোক: 72

    সমোহহং সর্বভূতেষু ন মে দ্বেষ্যোহস্তি ন প্রিয়ঃ ।
    যে ভজন্তি তু মাং ভক্ত্যা ময়ি তে তেষু চাপ্যহম্ ॥
    (গীতা ৯/২৯)"
  • অনুবাদঃ- আমি সকলের প্রতি সমভাবাপন্ন। কেউই আমার বিদ্বেষ ভাবাপন্ন নয় এবং প্রিয়ও নয়। কিন্তু যাঁরা ভক্তিপূর্বক আমাকে ভজনা করেন, তাঁরা আমাতে অবস্থান করেন এবং আমিও তাদের মধ্যে বাস করি।

  • শ্রীমদ্ভাগবত গীতার আরও কিছু গুরুত্বপূর্ণ শ্লোক

    শ্রীমদ্ভগবদগীতার অধ্যায়গুলো

    ১ম ২য় ৩য় ৪র্থ ৫ম ৬ষ্ঠ ৭ম ৮ম ৯ম ১০ম ১১শ ১২শ ১৩শ ১৪শ ১৫শ ১৬শ ১৭শ ১৮শ
  • Add_6

    আপনার পছন্দমত যে কোন ধরনের লেখা পোস্ট করতে পারেন। মানসম্মত লেখা নামসহ সাইটে স্থায়ীভাবে পাবলিশ করা হয়।

    সুনির্বাচিত শ্লোকঃ-

    * * * Anupamasite-এ আপনাকে স্বাগতম। আপনার পছন্দমত যে কোন ধরনের লেখা পোস্ট করতে এখানে ক্লিক করুন।   আপনাদের পোস্ট করা লেখাগুলো এই লিংকে আছে, দেখতে এখানে ক্লিক করুন। ধন্যবাদ * * *

    জ্ঞানই শক্তি ! তাই- আগে নিজে জানুন , শেয়ার করে প্রচারের মাধ্যমে অন্যকেও জানতে সাহায্য করুন।