সনাতন ধর্মের সুনির্বাচিত বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ কিছু শ্লোকঃ-

জ্ঞান-ই শক্তি ! নিজের ধর্ম সম্পর্কে আগে ভালোভাবে জানুন এবং অন্যকেও জানতে উৎসাহিত করুন।

আপনার পছন্দমত যে কোন ধরনের লেখা পোস্ট করতে পারেন। মানসম্মত লেখা নামসহ সাইটে স্থায়ীভাবে পাবলিশ করা হয়।

বিবিধ গুরুত্বপূর্ণ আরও কিছু শ্লোক

  • শ্লোক: 19

    দ্বাপরীয়ৈর্জনৈর্বিষ্ণুঃ পঞ্চরাত্রৈস্ত্ত কেবলৈঃ ।
    কলৌ তু নামমাত্রেণ পূজ্যতে ভগবান্ হরিঃ ।।
    (নারায়ণ-সংহিতা)
  • অনুবাদঃ- দ্বাপরযুগে বৈষ্ণব তথা কৃষ্ণভক্তেরা পাঞ্চরাত্রিক বিধি অনুসারে ভক্তিমূলক সেবা সম্পাদন করতেন। এই কলিযুগে শুধুমাত্র হরিনাম জপকীর্তনের দ্বারাই পরমেশ্বর শ্রীহরি পূজিত হন।

  • শ্লোক: 20

    বিদ্যা দদাতি বিনয়ম্ ।
    (হিতোপদেশ)
  • অনুবাদঃ- বিদ্যা বিনয় দান করে।

  • শ্লোক: 21

    ওঁ জন্মাদাস্য যতঃ
    (বেদান্তসূত্র ১/১/২)
  • অনুবাদঃ- সেই ব্রহ্ম হচ্ছেন তিনি, যাঁর থেকে প্রকাশিত ব্রহ্মাণ্ডসমূহের সৃষ্টি, স্থিতি ও প্রলয় সাধিত হয়।

  • শ্লোক: 22

    ভাবগ্রাহী জনার্দনঃ
    (চৈতন্য-ভাগবত আদি ১১/১০৮)
  • অনুবাদঃ- ভগবান জনার্দন শুধু ভক্তের ভাবটুকুই গ্রহণ করেন।

  • শ্লোক: 23

    শরীর অবিদ্যা-জাল, জড়েন্দ্রিয় তাহে কাল,
    জীবে ফেলে বিষয়-সাগরে।
    তা'র মধ্যে জিহ্বা অতি, লোভময় সুদুর্মতি,
    তা'কে জেতা কঠিন সংসারে ।।
    (ভক্তিবিনোদ ঠাকুর, প্রসাদ-সেবায় ১)
  • অনুবাদঃ- শরীর একটি অবিদ্যার জাল, ইন্দ্রিয়গুলি যেন কালশত্রু, কেন না সেগুলি জীবকে বিষয় ভোগের সাগরে নিক্ষেপ করে। ওই সমস্ত ইন্দ্রিয়ের মধ্যে জিহ্বা হচ্ছে সবচেয়ে লোলুপ, অসংযত ও দুর্মতিবিশিষ্ট। এই সংসারে জিহ্বাকে জয় করা খুবই কঠিন।

  • শ্লোক: 24

    কৃষ্ণ-বহির্মুখ হঞা ভোগ-বাঞ্ছা করে।
    নিকটস্থ মায়া তারে জাপটিয়া ধরে।।
    (জগদানন্দ পণ্ডিত, প্রেমবিবর্ত)
  • অনুবাদঃ- যেই মুহূর্তে কেউ কৃষ্ণের প্রতি বিদ্বেষ ভাবাপন্ন হয়ে ইন্দ্রিয়সুখ ভোগের বাসনা করে, সেই মুহুর্তেই ভগবানের মায়াশক্তি তাকে জড় বন্ধনে আবদ্ধ করে।

  • শ্লোক: 25

    বিষয় ছাড়িয়া কবে শুদ্ধ হবে মন ।
    কবে হাম হেরব শ্রীবৃন্দাবন ।।
    (নরোত্তম দাস ঠাকুর, গৌরাঙ্গ বলিতে)
  • অনুবাদঃ- সেদিন আমার কবে হবে যখন আমার মন বিষয় বাসনা থেকে মুক্ত হয়ে শুদ্ধ হবে, আমি শ্রীবৃন্দাবন ধামে শ্রীশ্রীরাধা-কৃষ্ণের মাধুর্যপ্রেম উপলব্ধি করতে সক্ষম হব এবং আমার পারমার্থিক জীবন পূর্ণরূপে সাফল্যমণ্ডিত হবে।

  • শ্লোক: 26

    'কাম' কৃষ্ণ-কর্মার্পণে, 'ক্রোধ' ভক্তদ্বেষি-জনে,
    'লোভ' ইষ্টলাভ বিনে, 'মদ' কৃষ্ণগুণগানে,
    নিযুক্ত করিব যথা তথা ।।
    (নরোত্তম দাস ঠাকুর, অন্য অভিলাষ ছাড়ি)
  • অনুবাদঃ- আমার কর্মফল কৃষ্ণকে নিবেদন করার মাধ্যমে আমি কামকে নিযুক্ত করব। ভক্তবিদ্বেষীদের প্রতি আমার ক্রোধ প্রদর্শন করব। সাধুসঙ্গে হরিকথা শ্রবণ করার জন্য আমি আমার লোভকে নিযুক্ত করব। এই মুহূর্তে আমি আমার আরাধ্য ভগবানক লাভ করতে পারলাম না- এই চিন্তায় আমি মোহগ্রস্ত হব । শ্রীকৃষ্ণের গুণকীর্তনের মধ্যেই আমার মত্ততা প্রকাশিত হবে। এভাবেই এদের আমি কৃষ্ণসেবায় নিযুক্ত করব।

  • শ্লোক: 27

    পিশাচী পাইলে যেন মতিচ্ছন্ন হয়।
    মায়াগ্রস্ত জীবের হয় সে-ভাব উদয় ।।
  • অনুবাদঃ- জীব যখন মায়াগ্রস্ত হয়, তখন তার অবস্থা ঠিক যেন পিশাচীর আক্রমণগ্রস্ত একজন ব্যক্তির মতো ।

  • শ্লোক: 28

    জীব জাগ, জীব জাগ, গোরাচাঁদ বলে ।
    কত নিদ্রা যাও মায়া-পিশাচীর কোলে ।।
    (ভক্তিবিনোদ ঠাকুর, অরুণোদয় কীর্তন ২)
  • অনুবাদঃ- গৌরাঙ্গ মহাপ্রভু ডেকে বলছেন। "হে ঘুমন্ত জীবসকল! উঠ, জেগে উঠ। মায়া পিশাচীর কোলে অনেক ঘুমিয়েছ। আর কত ঘুমাবে?"

  • শ্লোক: 29

    মানস, দেহ, গেহ, যো কিছু মোর ।
    অর্পিলুঁ তুয়া পদে, নন্দকিশোর ।।
    (ভক্তিবিনোদ ঠাকুর, শরণাগতি)
  • অনুবাদঃ- আমার মন, দেহ, গৃহ, যা কিছু রয়েছে, সবই আমি তোমার চরণে অর্পণ করলাম, হে নন্দকিশোর !

  • শ্লোক: 30

    আরাধিতো যদি হরিস্তপসা ততঃ কিম্।
    নারাধিতো যদি হরিস্তপসা ততঃ কিম্।।
    (নারদ-পঞ্চরাত্র)
  • অনুবাদঃ- যদি শ্রীহরির আরাধনা করা হয়, তা হলে কঠোর তপস্যার কি প্রয়োজন, কেন না তপস্যার লক্ষ্যবস্তু তো লাভ হয়েই গেছে। আর সমস্ত রকমের তপস্যা করেও যদি শ্রীকৃষ্ণকে লাভ করা না যায়, তা হলে তপস্যার কোনও মূল্য নেই, কেন না শ্রীকৃষ্ণ ছাড়া সকল তপস্যাই বৃথা শ্রম মাত্র।

  • শ্লোক: 31

    অন্তর্বহির্যদি হরিস্তপসা ততঃ কিম্ ।
    নান্তর্বহির্যদি হরিস্তপসা ততঃ কিম্ ।।
    (নারদ-পঞ্চরাত্র)
  • অনুবাদঃ- শ্রীহরি যে সর্বব্যাপক, তিনি যে অন্তরে ও বাইরে সর্বত্রই আছেন, এই উপলব্ধি যার হয়েছে, তপস্যায় তার কি প্রয়োজন। আর শ্রীহরি যে সর্বব্যাপক, এই উপলব্ধিই যদি না হল, তা হলে সব তপস্যাই বৃথা ।

  • শ্লোক: 32

    আনুকূল্যস্য সঙ্কল্পঃ প্রাতিকূল্যস্য বর্জনম্ ।
    রক্ষিষ্যতীতি বিশ্বাসো গোপ্তৃত্বে বরণং তথা ।
    আত্মনিক্ষেপকার্পণ্যে ষড়বিধা শরণাগতিঃ ।।
    (হরিভক্তি-বিলাস ১১/৪১৭)
  • অনুবাদঃ- শরণাগতির ছয় প্রকার লক্ষণ- কৃষ্ণভক্তির অনুকূল যা গ্রহণ করা, কৃষ্ণভক্তির প্রতিকূল বিষয় বর্জন করা, কৃষ্ণ সব সময়ই রক্ষা করবেন এই বিশ্বাস, শ্রীকৃষ্ণকে প্রভুরূপে গ্রহণ করা, সর্বতোভাবে শরণাগত হওয়া এবং দৈন্য ।

  • শ্লোক: 33

    হরিসেবায় যাহা হয় অনুকূল ।
    বিষয় বলিয়া তাহার ত্যাগে হয় ভুল ।।
    (ভক্তিসিদ্ধান্ত সরস্বতী)
  • অনুবাদঃ- হরিসেবার অনুকূল বস্তুকে যিনি জড় বিষয় জ্ঞানে পরিত্যাগ করেন, তিনি মহাভুল করছেন ।

  • শ্লোক: 34

    গোলোকের প্রেমধন, হরিনাম সংকীর্তন,
    রতি না জন্মিলে কেনে তায় ।
    সংসার-বিষানলে দিবানিশি হিয়ে জ্বলে,
    জুড়াইতে না কৈনু উপায় ।।

    (নরোত্তম দাস ঠাকুর-ইষ্টদেবে বিজ্ঞপ্তি-২, প্রার্থনা থেকে)
  • অনুবাদঃ- হরিনাম সংকীর্তনরূপে ভগবৎপ্রেম গোলোক বৃন্দাবন থেকে এই জগতে অবতরণ করেছে। কেন আমার তাতে রতি হল না? দিন ও রাত ধরে সংসার বিষের অনলে আমার হৃদয় জ্বলছে। কিন্তু তবুও তাকে প্রশমিত করার কোন উপায় আমি গ্রহণ করছি না।

  • শ্লোক: 35

    যদি বৈষ্ণব-অপরাধ উঠে হাতী মাতা ।
    উপাড়ে বা ছিণ্ডে, তার শুখি যায় পাতা ।।
  • অনুবাদঃ- ভগবদ্ভক্ত যদি এই জড় জগতে ভক্তিলতার সেবা করার সময় কোন বৈষ্ণবের চরণে অপরাধ করেন, তা হলে ভক্তিলতার পাতা শুকিয়ে যায়। এই প্রকার বৈষ্ণব অপরাধকে মত্ত হস্তীর আচরণের সঙ্গে তুলনা করা হয়েছে।

  • (সূত্রঃ- বৈষ্ণব শ্লোকাবলী) = বিবিধ গুরুত্বপূর্ণ আরও কিছু শ্লোক

  • Add_6

    আপনার পছন্দমত যে কোন ধরনের লেখা পোস্ট করতে পারেন। মানসম্মত লেখা নামসহ সাইটে স্থায়ীভাবে পাবলিশ করা হয়।

    সুনির্বাচিত শ্লোকঃ-

    * * * Anupamasite-এ আপনাকে স্বাগতম। আপনার পছন্দমত যে কোন ধরনের লেখা পোস্ট করতে এখানে ক্লিক করুন।   আপনাদের পোস্ট করা লেখাগুলো এই লিংকে আছে, দেখতে এখানে ক্লিক করুন। ধন্যবাদ * * *

    জ্ঞানই শক্তি ! তাই- আগে নিজে জানুন , শেয়ার করে প্রচারের মাধ্যমে অন্যকেও জানতে সাহায্য করুন।

    Say something

    Please enter name.
    Please enter valid email adress.
    Please enter your comment.