সনাতন ধর্মের সুনির্বাচিত বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ কিছু শ্লোকঃ-

জ্ঞান-ই শক্তি ! নিজের ধর্ম সম্পর্কে আগে ভালোভাবে জানুন এবং অন্যকেও জানতে উৎসাহিত করুন।

আপনার পছন্দমত যে কোন ধরনের লেখা পোস্ট করতে পারেন। মানসম্মত লেখা নামসহ সাইটে স্থায়ীভাবে পাবলিশ করা হয়।

শ্রীমদ্ভগবত গীতার কিছু গুরুত্বপূর্ণ শ্লোক

শ্রীমদ্ভগবদগীতার অধ্যায়গুলো

  • ১ম ২য় ৩য় ৪র্থ ৫ম ৬ষ্ঠ ৭ম ৮ম ৯ম ১০ম ১১শ ১২শ ১৩শ ১৪শ ১৫শ ১৬শ ১৭শ ১৮শ
  • শ্লোক: 73

    বহূনাং জন্মনামন্তে জ্ঞানবান্মাং প্রপদ্যতে।
    বাসুদেবঃ সর্বমিতি স মহাত্মা সুদুর্লভঃ ॥ (গীতা ৭/১৯)"
  • অনুবাদঃ- বহু জন্মের পর তত্ত্বজ্ঞানী ব্যক্তি আমাকে সর্ব কারণের পরম কারণ রূপে জেনে আমার শরণাগত হন৷ সেইরূপ মহাত্মা অত্যন্ত দুর্লভ।

  • শ্লোক: 74

    অপি চেৎ সুদুরাচারো ভজতে মামনন্যভাক্ ।
    সাধুরেব স মন্তব্যঃ সম্যগ্ ব্যবসিতো হি সঃ ॥
    (গীতা ৯/৩০)"
  • অনুবাদঃ- অতি দুরাচারী ব্যক্তিও যদি অনন্য ভক্তি সহকারে আমাকে ভজনা করেন, তাকে সাধু বলে মনে করবে, কারণ তাঁর দৃঢ় সংকল্পে তিনি যথার্থ মার্গে অবস্থিত।

  • শ্লোক: 75

    ক্ষিপ্রং ভবতি ধর্মাত্মা শশ্বচ্ছান্তিং নিগচ্ছতি ।
    কৌন্তেয় প্রতিজানীহি ন মে ভক্তঃ প্রণশ্যতি ॥
    (গীতা ৯/৩১)"
  • অনুবাদঃ- তিনি শীঘ্রই ধর্মাত্মায় পরিণত হন এবং নিত্য শান্তি লাভ করেন। হে কৌন্তেয় ! তুমি দীপ্ত কণ্ঠে ঘোষণা কর যে, আমার ভক্ত কখনও বিনষ্ট হন না।

  • শ্লোক: 76

    তেষাং সততযুক্তানাং ভজতাং প্রীতিপূর্বকম্ ।
    দদামি বুদ্ধিযোগং তং যেন মামুপযান্তি তে ॥
    (গীতা ১০/১০)"
  • অনুবাদঃ- যাঁরা ভক্তিযোগ দ্বারা প্রীতিপূর্বক আমার ভজনা করে নিত্যযুক্ত, আমি তাঁদের শুদ্ধ জ্ঞানজনিত বুদ্ধিযোগ দান করি, যার দ্বারা তাঁরা আমার কাছে ফিরে আসতে পারেন।

  • শ্লোক: 77

    তেষামেবানুকম্পার্থমহমজ্ঞানজং তমঃ ।
    নাশয়াম্যাত্মভাবস্থো জ্ঞানদীপেন ভাস্বতা ॥
    (গীতা ১০/১১)"
  • অনুবাদঃ- তাঁদের প্রতি অনুগ্রহ করার জন্য আমি তাঁদের হৃদয়ে অবস্থিত হয়ে, উজ্জ্বল জ্ঞান-প্রদীপের দ্বারা অজ্ঞান-জনিত অন্ধকার নাশ করি।

  • শ্লোক: 78

    তেষামহং সমুদ্ধর্তা মৃত্যুসংসারসাগরাৎ ।
    ভমামি ন চিরাৎ পার্থ ময্যাবেশিতচেতসাম্ ॥
    (গীতা ১২/৭)"
  • অনুবাদঃ- হে পার্থ ! আমাতে আবিষ্টচিত্ত সেই সমস্ত ভক্তদের আমি মৃত্যুময় সংসার-সাগর থেকে অচিরেই উদ্ধার করি।

  • শ্লোক: 79

    তে তং ভুক্ত্বা স্বর্গলোকং বিশালং
    ক্ষীণে পুণ্যে মর্ত্যলোকং বিশন্তি ।
    এবং ত্রয়ীধর্মমনুপ্রপন্না
    গতাগতং কামকামা লভন্তে ॥
    (গীতা ৯/২১)"
  • অনুবাদঃ- তাঁরা সেই বিপুল স্বর্গসুখ উপভোগ করে পুণ্য ক্ষয় হলে মর্তলোকে ফিরে আসেন। এভাবেই ত্রিবেদোক্ত ধর্মের অনুষ্ঠান করে ইন্দ্রিয়সুখ ভোগের আকাঙ্ক্ষী মানুষেরা সংসারে কেবলমাত্র বারংবার জন্ম-মৃত্যু লাভ করে থাকেন।

  • শ্লোক: 80

    পুরুষঃ প্রকৃতিস্থো হি ভুঙ্ ক্তে প্রকৃতিজান্ গুণান্ ।
    কারণং গুণসঙ্গোহস্য সদসদ্ যোনিজন্মসু ॥
    (গীতা ১৩/২২)"
  • অনুবাদঃ- জড়া প্রকৃ্তিতে অবস্তিত হয়ে জীব প্রকৃতিজাত গুণসমূহ ভোগ করে। প্রকৃতির গুণের সঙ্গবসতই তার সৎ ও অসৎ যোনিসমূহে জন্ম হয়।

  • শ্লোক: 81

    ত্রিভির্গুণময়ৈর্ভাবৈরেভিঃ সর্বমিদং জগৎ ।
    মোহিতং নাভিজানাতি মামেভ্যঃ পরমব্যয়ম্ ॥
    (গীতা ৭/১৩)"
  • অনুবাদঃ- (সত্ত্ব, রজ ও তম) তিনটি গুণের দ্বারা মোহিত হওয়ার ফলে সমগ্র জগৎ এই সমস্ত গুণের অতীত ও অব্যয় আমাকে জানতে পারে না।

  • শ্লোক: 82

    প্রকৃতেঃ ক্রিয়মাণানি গুণৈঃ কর্মাণি সর্বশঃ ।
    অহঙ্কারবিমূঢ়াত্মা কর্তাহমিতি মন্যতে ॥
    (গীতা ৩/২৭)"
  • অনুবাদঃ- অন্ধকারে মোহাচ্ছন্ন জীব জড়া প্রকৃতির ত্রিগুণ দ্বারা ক্রিয়মাণ সমস্ত কার্যকে স্বীয় কার্য বলে মনে করে 'আমি কর্তা'- এই রকম অভিমান করে।

  • শ্লোক: 83

    দৈবী হ্যেষা গুণময়ী মম মায়া দুরত্যয়া ।
    মামেব যে প্রপদ্যন্তে মায়ামেতাং তরন্তি তে ॥
    (গীতা ৭/১৪)"
  • অনুবাদঃ- আমার এই দৈবী মায়া ত্রিগুণাত্মিকা এবং তা দুরতিক্রমণীয়া। কিন্তু যাঁরা আমাতে প্রপত্তি করেন, তাঁরাই এই মায়া উত্তীর্ণ হতে পারেন।

  • শ্লোক: 84

    ভোগৈশ্বর্যপ্রসক্তানাং তয়াপহৃতচেতসাম্ ।
    ব্যবসায়াত্মিকা বুদ্ধিঃ সমাধৌ ন বিধীয়তে ।।
    (গীতা ২/৪৪)
  • অনুবাদঃ- যারা ভোগ ও ঐশ্বর্যসুখে একান্ত আসক্ত, সেই সমস্ত বিবেকবর্জিত মূঢ় ব্যক্তিদের বুদ্ধি সমাধি অর্থাৎ ভগবানে একনিষ্ঠতা লাভ হয় না।

  • শ্লোক: 85

    ধ্যায়তো বিষয়ান্ পুংসঃ সঙ্গস্তেষূপজায়তে ।
    সঙ্গাৎ সঞ্জায়তে কামঃ কামাৎ ক্রোধোহভিজায়তে ॥
    (গীতা ২/৬২) "
  • অনুবাদঃ- ইন্দ্রিয়ের বিষয়সমূহ সম্বন্ধে চিন্তা করতে করতে মানুষের তাতে আসক্তি জন্মায়, আসক্তি থেকে কাম উৎপন্ন হয় এবং কামনা থেকে ক্রোধ উৎপন্ন হয় ।

  • শ্লোক: 86

    ক্রোধাদ্ ভবতি সম্মোহঃ সম্মোহাৎ স্মৃতিবিভ্রমঃ ।
    স্মৃতিভ্রংশাদ্ বুদ্ধিনাশো বুদ্ধিনাশাৎ প্রণশ্যতি ॥
    (গীতা ২/৬৩)"
  • অনুবাদঃ- ক্রোধ থেকে সম্মোহ, সম্মোহ থেকে স্মৃতিবিভ্রম, স্মৃতিবিভ্রম থেকে বুদ্ধিনাশ এবং বুদ্ধিনাশ হওয়ার ফলে সর্বনাশ হয়। অর্থাৎ, মানুষ পুনরায় জড় জগতের অন্ধকূপে অধঃপতিত হয়।

  • শ্লোক: 87

    ইন্দ্রিয়াণাং হি চরতাং যন্মনোহনুবিধীয়তে ।
    তদস্য হরতি প্রজ্ঞাং বায়ুর্নাবমিবাম্ভসি ॥
    (গীতা ২/৬৭)"
  • অনুবাদঃ- প্রতিকূল বায়ু নৌকাকে যেমন অস্থির করে, তেমনই সদা বিচরণকারী যে কোন একটি মাত্র ইন্দ্রিয়ের আকর্ষণেও মন অসংযত ব্যক্তির প্রজ্ঞাকে হরণ করতে পারে।

  • শ্লোক: 88

    কাম এষ ক্রোধ এষ রজোগুণসমুদ্ভবঃ ।
    মহাশনো মহাপাপ্মা বিদ্ধ্যেনমিহ বৈরিণম্ ॥
    (গীতা ৩/৩৭)"
  • অনুবাদঃ- পরমেশ্বর ভগবান বললেন- হে অর্জুন ! রজোগুণ থেকে সমুদ্ভূত কামই মানুষকে এই পাপে প্রবৃত্ত করে এবং এই কামই ক্রোধে পরিণত হয়। কাম সর্বগ্রাসী ও পাপাত্মক; কামকেই জীবের প্রধান শত্রু বলে জানবে।

  • শ্লোক: 89

    ইন্দ্রিয়াণি পরাণ্যাহুরিন্দ্রিয়েভ্যঃ পরং মনঃ ।
    মনসস্তু পরা বুদ্ধির্যো বুদ্ধেঃ পরতস্ত্ত সঃ ॥
    (গীতা ৩/৪২)"
  • অনুবাদঃ- স্থূল জড় পদার্থ থেকে ইন্দ্রিয়গুলি শ্রেয়; ইন্দ্রিয়গুলি থেকে মন শ্রেয়; মন থেকে বুদ্ধি শ্রেয়; আর তিনি (আত্মা) সেই বুদ্ধি থেকেও শ্রেয়।

  • শ্লোক: 90

    যে হি সংস্পর্শজা ভোগা দুঃখযোনয় এব তে ।
    আদ্যন্তবন্তঃ কৌন্তেয় ন তেষু রমতে বুধঃ ॥
    (গীতা ৫/২২)"
  • অনুবাদঃ- বিবেকবান পুরুষ দুঃখের কারণ যে ইন্দ্রিয়জাত বিষয়ভোগ তাতে আসক্ত হন না। হে কৌন্তেয় ! এই ধরনের সুখভোগ আদি ও অন্তবিশিষ্ট৷ তাই, জ্ঞানী ব্যক্তিরা তাতে প্রীতি লাভ করেন না।

  • শ্লোক: 91

    দেহিনোহস্মিন্ যথা দেহে কৌমারং যৌবনং জরা ।
    তথা দেহান্তরপ্রাপ্তির্ধীরস্তত্র ন মুহ্যতি ॥
    (গীতা ২/১৩)"
  • অনুবাদঃ- দেহীর দেহ যেভাবে কৌমার, যৌবন ও জরার মাধ্যমে তার রূপ পরিবর্তন করে চলে, মৃত্যুকালে তেমনই ঐ দেহী ( আত্মা ) এক দেহ থেকে অন্য কোন দেহে দেহান্তরিত হয়। স্থিতপ্রজ্ঞ পণ্ডিতেরা কখনও এই পরিবর্তনে মুহ্যমান হন না ।

  • শ্লোক: 92

    অবিনাশি তু তদ্বিদ্ধি যেন সর্বমিদং ততম্ ।
    বিনাশমব্যয়স্যাস্য ন কশ্চিৎ কর্তুমর্হতি ॥
    (গীতা ২/১৭)"
  • অনুবাদঃ- যা সমগ্র শরীরে পরিব্যাপ্ত হয়ে রয়েছে, তাকে তুমি অবিনাশী বলে জানবে৷ সেই অব্যয় আত্মাকে কেউ বিনাশ করতে সক্ষম নয়।

  • শ্লোক: 93

    ন জায়তে ম্রিয়তে বা কদাচিন্ নায়ং ভূত্বা ভবিতা বা ন ভূয়ঃ ।
    অজো নিত্যঃ শাশ্বতোহয়ং পুরাণো
    ন হন্যতে হন্যমানে শরীরে ॥
    (গীতা ২/২০)"
  • অনুবাদঃ- আত্মার কখনও জন্ম হয় না বা মৃত্যু হয় না, অথবা পুনঃ পুনঃ তাঁর উৎপত্তি বা বৃদ্ধি হয় না৷ তিনি জন্মরহিত শাশ্বত, নিত্য এবং পুরাতন হলেও চিরনবীন। শরীর নষ্ট হলেও আত্মা কখনও বিনষ্ট হয় না।

  • শ্লোক: 94

    বাসাংসি জীর্ণানি যথা বিহায় নবানি গৃহ্ণাতি নরোহপরাণি ।
    তথা শরীরাণি বিহায় জীর্ণান্য-
    ন্যানি সংযাতি নবানি দেহী ॥
    (গীতা ২/২২)"
  • অনুবাদঃ- মানুষ যেমন জীর্ণ বস্ত্র পরিত্যাগ করে নতুন বস্ত্র পরিধান করে, দেহীও তেমনই জীর্ণ শরীর ত্যাগ করে নতুন দেহ ধারণ করেন।

  • শ্লোক: 95

    নৈনং ছিন্দন্তি শস্ত্রাণি নৈনং দহতি পাবকঃ ।
    ন চৈনং ক্লেদয়ন্ত্যাপো ন শোষয়তি মারুতঃ ॥
    (গীতা ২/২৩)"
  • অনুবাদঃ- আত্মাকে অস্ত্রের দ্বারা কাটা যায় না, আগুনে পোড়ান যায় না, জলে ভেজানো যায় না, অথবা হাওয়াতে শুকানোও যায় না।

  • শ্লোক: 96

    অচ্ছেদ্যোহয়মদাহ্যোহয়মক্লেদ্যোহশোষ্য এব চ ।
    নিত্যঃ সর্বগতঃ স্থাণুরচলোহয়ং সনাতনঃ ॥
    (গীতা ২/২৪)"
  • অনুবাদঃ- এই আত্মা অচ্ছেদ্য, অদাহ্য, অক্লেদ্য ও অশোষ্য। তিনি চিরস্থায়ী, সর্বব্যপ্ত, অপরিবর্তনীয়, অচল ও সনাতন।

  • শ্রীমদ্ভাগবত গীতার আরও কিছু গুরুত্বপূর্ণ শ্লোক

    শ্রীমদ্ভগবদগীতার অধ্যায়গুলো

    ১ম ২য় ৩য় ৪র্থ ৫ম ৬ষ্ঠ ৭ম ৮ম ৯ম ১০ম ১১শ ১২শ ১৩শ ১৪শ ১৫শ ১৬শ ১৭শ ১৮শ
  • Add_6

    আপনার পছন্দমত যে কোন ধরনের লেখা পোস্ট করতে পারেন। মানসম্মত লেখা নামসহ সাইটে স্থায়ীভাবে পাবলিশ করা হয়।

    সুনির্বাচিত শ্লোকঃ-

    * * * Anupamasite-এ আপনাকে স্বাগতম। আপনার পছন্দমত যে কোন ধরনের লেখা পোস্ট করতে এখানে ক্লিক করুন।   আপনাদের পোস্ট করা লেখাগুলো এই লিংকে আছে, দেখতে এখানে ক্লিক করুন। ধন্যবাদ * * *

    জ্ঞানই শক্তি ! তাই- আগে নিজে জানুন , শেয়ার করে প্রচারের মাধ্যমে অন্যকেও জানতে সাহায্য করুন।