সনাতন ধর্মের সুনির্বাচিত বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ কিছু শ্লোকঃ-

জ্ঞান-ই শক্তি ! নিজের ধর্ম সম্পর্কে আগে ভালোভাবে জানুন এবং অন্যকেও জানতে উৎসাহিত করুন।

আপনার পছন্দমত যে কোন ধরনের লেখা পোস্ট করতে পারেন। মানসম্মত লেখা নামসহ সাইটে স্থায়ীভাবে পাবলিশ করা হয়।

শ্রীমদ্ভগবত গীতার কিছু গুরুত্বপূর্ণ শ্লোক

শ্রীমদ্ভগবদগীতার অধ্যায়গুলো

  • ১ম ২য় ৩য় ৪র্থ ৫ম ৬ষ্ঠ ৭ম ৮ম ৯ম ১০ম ১১শ ১২শ ১৩শ ১৪শ ১৫শ ১৬শ ১৭শ ১৮শ
  • শ্লোক: 25

    ভক্ত্যা মামভিজানাতি যাবান্ যশ্চাস্মি তত্ত্বতঃ ।
    ততো মাং তত্ত্বতো জ্ঞাত্বা বিশতে তদনন্তরম্ ॥
    (গীতা ১৮/৫৫)"
  • অনুবাদঃ- ভক্তির দ্বারা কেবল স্বরূপত আমি যে রকম হই, সেরূপে আমাকে কেউ তত্ত্বত জানতে পারেন৷ এই প্রকার ভক্তির দ্বারা আমাকে তত্ত্বত জেনে, তার পরে তিনি আমার ধামে প্রবেশ করতে পারেন।

  • শ্লোক: 26

    জন্ম কর্ম চ মে দিব্যমেবং যো বেত্তি তত্ত্বতঃ ।
    ত্যক্ত্বা দেহং পুনর্জন্ম নৈতি মামেতি সোহর্জুন ।।
    (গীতা ৪/৯)"
  • অনুবাদঃ- হে অর্জুন ! যিনি আমার এই প্রকার দিব্য জন্ম ও কর্ম যথাযথভাবে জানেন, তাঁকে আর দেহত্যাগ করার পর পুনরায় জন্মগ্রহণ করতে হয় না, তিনি আমার নিত্য ধাম লাভ করেন।

  • শ্লোক: 27

    বীতরাগভয়ক্রোধা মন্ময়া মামুপাশ্রিতাঃ ।
    বহবো জ্ঞানতপসা পূতা মদ্ভাবমাগতাঃ ।।
    (গীতা ৪/১০)"
  • অনুবাদঃ- আসক্তি, ভয় ও ক্রোধ থেকে মুক্ত হয়ে, সম্পূর্ণরূপে আমাতে মগ্ন হয়ে, একান্তভাবে আমার আশ্রিত হয়ে, পূর্বে বহু বহু ব্যক্তি আমার জ্ঞান লাভ করে পবিত্র হয়েছে- এবং এভাবেই সকলেই আমার অপ্র্রাকৃত প্রীতি লাভ করেছে।

  • শ্লোক: 28

    অশ্রদ্দধানাঃ পুরুষাঃ ধর্মস্যাস্য পরন্তপ ।
    অপ্রাপ্য মাং নিবর্তন্তে মৃত্যুসংসারবর্ত্মনি ॥
    (গীতা ৯/৩)"
  • অনুবাদঃ- হে পরন্তপ ! এই ভগবদ্ভক্তিতে যাদের শ্রদ্ধা উদিত হয়নি, তারা আমাকে লাভ করতে পারে না ৷ তাই তারা এই জড় জগতে জন্ম-মৃত্যুর পথে ফিরে আসে।

  • শ্লোক: 29

    অনন্যাশ্চিন্তয়ন্তো মাং যে জনাঃ পর্যুপাসতে।
    তেষাং নিত্যাভিযুক্তানাং যোগক্ষেমং বহাম্যহম্ ॥
    (গীতা ৯/২২) "
  • অনুবাদঃ- অনন্য চিত্তে আমার চিন্তায় মগ্ন হয়ে, পরিপূর্ণ ভক্তি সহকারে যাঁরা সর্বদাই আমার উপাসনা করেন, তাঁদের সমস্ত অপ্রাপ্ত বস্তু আমি বহন করি এবং তাঁদের প্রাপ্ত বস্তুর সংরক্ষণ করি।

  • শ্লোক: 30

    অনন্যচেতাঃ সততং যো মাং স্মরতি নিত্যশঃ ।
    তস্যাহং সুলভঃ পার্থ নিত্যযুক্তস্য যোগিনঃ ॥
    (গীতা ৮/১৪) "
  • অনুবাদঃ- হে পার্থ ! যিনি একাগ্রচিত্তে কেবল আমাকেই নিরন্তর স্মরণ করেন, আমি সেই নিত্যযুক্ত ভক্তযোগীর কাছে সুলভ হই।

  • শ্লোক: 31

    মন্মনা ভব মদ্ভক্তো মদ্ যাজী মাং নমস্কুরু ।
    মামেবৈষ্যসি যুক্ত্বৈবমাত্মানং মৎপরায়ণঃ ॥
    (গীতা ৯/৩৪) "
  • অনুবাদঃ- তোমার মনকে আমার ভাবনায় নিযুক্ত কর, আমার ভক্ত হও, আমাকে প্রণাম কর এবং আমার পূজা কর। এভাবেই মৎপরায়্ণ হয়ে সম্পূর্ণরূপে আমাতে অভিনিবিষ্ট হলে, নিঃসন্দেহে তুমি আমাকে লাভ করবে।

  • শ্লোক: 32

    মন্মনা ভব মদ্ভক্তো মদ্ যাজী মাং নমস্কুরু ।
    মামেবৈষ্যসি সত্যং তে প্রতিজানে প্রিয়োহসি মে ॥
    (গীতা ১৮/৬৫) "
  • অনুবাদঃ- তুমি আমাতে চিত্ত অর্পণ কর, আমার ভক্ত হও, আমার পূজা কর এবং আমাকে নমস্কার কর। তা হলে তুমি আমাকে অবশ্যই প্রাপ্ত হবে ৷এই জন্য আমি তোমার কাছে সত্যই প্রতিজ্ঞা করছি, যেহেতু তুমি আমার অত্যন্ত প্রিয়।

  • শ্লোক: 33

    যেষাং ত্বন্তগতং পাপং জনানাং পুণ্যকর্মণাম্ ।
    তে দ্বন্দ্বমোহনির্মুক্তা ভজন্তে মাং দৃঢ়ব্রতাঃ ॥
    (গীতা ৭/২৮) "
  • অনুবাদঃ- যে সমস্ত পুণ্যবান ব্যক্তির পাপ সম্পূর্ণরূপে দূরীভূত হয়েছে এবং যাঁরা দ্বন্দ্বমোহ থেকে মুক্ত হয়েছেন, তাঁরা দৃঢ় নিষ্ঠার সঙ্গে আমার ভজনা করেন।

  • শ্লোক: 34

    পত্রং পুষ্পং ফলং তোয়ং যো মে ভক্ত্যা প্রযচ্ছতি ।
    তদহং ভক্ত্যুপহৃতমশ্নামি প্রযতাত্মনঃ ॥
    (গীতা ৯/২৬) "
  • অনুবাদঃ- যে বিশুদ্ধচিত্ত নিষ্কাম ভক্ত ভক্তি সহকারে আমাকে এমনকি পত্র, পুষ্প, ফল ও জলও অর্পণ করেন, আমি তাঁর সেই ভক্তিপ্লুত উপহার প্রীতি সহকারে গ্রহণ করি।

  • শ্লোক: 35

    যৎকরোষি যদশ্নাসি যজ্জুহোষি দদাসি যৎ ।
    যত্তপস্যসি কৌন্তেয় তৎকুরুষ্ব মদর্পণম্ ॥
    (গীতা ৯/২৭) "
  • অনুবাদঃ- হে কৌন্তেয় ! তুমি যা অনুষ্ঠান কর, যা আহার কর, যা হোম কর, যা দান কর এবং যে তপস্যা কর, সেই সমস্তই আমাকে সমর্পণ কর।

  • শ্লোক: 36

    কর্মণ্যেবাধিকারস্তে মা ফলেষু কদাচন ।
    মা কর্মফলহেতুর্ভূর্মা তে সঙ্গোহস্ত্বকর্মণি ॥
    (গীতা ২/৪৭)"
  • অনুবাদঃ- স্বধর্ম বিহিত কর্মে তোমার অধিকার আছে, কিন্তু কোন কর্মফলে তোমার অধিকার নেই। কখনও নিজেকে কর্মফলের হেতু মনে করো না, এবং কখনও স্বধর্ম আচরণ না করার প্রতিও আসক্ত হয়ো না।

  • শ্লোক: 37

    ন হি কশ্চিৎ ক্ষণমপি জাতু তিষ্টত্যকর্মকৃৎ ।
    কার্যতে হ্যবশঃ কর্ম সর্বঃ প্রকৃতিজৈর্গুণৈঃ ॥
    (গীতা ৩/৫)"
  • অনুবাদঃ- সকলেই মায়াজাত গুণসমূহের দ্বারা প্রভাবিত হয়ে অসহায়ভাবে কর্ম করতে বাধ্য হয়; তাই কর্ম না করে কেউই ক্ষণকালও থাকতে পারে না।

  • শ্লোক: 38

    নিয়তং কুরু কর্ম ত্বং কর্ম জ্যায়ো হ্যকর্মণঃ ।
    শরীরযাত্রাপি চ তে ন প্রসিদ্ধ্যেদকর্মণ ॥
    (গীতা ৩/৮) "
  • অনুবাদঃ- তুমি শাস্ত্রক্তো কর্মের অনুষ্ঠান কর, কেন না কর্মত্যাগ থেকে কর্মের অনুষ্ঠান শ্রেয়। কর্ম না করে কেউ দেহযাত্রাও নির্বাহ করতে পারে না।

  • শ্লোক: 39

    যজ্ঞার্থাৎ কর্মণোহন্যত্র লোকোহয়ং কর্মবন্ধনঃ ।
    তদর্থং কর্ম কৌন্তেয় মুক্তসঙ্গঃ সমাচর ॥
    (গীতা ৩/৯) "
  • অনুবাদঃ- বিষ্ণুর প্রীতি সম্পাদন করার জন্য কর্ম করা উচিত; তা না হলে কর্মই এই জড় জগতে বন্ধনের কারণ। তাই, হে কৌন্তেয় ! ভগবানের সন্তুষ্টি বিধানের জন্যই কেবল তুমি তোমার কর্তব্যকর্ম অনুষ্ঠান কর এবং এভাবেই তুমি সর্বদাই বন্ধন থেকে মুক্ত থাকতে পারবে।

  • শ্লোক: 40

    অহং হি সর্বযজ্ঞানাং ভোক্তা চ প্রভুরেব চ ।
    ন তু মামভিজানন্তি তত্ত্বেনাতশ্চ্যবন্তি তে ॥
    (গীতা ৯/২৪) "
  • অনুবাদঃ- আমিই সমস্ত যজ্ঞের ভোক্তা ও প্রভু। কিন্তু যারা আমার চিন্ময় স্বরূপ জানে না, তারা আবার সংসার সমুদ্রে অধঃপতিত হয়।

  • শ্লোক: 41

    যজ্ঞশিষ্টাশিনঃ সন্তো মুচ্যন্তে সর্বকিল্বিষৈঃ ।
    ভুঞ্জতে তে ত্বঘং পাপা যে পচন্ত্যাত্মকারণাৎ ॥
    (গীতা ৩/১৩) "
  • অনুবাদঃ- ভগবাদ্ভক্তেরা সমস্ত পাপ থেকে মুক্ত হন, কারণ তাঁরা যজ্ঞাবশিষ্ট অন্নাদি গ্রহন করেন। যারা কেবল স্বার্থপর হয়ে নিজেদের ইন্দ্রিয়ের তৃপ্তির জন্য অন্নাদি পাক করে, তারা কেবল পাপই ভোজন করে।

  • শ্লোক: 42

    তদ্ বিদ্ধি প্রণিপাতেন পরিপ্রশ্নেন সেবয়া ।
    উপদেক্ষ্যন্তি তে জ্ঞানং জ্ঞানিনস্তত্ত্বদর্শিনঃ ।।
    (গীতা ৪/৩৪)"
  • অনুবাদঃ- সদ্ গুরু শরণাগত হয়ে তত্ত্বজ্ঞান লাভ করার চেষ্টা কর। বিনম্র চিত্তে প্রশ্ন জিজ্ঞাসা কর এবং অকৃত্রিম সেবার দ্বারা তাঁকে সন্তুষ্ট কর ৷ তা হলে সেই তত্ত্বদ্রষ্টা পুরুষেরা তোমাকে জ্ঞান উপদেশ দান করবেন।

  • শ্লোক: 43

    মাম্, হি, পার্থ, ব্যপাশ্রিত্য, যে, অপি, স্যুঃ, পাপযোনয়ঃ।
    স্ত্রিয়ঃ, বৈশ্যাঃ, তথা, শূদ্রাঃ, তে, অপি, যান্তি, পরাম্, গতিম্ ॥
    (গীতা ৯/৩২)"
  • অনুবাদঃ- হে পার্থ ! যারা আমাকে বিশেষভাবে আশ্রয় করে, তারা স্ত্রী, বৈশ্য, শূদ্র আদি নীচকুলে জাত হলেও অবিলম্বে পরাগতি লাভ করে।

  • শ্লোক: 44

    ন ত্বেবাহং জাতু নাসং ন ত্বং নেমে জনাধিপাঃ ।
    ন চৈব ন ভবিষ্যামঃ সর্বে বয়মতঃপরম্ ।।
    (গীতা ২/১২)
  • অনুবাদঃ- এমন কোন সময় ছিল না যখন আমি, তুমি ও এই সমস্ত রাজারা ছিলেন না এবং ভবিষ্যতেও কখনও আমাদের অস্তিত্ব বিনষ্ট হবে না ।

  • শ্লোক: 45

    ক্লেশোহধিকতরস্তেষামব্যক্তাসক্তচেতসাম্ ।
    অব্যক্তা হি গতির্দুঃখং দেহবদ্ভিরবাপ্যতে ॥
    (গীতা ১২/৫)"
  • অনুবাদঃ- যাদের মন ভগবানের অব্যক্ত নির্বেশেষ রূপের প্রতি আসক্ত, তাদের ক্লেশ অধিকতর৷ কারণ, অব্যক্তের উপাসনার ফলে দেহ্ধারী জীবদের কেবল দুঃখই লাভ হয়।

  • শ্লোক: 46

    ব্রহ্মণো হি প্রতিষ্ঠাহমমৃতস্যাব্যয়স্য চ ।
    শাশ্বতস্য চ ধর্মস্য সুখস্যৈকান্তিকস্য চ ॥
    (গীতা ১৪/২৭)"
  • অনুবাদঃ- আমিই নির্বিশেষ ব্রহ্মের প্রতিষ্ঠা বা আশ্রয়। অব্যয় অমৃতের, শাশ্বত ধর্মের এবং ঐকান্তিক সুখের আমিই আশ্রয়।

  • শ্লোক: 47

    বহূনাং জন্মনামন্তে জ্ঞানবান্মাং প্রপদ্যতে।
    বাসুদেবঃ সর্বমিতি স মহাত্মা সুদুর্লভঃ ॥ (গীতা ৭/১৯)"
  • অনুবাদঃ- বহু জন্মের পর তত্ত্বজ্ঞানী ব্যক্তি আমাকে সর্ব কারণের পরম কারণ রূপে জেনে আমার শরণাগত হন৷ সেইরূপ মহাত্মা অত্যন্ত দুর্লভ।

  • শ্রীমদ্ভাগবত গীতার আরও কিছু গুরুত্বপূর্ণ শ্লোক

    শ্রীমদ্ভগবদগীতার অধ্যায়গুলো

    ১ম ২য় ৩য় ৪র্থ ৫ম ৬ষ্ঠ ৭ম ৮ম ৯ম ১০ম ১১শ ১২শ ১৩শ ১৪শ ১৫শ ১৬শ ১৭শ ১৮শ
  • Add_6

    আপনার পছন্দমত যে কোন ধরনের লেখা পোস্ট করতে পারেন। মানসম্মত লেখা নামসহ সাইটে স্থায়ীভাবে পাবলিশ করা হয়।

    সুনির্বাচিত শ্লোকঃ-

    * * * Anupamasite-এ আপনাকে স্বাগতম। আপনার পছন্দমত যে কোন ধরনের লেখা পোস্ট করতে এখানে ক্লিক করুন।   আপনাদের পোস্ট করা লেখাগুলো এই লিংকে আছে, দেখতে এখানে ক্লিক করুন। ধন্যবাদ * * *

    জ্ঞানই শক্তি ! তাই- আগে নিজে জানুন , শেয়ার করে প্রচারের মাধ্যমে অন্যকেও জানতে সাহায্য করুন।

    Say something

    Please enter name.
    Please enter valid email adress.
    Please enter your comment.