সনাতন ধর্মের সুনির্বাচিত বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ কিছু শ্লোকঃ-

জ্ঞান-ই শক্তি ! নিজের ধর্ম সম্পর্কে আগে ভালোভাবে জানুন এবং অন্যকেও জানতে উৎসাহিত করুন।

আপনার পছন্দমত যে কোন ধরনের লেখা পোস্ট করতে পারেন। মানসম্মত লেখা নামসহ সাইটে স্থায়ীভাবে পাবলিশ করা হয়।

শ্রীমদ্ভাগবতের আরও কিছু গুরুত্বপূর্ণ শ্লোক

  • শ্লোক: 151

    বালস্য নেহ শরণং পিতরৌ নৃসিংহ
    নার্তস্য চাগদমুদন্বতি মজ্জতো নৌঃ ।
    তপ্তস্য তৎপ্রতিবিধির্য ইহাঞ্জসেষ্ট-
    স্তাবদ্ বিভো তনুভৃতাং তদুপেক্ষিতানাম্ ।।
    (ভাগবত ৭/৯/১৯)
  • অনুবাদঃ- হে নৃসিংহদেব! হে বিভো! জীবন সম্বন্ধে দেহ-চেতনাবশত যে সমস্ত দেহবদ্ধ জীবগণ আপনার দ্বারা উপেক্ষিত হয়েছে, তারা তাদের নিজেদের কল্যাণের জন্য কিছুই করতে পারে না। যে প্রতিবিধানই তারা গ্রহণ করুক না কেন, সেগুলি হয়ত সাময়িকভাবে উপকারী হতে পারে, কিন্তু নিশ্চিতরূপে সেগুলি ক্ষণস্থায়ী। দৃষ্টান্তস্বরূপ, পিতা-মাতা তাদের বালককে রক্ষা করতে পারে না, ওষুধ ও চিকিৎসক রোগীকে যন্ত্রণা থেকে রেহাই দিতে পারে না এবং একটি নৌকা সমুদ্রে নিমজ্জমান কোনও ব্যক্তিকে রক্ষা করতে পারে না।

  • শ্লোক: 152

    নৈষ্কর্ম্যমপ্যচুতভাববর্জিতং
    ন শোভতে জ্ঞানমলং নিরঞ্জনম্ ।
    কুতঃ পুনঃ শশ্বদভদ্রমীশ্বরে
    ন চার্পিত্নগ কর্ম যদপ্যকারণম্ ।।
    (ভাগবত ১/৫/১২)
  • অনুবাদঃ- আত্ম-উপলব্ধির জ্ঞান সব রকমের জড় সংসর্গ-বিহীন হলেও তা যদি অচ্যুত ভগবানের মহিমা বর্ণনা না করে, তা হলে তা অর্থহীন। তেমনই, যে সকাম কর্ম শুরু থেকেই ক্লেশদায়ক ও অনিত্য, তা যদি পরমেশ্বর ভগবানের ভক্তিযুক্ত সেবার উদ্দেশ্যে সাধিত না হয়, তা হলে তার কি প্রয়োজন?

  • শ্লোক: 153

    ভয়ং দ্বিতীয়াভিনিবেশতঃ স্যা-
    দীশাদপেতস্য বিপর্যয়োহস্মৃতিঃ ।
    তন্ময়য়াতো বুধ আভজেত্তং
    ভক্ত্যৈকয়েশং শুরুদেবতাত্মা ।।
    (ভাগবত ১১/২/৩৭)
  • অনুবাদঃ- জীব যখন শ্রীকৃষ্ণের বহিরঙ্গা শক্তি মায়ার দ্বারা আকৃষ্ট হয়, তখন তার ভয় উপস্থিত হয়। জড়া প্রকৃতির প্রভাবে পরমেশ্বর ভগবানের থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ার ফলে তার স্মৃতি বিপর্যয় হয়। অর্থাৎ, শ্রীকৃষ্ণের নিত্য দাস হওয়ার পরিবর্তে সে শ্রীকৃষ্ণের প্রতিযোগী হয়। এই ভ্রান্তি সংশোধন করার জন্য পণ্ডিত ব্যক্তি পরমেশ্বর ভগবানকে গুরুদেবরূপে, অর্চ্চা-বিগ্রহরূপে ও পরমাত্মারূপে ভজনা করেন।

  • শ্লোক: 154

    সুখমৈন্দ্রিয়কং দৈত্যা দেহযোগেন দেহিনাম্ ।
    সর্বত্র লভ্যতে দৈবাদ্ যথা দুঃখমযত্নতঃ ।।
    (ভাগবত ৭/৬/৩)
  • অনুবাদঃ- হে আমার দৈত্যবন্ধুগণ ! বিভিন্ন প্রকার দেহের মাধ্যমে যে ইন্দ্রিয়জাত সুখ, তা পূর্ব কর্মফল অনুসারে যে কোন জীবদেহেই লাভ করা যায়। বিনা চেষ্টাতেই সেই দেহসুখ লাভ করা যায়, ঠিক যেমন বিনা চেষ্টাতেই আমরা দুঃখ লাভ করি।

  • শ্লোক: 155

    নেহ যৎকর্ম ধর্মায় ন বিরাগায় কল্পতে ।
    ন তীর্থপদসেবায়ৈ জীবন্নপি মৃতো হি সঃ ।।
    (ভাগবত ৩/২৩/৫৬)
  • অনুবাদঃ- যে ব্যক্তির কর্ম তাকে ধর্মাভিমুখী করে না, যার ধর্ম অনুষ্ঠান জড় বিষয়ের প্রতি বিরক্তি উৎপাদন করে না এবং যার বৈরাগ্য পরমেশ্বর ভগবানের প্রতি প্রেমময়ী সেবায় পর্যবসিত হয় না, সেই ব্যক্তি জীবিত হলেও মৃত।

  • শ্লোক: 156

    শ্রোতব্যাদীনি রাজেন্দ্র নৃণাং সন্তি সহস্রশঃ ।
    অপশ্যতামাত্মতত্ত্বং গৃহেষু গৃহমেধিনাম্ ।।
    (ভাগবত ২/১/২)
  • অনুবাদঃ- হে রাজশ্রেষ্ঠ ! আত্ম-তত্ত্বজ্ঞান আলোচনায় উদাসীন, বিষয়াসক্ত গৃহমেধীদের অসংখ্য শ্রবণীয়, কীর্তনীয় ও স্মরণীয় বিষয়সমূহ আছে।

  • শ্লোক: 157

    নিদ্রয়া হ্রিয়তে নক্তং ব্যবায়েন চ বা বয়ঃ ।
    দিবা চার্থেহয়া রাজন্ কুটুম্বভরণেন বা ।।
    (ভাগবত ২/১/৩)
  • অনুবাদঃ- এই প্রকার মাৎসর্য পরায়ণ গৃহমেধীরা নিদ্রামগ্ন হয়ে অথবা রতিক্রিয়ায় তাদের রাত্রি অতিবাহিত করে এবং আত্মীয়-স্বজনদের প্রতিপালনের জন্য অর্থ উপার্জনের চেষ্টায় দিবাভাগের অপচয় করে।

  • শ্লোক: 158

    দেহাপত্যকলত্রাদিষ্বাত্মসৈন্যেষ্বসৎস্বপি ।
    তেষাং প্রমত্তো নিধনং পশ্যন্নপি ন পশ্যতি ।।
    (ভাগবত ২/১/৪)
  • অনুবাদঃ- আত্ম-তত্ত্বজ্ঞান রহিত ব্যক্তিরা দেহ, পুত্র, পত্নী আদি অনিত্য সৈন্যদের প্রতি অত্যন্ত আসক্ত হয়ে জীবনের প্রকৃত সমস্যাগুলি সাধনের কোন চেষ্টা করে না। এই সমস্ত বিষয়ের অনিত্যতা সম্বন্ধে যথেষ্ট অভিজ্ঞতা সত্ত্বেও তারা তাদের অবশ্যম্ভাবী বিনাশ দর্শন করে না।

  • শ্লোক: 159

    শ্ববিড়্ বরাহোষ্ট্রখরৈঃ
    সংস্তুতঃ পুরুষঃ পশুঃ ।
    ন যৎ কর্ণ পথোপেতো
    জাতু নাম গদাগ্রজঃ ।।
    (ভাগবত ২/৩/১৯)
  • অনুবাদঃ- কুকুর, শূকর, উট ও গর্দভের মতো মানুষেরা তাদেরই প্রশংসা করে, যারা সমস্ত অশুভ থেকে উদ্ধারকারী ভগবান শ্রীকৃষ্ণের দিব্য লীলাসমূহ কখনও শ্রবণ করে না।
    (শ্রীশুকদেব গোস্বামী)

  • শ্লোক: 160

    বিলে বতোরুক্রমবিক্রমান্ যে
    ন শৃণ্বতঃ কর্ণপুটে নরস্য ।
    জিহ্বাসতী দার্দুরিকেব সূত
    ন চোপগায়ত্যুরুগায়গাথাঃ ।।
    (ভাগবত ২/৩/২০)
  • অনুবাদঃ- যে ব্যক্তি ভগানের শৌর্য ও অদ্ভূত কার্যকলাপের কথা শ্রবণ করেনি এবং ভগবানের গুণগাথা কীর্তন করেনি, তার কর্ণরন্ধ্র সর্পের গর্তের মতো এবং তার জিহ্বা ভেকের জিহ্বার মতো।

  • শ্লোক: 161

    মতির্ন কৃষ্ণে পরতঃ স্বতো বা
    মিথোহভিপদ্যেত গৃহব্রতানাম্ ।
    অদান্তগোভির্বিশতাং তামিস্রং
    পুনঃ পুনশ্চর্বিতচর্বণানাম্ ।।
    (ভাগবত ৭/৫/৩০)
  • অনুবাদঃ- ইন্দ্রিয়গুলি অসংযত হওয়ার ফলে, জড় ভোগে অত্যধিক আসক্ত ব্যক্তিরা নারকীয় জীবনের পথে এগিয়ে যায় এবং পুনঃপুনঃ চর্বিত বস্তুর চর্বণ করে। অন্যের উপদেশে বা নিজের চেষ্টায়, কিংবা উভয় পক্ষের সংযুক্ত প্রচেষ্টায় – কোনভাবেই কখনও তাদের শ্রীকৃষ্ণে মতি হয় না।

  • শ্লোক: 162

    স্বজনাখ্যদস্যুভিঃ
    (ভাগবত ৮/২২/৯)
  • অনুবাদঃ- স্বজন নামে পরিচিত লোকগুলি আসলে দস্যুর মতো। দস্যুরা যেমন বলপূর্বক ধন হরণ করে, স্বজনেরাও দেহসুখ ভোগের জন্য অর্থব্যয় করে। যে ধন দিয়ে শ্রীকৃষ্ণের সেবা করা যেত, তা তারা হরণ করে। এই স্বজনরূপ দস্যুর কি প্রয়োজন?

  • শ্লোক: 163

    যস্যাত্মবুদ্ধিঃ কুপণে ত্রিধাতুকে
    স্বধীঃ কলত্রাদিষু ভৌম ইজ্যধীঃ ।
    যত্তীর্থবুদ্ধিঃ সলিলে ন কর্হিচিজ্
    জনেষ্বভিজ্ঞেষু স এব গোখরঃ ।।
    (ভাগবত ১০/৮৪/১৩)
  • অনুবাদঃ- যে ব্যক্তি কফ, পিত্ত ও বায়ু – এই ত্রিধাতু-বিশিষ্ট দেহরূপ থলিটিকে আত্মা বলে মনে করে, স্ত্রী-পুত্রাদিকে স্বজন বলে মনে করে, জন্মভূমিকে পূজ্য বলে মনে করে, তীর্থে গিয়ে তীর্থের জলকেই তীর্থ বলে মনে করে তাতে স্নান করে অথচ তীর্থবাসী অভিজ্জ সাধুদের সঙ্গ করে না, সে একটি গরু বা গাধা থেকে কোন অংশেই উৎকৃষ্ট নয়।

  • শ্লোক: 164

    তৎ সাধু মন্যেহসুরবর্য দেহিনাং
    সদা সমুদ্বিগ্নধিয়ামসদ্ গ্রহাৎ ।
    হিত্বাত্মপাতং গৃহমন্ধকূপং
    বনং গতো যদ্ধরিমাশ্রয়েত ।।
    (ভাগবত ৭/৫/৫)
  • অনুবাদঃ- হে অসুরশ্রেষ্ঠ রাজা! আমি আমার গুরু থেকে যতদূর শিখেছি তা হচ্ছে এই যে, এই ক্ষণস্থায়ী দেহ ও গৃহজীবনকে যে ব্যক্তি আমি ও আমার বলে গ্রহণ করে, সে নিশ্চিতরূপে সর্বদা উদ্বেগ উৎকণ্ঠায় নিমগ্ন থাকে, কারণ সে একটি জলহীন অন্ধকূপে পতিত হয়েছে। তার এই আত্মপাতকারী গৃহ ছেড়ে বনে যাওয়া কর্তব্য। বিশেষত বৃন্দাবনে গিয়ে কৃষ্ণভাবনামৃত গ্রহণ করে শ্রীহরির চরণকে আশ্রয় করাই তার কর্তব্য। (প্রহ্লাদ মহারাজ)

  • (সূত্রঃ- বৈষ্ণব শ্লোকাবলী) এরপর দেখুন= শ্রীমদ্ভাগবতের আরও কিছু গুরুত্বপূর্ণ শ্লোক

  • Add_6

    আপনার পছন্দমত যে কোন ধরনের লেখা পোস্ট করতে পারেন। মানসম্মত লেখা নামসহ সাইটে স্থায়ীভাবে পাবলিশ করা হয়।

    সুনির্বাচিত শ্লোকঃ-

    * * * Anupamasite-এ আপনাকে স্বাগতম। আপনার পছন্দমত যে কোন ধরনের লেখা পোস্ট করতে এখানে ক্লিক করুন।   আপনাদের পোস্ট করা লেখাগুলো এই লিংকে আছে, দেখতে এখানে ক্লিক করুন। ধন্যবাদ * * *

    জ্ঞানই শক্তি ! তাই- আগে নিজে জানুন , শেয়ার করে প্রচারের মাধ্যমে অন্যকেও জানতে সাহায্য করুন।

    Say something

    Please enter name.
    Please enter valid email adress.
    Please enter your comment.