সনাতন ধর্মের সুনির্বাচিত বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ কিছু শ্লোকঃ-

জ্ঞান-ই শক্তি ! নিজের ধর্ম সম্পর্কে আগে ভালোভাবে জানুন এবং অন্যকেও জানতে উৎসাহিত করুন।

আপনার পছন্দমত যে কোন ধরনের লেখা পোস্ট করতে পারেন। মানসম্মত লেখা নামসহ সাইটে স্থায়ীভাবে পাবলিশ করা হয়।

গুরু / শিষ্য সম্পর্কে কিছু গুরুত্বপূর্ণ শ্লোক


  • শ্লোক: 15

    আচার্যবান্ পুরুষো বেদ
    (ছান্দোগ্য উপঃ ৬/১৪/২)
  • অনুবাদঃ- যিনি গুরু গ্রহণ করেন, তিনি পারমার্থিক উপলব্ধি সম্পর্কে সমস্ত বিষয় অবগত হন।

  • শ্লোক: 16

    তদ্বিজ্ঞানার্থং স গুরুমেবাভিগচ্ছেৎ
    সমিৎপাণিঃ শ্রোত্রিয়ং ব্রহ্মনিষ্ঠম্ ।
    (মুণ্ডক উপঃ ১/২/১২)
  • অনুবাদঃ- সেই পারমার্থিক বিজ্ঞানকে উপলব্ধি করতে হলে অবশ্যই একজন সদগুরু গ্রহণ করতে হবে। সেই উদ্দেশ্যে গুরু গ্রহণেচ্ছু ব্যক্তিকে যজ্ঞকাষ্ঠ বহন করে গুরুর কাছে যেতে হবে। সদ্গুরুর লক্ষণ হচ্ছে যে, তিনি বৈদিক সিদ্ধান্তে পারঙ্গম এবং তাই সর্বদাই পরমেশ্বরের সেবায় নিযুক্ত থাকেন।

  • শ্লোক: 17

    এবং পরম্পরাপ্রাপ্তমিমং রাজর্ষয়ো বিদুঃ ।
    স কালেনেহ মহতা যোগো নষ্টঃ পরন্তপ ।।
    (গীতা ৪/২)
  • অনুবাদঃ- এভাবেই পরম্পরা মাধ্যমে প্র্রাপ্ত এই পরম বিজ্ঞান রাজর্ষিরা লাভ করেছিলেন৷ কিন্তু কালের প্রভাবে পরম্পরা ছিন্ন হয়েছিল এবং তাই সেই যোগ নষ্টপ্রায় হয়েছে।

  • শ্লোক: 18

    ন মেহভক্তশ্চতুর্বেদী মদ্ভক্তঃ শ্বপচঃ প্রিয়ঃ ।
    তস্মৈ দেয়ং ততো গ্রাহ্যং স চ পূজ্যো যথা হ্যহম্ ।।
    (হরিভক্তিবিলাস ১০/১২৭)
  • অনুবাদঃ- যে ব্যক্তি আমার শুদ্ধ ভক্ত নয়, তিনি যদি চতুর্বেদীও হন, তিনি আমার প্রিয় নন। অপরপক্ষে জ্ঞান ও কর্মবাসনা থেকে মুক্ত একজন শুদ্ধ ভক্ত যদি চণ্ডাল কুলেও জাত হন, তিনি আমার প্রিয়। প্রকৃতপক্ষে তাঁকেই দান করতে হবে, তাঁর থেকেই উচ্ছিষ্ট প্রসাদ গ্রহণ করতে হবে এবং তাঁকে আমার মতোই পূজা করতে হবে।

  • শ্লোক: 19

    রূপযৌবনসম্পন্ন বিশালকুলসম্ভবাঃ ।
    বিদ্যাহীনা ন শোভন্তে নির্গন্ধা ইব কিংশুকাঃ ।।
    (চাণক্য পণ্ডিত)
  • অনুবাদঃ- রূপযৌবন-সম্পন্ন ব্যক্তি এবং উচ্চকুলে জাত ব্যক্তিও যদি বিদ্যাহীন হন, তা হলে তার কোন শোভা নেই, ঠিক যেমন কিংশুক ফুল অত্যন্ত সুন্দর দেখালেও গন্ধহীন বলে তার কোন চমৎকারিত্ব বা মূল্য নেই।

  • শ্লোক: 20

    বেত্থ ত্বং সৌম্য তৎসর্বং তত্ত্বতস্তদনুগ্রহাৎ ।
    ব্রূয়ুঃ স্নিগ্ধস্য শিষ্যস্য গুরবো গুহ্যমপ্যুত ।।
    (ভাগবত ১/১/৮)
  • অনুবাদঃ- যেহেতু আপনি শ্রদ্ধাশীল ও বিনীত, তাই আপনার গুরুদেবেরা বিশেষভাবে অনুগ্রহ করেছেন। কারণ, স্নিগ্ধ স্বভাবসম্পন্ন অর্থাৎ প্রীতিশীল শিষ্যের কাছেই গুরুবর্গ অতি নিগূঢ় রহস্য ব্যক্ত করেন।
    (সূত গোস্বামীর প্রতি মুনি-ঋষিরা)

  • শ্লোক: 21

    চক্ষুদান দিল যেই, জন্মে জন্মে প্রভু সেই,
    দিব্যজ্ঞান হৃদে প্রকাশিত ।
    (নরোত্তম দাস ঠাকুর, প্রেমভক্তিচন্দ্রিকা)
  • অনুবাদঃ- যিনি চক্ষুদান করলেন, তিনিই জন্মে জন্মে আমার প্রভু। তাঁরই কৃপার প্রভাবে দিব্যজ্ঞান হৃদয়ে প্রকাশিত হয়।

  • শ্লোক: 22

    নীচ জাতি, নীচ-সঙ্গী, পতিত অধম ।
    কুবিষয়-কূপে পড়ি’ গোঙাইনু জনম ।।
    (চৈঃ চঃ মধ্য ২০/৯৯)
  • অনুবাদঃ- “অত্যন্ত নীচকুলে আমার জন্ম হয়েছিল, আমার সঙ্গীরা অত্যন্ত অধঃপতিত। পাপে পূর্ণ বিষয়রূপ কূপে পতিত হয়ে আমি আমার জীবন কাটিয়েছি।”

  • শ্লোক: 23

    আপনার হিতাহিত কিছুই না জানি ।
    গ্রাম্য-ব্যবহারে পণ্ডিত, তাই সত্য মানি ।।
    (চৈঃ চঃ মধ্য ২০/১০০)
  • অনুবাদঃ- কি করলে যে আমার ভাল হবে এবং কি করলে আমার খারাপ হবে, সেই সম্বন্ধে কোন জ্ঞানই আমার নেই। কিন্তু তবুও, জাগতিক ব্যবহারে লোকেরা আমাকে পণ্ডিত বলে মনে করে এবং আমিও মনে করি যেন তা সত্যি ।

  • শ্লোক: 24

    কার্পণ্যদোষোপহতস্বভাবঃ
    পৃচ্ছামি ত্বাং ধর্মসম্মূঢ়চেতাঃ ।
    যচ্ছ্রেয়ঃ স্যান্নিশ্চিতং ব্রুহি তন্মে
    শিষ্যস্তেহহং শাধি মাং ত্বাং প্রপন্নম্ ॥
    (গীতা ২/৭)
  • অনুবাদঃ- কার্পণ্যজনিত দুর্বলতার প্রভাবে আমি এখন কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়েছি এবং আমার কর্তব্য সম্বন্ধে বিভ্রান্ত হয়েছি ৷এই অবস্থায় আমি তোমাকে জিজ্ঞাসা করছি, এখন কি করা আমার পক্ষে শ্রেয়স্কর, তা আমাকে বল। এখন আমি তোমার শিষ্য এবং সর্বতোভাবে তোমার শরণাগত ৷ দয়া করে তুমি আমাকে নির্দেশ দাও ।

  • শ্লোক: 25

    অশোচ্যানন্বশোচস্ত্বং প্রজ্ঞাবাদাংশ্চ ভাষসে ।
    গতাসূনগতাসূংশ্চ নানুশোচন্তি পণ্ডিতাঃ ॥
    (গীতা ২/১১)
  • অনুবাদঃ- পরমেশ্বর ভগবান বললেন- তুমি প্রাজ্ঞের মতো কথা বলছ, অথচ যে বিষয়ে শোক করা উচিত নয়, সে বিষয়ে শোক করছ। যাঁরা যথার্থই পণ্ডিত তাঁরা কখনও জীবিত অথবা মৃত কারও জন্যই শোক করেন না।

  • শ্লোক: 26

    লালয়েৎ পঞ্চবর্ষাণি দশবর্ষাণি তাড়য়েৎ ।
    প্রাপ্তে তু ষোড়শে বর্ষে পুত্রং মিত্রবদাচরেৎ ।।
    (চাণক্য পণ্ডিত)
  • অনুবাদঃ- পাঁচ বছর বয়স পর্যন্ত পুত্রকে লালন করবে। পরবর্তী দশ বছর তাকে শাসন করবে। কিন্তু কারও পুত্র যখন ষোল বছর বয়সে উপনীত হয়, তখন তার সঙ্গে বন্ধুর মতো আচরণ করা উচিত।

  • শ্লোক: 27

    লালনে বহবো দোষাস্তাড়নে বহবো গুণাঃ ।
    তস্মাৎ পুত্রং চ শিষ্যং চ তাড়য়েন্ন তু লালয়েৎ ।।
    (চাণক্য পণ্ডিত)
  • অনুবাদঃ- প্রশ্রয় বা লালন শিষ্য বা পুত্রের আচরণে বহু বদ্ গুণাবলীকে উৎসাহিত করে এবং কঠোরতা সদ্ গুণাবলী অর্জনে সহায়তা করে। অতএব শিক্ষক বা পিতা-মাতার কর্তব্য শিশুকে প্রশ্রয় না দেওয়া, বরং মন্দ আচরণের জন্য তাকে শাস্তি দেওয়া উচিত।

  • শ্লোক: 28

    আচার্যং মাং বিজানীয়ান্নাবমন্যেত কর্হিচিৎ ।
    ন মর্ত্যবুদ্ধ্যাসূয়েত সর্বদেবময়ো গুরুঃ ।।
    (ভাগবত ১১/১৭/২৭)
  • অনুবাদঃ- আচার্যকে আমার থেকে অভিন্ন বলে মনে করা উচিত এবং কখনও কোনভাবে তাঁকে অশ্রদ্ধা করা উচিত নয়। তাঁকে একজন সাধারণ মানুষ বলে মনে করে তাঁর প্রতি ঈর্ষান্বিত হওয়া উচিত নয়, কেন না তাঁর মধ্যে সমস্ত দেবতার অধিষ্ঠান আছে।
  • (সূত্রঃ- বৈষ্ণব শ্লোকাবলী) এরপর দেখুন= গুরু / শিষ্য সম্পর্কে আরও কিছু গুরুত্বপূর্ণ শ্লোক
  • Add_6

    আপনার পছন্দমত যে কোন ধরনের লেখা পোস্ট করতে পারেন। মানসম্মত লেখা নামসহ সাইটে স্থায়ীভাবে পাবলিশ করা হয়।

    সুনির্বাচিত শ্লোকঃ-

    * * * Anupamasite-এ আপনাকে স্বাগতম। আপনার পছন্দমত যে কোন ধরনের লেখা পোস্ট করতে এখানে ক্লিক করুন।   আপনাদের পোস্ট করা লেখাগুলো এই লিংকে আছে, দেখতে এখানে ক্লিক করুন। ধন্যবাদ * * *

    জ্ঞানই শক্তি ! তাই- আগে নিজে জানুন , শেয়ার করে প্রচারের মাধ্যমে অন্যকেও জানতে সাহায্য করুন।

    Say something

    Please enter name.
    Please enter valid email adress.
    Please enter your comment.