সনাতন ধর্মের সুনির্বাচিত বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ কিছু শ্লোকঃ-

জ্ঞান-ই শক্তি ! নিজের ধর্ম সম্পর্কে আগে ভালোভাবে জানুন এবং অন্যকেও জানতে উৎসাহিত করুন।

আপনার পছন্দমত যে কোন ধরনের লেখা পোস্ট করতে পারেন। মানসম্মত লেখা নামসহ সাইটে স্থায়ীভাবে পাবলিশ করা হয়।

মায়া সম্পর্কে কিছু গুরুত্বপূর্ণ শ্লোক

  • শ্লোক: 33

    নৈষ্কর্ম্যমপ্যচুতভাববর্জিতং
    ন শোভতে জ্ঞানমলং নিরঞ্জনম্ ।
    কুতঃ পুনঃ শশ্বদভদ্রমীশ্বরে
    ন চার্পিত্নগ কর্ম যদপ্যকারণম্ ।।
    (ভাগবত ১/৫/১২)
  • অনুবাদঃ- আত্ম-উপলব্ধির জ্ঞান সব রকমের জড় সংসর্গ-বিহীন হলেও তা যদি অচ্যুত ভগবানের মহিমা বর্ণনা না করে, তা হলে তা অর্থহীন। তেমনই, যে সকাম কর্ম শুরু থেকেই ক্লেশদায়ক ও অনিত্য, তা যদি পরমেশ্বর ভগবানের ভক্তিযুক্ত সেবার উদ্দেশ্যে সাধিত না হয়, তা হলে তার কি প্রয়োজন?

  • শ্লোক: 34

    অপ্রারব্ধফলং পাপং কূটং বীজং ফলোন্মুখম্ ।
    ক্রমেনৈব প্রলীয়েত বিষ্ণুভক্তি-রতাত্মনাম্ ।।
    (পদ্ম পুরাণ)
  • অনুবাদঃ- পাপময় জীবনে পাপকর্মের সুপ্ত প্রতিক্রিয়াগুলির বিভিন্ন স্তর রয়েছে। কিছু প্রতিক্রিয়া প্রায় ফলোন্মুখ, কিছু প্রতিক্রিয়া আরও সুপ্ত (কূট) কিংবা কিছু রয়েছে একেবারে বীজ আকারে। তবে সর্ব অবস্থাতেই, বিষ্ণুভক্তিতে রত ব্যক্তির সমস্ত প্রকার পাপকর্মের প্রতিক্রিয়া ক্রমে ক্রমে লয় প্রাপ্ত হয়।

  • শ্লোক: 35

    বৃদ্ধকাল আওল সব সুখ ভাগল ।
    (ভক্তিবিনোদ ঠাকুর)
  • অনুবাদঃ- বৃদ্ধকাল সমুপস্থিত হলে জড় সুখভোগ করা অসম্ভব হয়ে পড়ে।

  • শ্লোক: 36

    তাতল সৈকতে, বারিবিন্দু সম,
    সুত-মিত-রমণী সমাজে
    (শ্রীল বিদ্যাপতি ঠাকুর)
  • অনুবাদঃ- স্ত্রী, বন্ধুবান্ধব ও সন্তান-সন্ততিদের সঙ্গে মিলিত হয়ে যে সুখ পাওয়া যায়, তা মরুভূমিতে একবিন্দু জলের মতো।

  • শ্লোক: 37

    মাংস খাদতি ইতি মাংসঃ
    (মনু সংহিতা)
  • অনুবাদঃ- আমি এখন তোমাকে খাচ্ছি কিন্তু ভবিষ্যতে তুমি আমাকে হত্যা করে খেতে পারবে।

  • শ্লোক: 38

    ঘুটে পোড়ে গোবর হাসে
    (বাংলা প্রবাদ)
  • অনুবাদঃ- গোবরের শুকনো ঘুটে যখন আগুনে পোড়ে, কাঁচা নরম গোবর তখন হাসে।

  • শ্লোক: 39

    কমলদলজল, জীবন টলমল,
    (ভজহুঁ রে মন, শ্রীনন্দনন্দন ৩)
  • অনুবাদঃ- কমলদলের উপর এক বিন্দু জলের ন্যায় জীবন টলমল ।
    (গোবিন্দ দাস কবিরাজ গোস্বামী)

  • শ্লোক: 40

    ‘দ্বৈতে’ ভদ্রাভদ্র-জ্ঞান, সব—‘মনোধর্ম’ ।
    ‘এই ভাল, এই মন্দ’, -- এই সব ‘ভ্রম’ ।।
    (চৈঃ চঃ অন্তঃ ৪/১৭৬)
  • অনুবাদঃ- জড় জগতে ভাল ও মন্দের ধারণা হচ্ছে মনোধর্ম-প্রসূত। তাই, ‘এটি ভাল এবং এটি মন্দ’ এই ধারণাটি ভ্রান্ত।
    (সনাতন গোস্বামীর প্রতি শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুর উক্তি)

  • শ্লোক: 41

    অনাদি করম-ফলে, পড়ি’ ভবার্ণব-জলে,
    তরিবারে না দেখি উপায়।
    এ বিষয়-হলাহলে, দিবানিশি হিয়া জ্বলে,
    মন কভু সুখ নাহি পায় ।।
    (ভক্তিবিনোদ ঠাকুর, গীতাবলী)
  • অনুবাদঃ- আমার অতীত কর্মের ফলে আমি এখন অজ্ঞানতার সমুদে পতিত হয়েছি। এই সমুদ্র থেকে উত্তীর্ণ হওয়ার কোন উপায় দেখছি না। এই সমুদ্রটি বাস্তবিকই একটি বিষের সমুদ্রের মতো। আমরা ইন্দ্রিয়ভোগের মাধ্যমে সুখী হওয়ার চেষ্টা করছি, কিন্তু প্রকৃতপক্ষে এই ইন্দ্রিয়ভোগ হচ্ছে উত্তপ্ত খাদ্যের মতো যা হৃদয়ে জ্বালার সৃষ্টি করে।

  • শ্লোক: 42

    ভয়ং দ্বিতীয়াভিনিবেশতঃ স্যা-
    দীশাদপেতস্য বিপর্যয়োহস্মৃতিঃ ।
    তন্ময়য়াতো বুধ আভজেত্তং
    ভক্ত্যৈকয়েশং শুরুদেবতাত্মা ।।
    (ভাগবত ১১/২/৩৭)
  • অনুবাদঃ- জীব যখন শ্রীকৃষ্ণের বহিরঙ্গা শক্তি মায়ার দ্বারা আকৃষ্ট হয়, তখন তার ভয় উপস্থিত হয়। জড়া প্রকৃতির প্রভাবে পরমেশ্বর ভগবানের থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ার ফলে তার স্মৃতি বিপর্যয় হয়। অর্থাৎ, শ্রীকৃষ্ণের নিত্য দাস হওয়ার পরিবর্তে সে শ্রীকৃষ্ণের প্রতিযোগী হয়। এই ভ্রান্তি সংশোধন করার জন্য পণ্ডিত ব্যক্তি পরমেশ্বর ভগবানকে গুরুদেবরূপে, অর্চ্চা-বিগ্রহরূপে ও পরমাত্মারূপে ভজনা করেন।

  • শ্লোক: 43

    কামাদীনাং কতি ন কতিধা পালিতা দুর্নিদেশো-
    স্তেষাং জাতা ময়ি ন করুণা ন ত্রপা নোপশান্তিঃ ।
    উৎসৃজ্যৈতানথ যদুপতে সাম্প্রতং লব্ধবুদ্ধি-
    স্তামায়াতঃ শরণমভয়ং মাং নিযুঙ্ক্ষ্বাত্মদাস্যে ।।
    (ভঃ রঃ সিঃ ৩/২/৩৫, অপরাধভঞ্জন)
  • অনুবাদঃ- হে ভগবান! আমার কামনা-বাসনার অবাঞ্ছিত আদেশের কোন শেষ নেই। যদিও আমি তাদের অনেক সেবা করেছি, কিন্তু তারা আমাকে কোনই করুণা প্রদর্শন করেনি। তাদের সেবা করে আমি কখনও লজ্জিত হইনি। তাদের ত্যাগ করার বাসনাও আমি কখনও করিনি। হে প্রভু ! হে যদুপতি ! সম্প্রতি আমার বুদ্ধি জাগ্রত হয়েছে এবং আমি তাদের ত্যাগ করেছি। চিন্ময় বুদ্ধির ফলে আমি এখন এই সব বাসনার অবাঞ্ছিত আদেশ অমান্য করছি। এখন আমি আপনার অভয়চরণে শরণ নিতে এসেছি। অনুগ্রহ করে আপনার ব্যক্তিগত সেবায় আমাকে নিযুক্ত করুন। আমাকে উদ্ধার করুন।

  • শ্লোক: 44

    সংসার-দাবানল-লীঢ় লোক
    ত্রাণায় কারুণ্যঘনাঘনত্বম্ ।
    প্রাপ্তস্য কল্যাণ-গুণার্ণবস্য
    বন্দে গুরোঃ শ্রীচরণারবিন্দম্ ।।
    (বিশ্বনাথ চক্রবর্তী ঠাকুর, শ্রীশ্রীগুর্বষ্টক ১)
  • অনুবাদঃ- সংসার-দাবানল-সন্তপ্ত লোক সকলের পরিত্রাণের জন্য যিনি কারুণ্য-বারিবাহ তরলত্ব প্রাপ্ত হয়ে কৃপাবারি বর্ষণ করেন, আমি সেই কল্যাণ গুণনিধি শ্রীগুরুদেবের পাদপদ্ম বন্দনা করি।

  • শ্লোক: 45

    হয় ‘মায়াদাস’ করে নানা অভিলাষ ।
    (বাংলা গান)
  • অনুবাদঃ- মায়ার দাস হয়ে জীব নানা রকমের জড় অভিলাষে অভিভূত হয়ে পড়ে।

  • শ্লোক: 46

    আত্মবৎ মন্যতে জগৎ
    (অজ্ঞাত উৎস)
  • অনুবাদঃ- জড়-জাগতিক জীবনে প্রত্যেকেই মনে করে যে, অন্যদের অবস্থাও তার মতোই। (মানুষ মনে করে সকলেই বুঝি তার মতো চিন্তা করে। )

  • শ্লোক: 47

    সুখমৈন্দ্রিয়কং দৈত্যা দেহযোগেন দেহিনাম্ ।
    সর্বত্র লভ্যতে দৈবাদ্ যথা দুঃখমযত্নতঃ ।।
    (ভাগবত ৭/৬/৩)
  • অনুবাদঃ- হে আমার দৈত্যবন্ধুগণ ! বিভিন্ন প্রকার দেহের মাধ্যমে যে ইন্দ্রিয়জাত সুখ, তা পূর্ব কর্মফল অনুসারে যে কোন জীবদেহেই লাভ করা যায়। বিনা চেষ্টাতেই সেই দেহসুখ লাভ করা যায়, ঠিক যেমন বিনা চেষ্টাতেই আমরা দুঃখ লাভ করি।

  • (সূত্রঃ- বৈষ্ণব শ্লোকাবলী) এরপর দেখুন= আত্মা ও পরমাত্মা সম্পর্কে কিছু গুরুত্বপূর্ণ শ্লোক

  • Add_6

    আপনার পছন্দমত যে কোন ধরনের লেখা পোস্ট করতে পারেন। মানসম্মত লেখা নামসহ সাইটে স্থায়ীভাবে পাবলিশ করা হয়।

    সুনির্বাচিত শ্লোকঃ-

    * * * Anupamasite-এ আপনাকে স্বাগতম। আপনার পছন্দমত যে কোন ধরনের লেখা পোস্ট করতে এখানে ক্লিক করুন।   আপনাদের পোস্ট করা লেখাগুলো এই লিংকে আছে, দেখতে এখানে ক্লিক করুন। ধন্যবাদ * * *

    জ্ঞানই শক্তি ! তাই- আগে নিজে জানুন , শেয়ার করে প্রচারের মাধ্যমে অন্যকেও জানতে সাহায্য করুন।

    Say something

    Please enter name.
    Please enter valid email adress.
    Please enter your comment.