সনাতন ধর্মের সুনির্বাচিত বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ কিছু শ্লোকঃ-

জ্ঞান-ই শক্তি ! নিজের ধর্ম সম্পর্কে আগে ভালোভাবে জানুন এবং অন্যকেও জানতে উৎসাহিত করুন।

আপনার পছন্দমত যে কোন ধরনের লেখা পোস্ট করতে পারেন। মানসম্মত লেখা নামসহ সাইটে স্থায়ীভাবে পাবলিশ করা হয়।

বিবিধ গুরুত্বপূর্ণ আরও কিছু শ্লোক

  • শ্লোক: 51

    অত্যাহারঃ প্রয়াসশ্চ প্রজল্পো নিয়মাগ্রহঃ ।
    জনসঙ্গশ্চ লৌল্যঞ্চ ষড়্ ভির্ভক্তির্বিনশ্যতি ।।
    (উপদেশামৃত ২)
  • অনুবাদঃ- প্রয়োজনের অতিরিক্ত আহার গ্রহণ বা প্রয়োজনের অধিক অর্থ সঞ্চয়, পার্থিব সম্পদ লাভের জন্য অত্যধিক প্রচেষ্টা করা, কৃষ্ণবিহীন অনাবশ্যক গ্রাম্য-কথন, পারমার্থিক জীবনে উন্নতি লাভের জন্য প্রয়াস না করে শুধুমাত্র শাস্ত্রের নিয়ম-নীতিগুলি অনুসরণ করার জন্যই তাদের অনুশীলন করার প্রচেষ্টা, বা শাস্ত্রের নির্দেশ অমান্যপূর্বক ব্যক্তিগত খেয়াল বা ইচ্ছা অনুসারে কার্য সম্পাদন করার প্রচেষ্টা, কৃষ্ণ ভাবনাবিমুখ জড় বিষয়ী লোকের সঙ্গ করা, পার্থিব বিষয় লাভ করার বাসনায় ব্যাকুল হওয়া—কোন ব্যক্তি যখন উপরোক্ত ছয়টি দোষের দ্বারা আবদ্ধ হয়ে পড়ে, তখন তার পারমার্থিক জীবন বিনাশপ্রাপ্ত হয়।
    (শ্রীল রূপ গোস্বামী)

  • শ্লোক: 52

    উৎসাহান্নিশ্চয়াদ্ধৈর্যাৎ তত্তৎকর্মপ্রবর্তনাৎ ।
    সঙ্গত্যাগাৎ সতোবৃত্তেঃ ষড়্ ভির্ভক্তিঃ প্রসিধ্যতি ।।
    (উপদেশামৃত ৩)
  • অনুবাদঃ- ভক্তিযোগে ভগবানের শ্রীপাদপদ্মে সেবাকার্য সম্পাদন করার সময় অনুকূলে ছয়টি প্রধান নিয়ম বা বিধি বর্তমান আছে। যথা, সেবাকার্যে উৎসাহ, দৃঢ় বিশ্বাস বা সংকল্প, ধৈর্য ধারণ, নববিধা ভক্তির বিধি অনুসারে সেবাকার্য সম্পাদন, আসক্তি ও অসৎসঙ্গ ত্যাগ, পূর্বতন আচার্যবর্গের পদাঙ্ক অনুসরণ। এই ছয়টি বিধি অনুসারে পারমার্থিক জীবন যাপন করলে ভক্তিযোগে অবশ্যই সিদ্ধিলাভ করা যাবে।
    (শ্রীল রুপ গোস্বামী)

  • শ্লোক: 53

    কৃষ্ণভক্তিরসভাবিতা মতিঃ
    ক্রীয়তাং যদি কুতোহপি লভ্যতে ।
    তত্র লৌল্যমপি মূল্যমেকলং
    জন্মকোটিসুকৃতৈর্ন লভ্যতে ।।
    (রূপগোস্বামী, পদ্যাবলী-১৪)
  • অনুবাদঃ- কোটি কোটি জন্ম-জন্মান্তরের সুকৃতির দ্বারাও যা পাওয়া যায় না, অথচ লোভরূপ একটি মূল্য দিয়ে যা পাওয়া যায়, সেই কৃষ্ণভক্তি রসভাবিতা মতি যেখানেই পাও, অবিলম্বে তা ক্রয় করে নাও।

  • শ্লোক: 54

    সর্বোপাধিবিনির্মুক্তং তৎপরত্বেন নির্মলম্ ।
    হৃষীকেণ হৃষীকেশ-সেবনং ভক্তিরুচ্যতে ।।
    (নারদ পঞ্চরাত্র)
  • অনুবাদঃ- সমস্ত ইন্দ্রিয়ের দ্বারা ইন্দ্রিয়ের অধীশ্বর হৃষীকেশের সেবা করার নাম ভক্তি। এই সেবার দুটি ‘তটস্থ’ লক্ষণ—যথা, এই শুদ্ধ ভক্তি সমস্ত উপাধি থেকে মুক্ত এবং কেবল শ্রীকৃষ্ণের সেবায় যুক্ত হবার ফলে নির্মল ।

  • শ্লোক: 55

    অন্যাভিলাষিতাশূন্যং জ্ঞানকর্মাদ্যনাবৃতম্ ।
    আনুকূল্যেন কৃষ্ণানুশীলনং ভক্তিরুত্তমা ।।
    (ভঃ রঃ সিঃ ১/১/১১)
  • অনুবাদঃ- যখন উত্তমা ভক্তি জাগ্রত হয়, তখন ভক্তকে অবশ্যই সমস্ত জড় অভিলাষ, অদ্বৈত মায়াবাদ দর্শন এবং সকাম কর্মের বন্ধন থেকে মুক্ত হতে হবে। শ্রীকৃষ্ণের ইচ্ছার অনুকূলে ভক্তকে নিরন্তর সেবা অনুষ্ঠান করতে হবে।

  • শ্লোক: 56

    নাচতে উঠে ঘোমটা টানা
    (বাংলা প্রবাদ)
  • অনুবাদঃ- নাচার উদ্দেশ্যে মঞ্চে উঠে কোন মেয়ে যদি আত্মীয়স্বজনদের দেখে লজ্জায় ঘোমটা টানে, তা হাস্যকর।

  • শ্লোক: 57

    ন হি সুপ্তস্য সিংহস্য প্রবিশন্তি মুখে মৃগাঃ ।
    (হিতোপদেশ)
  • অনুবাদঃ- প্রত্যেকেকেই কাজ করতে হবে। এমন কি একটি সিংহও যদি এই প্রত্যাশা নিয়ে ঘুমিয়ে থাকে যে, তার মুখে হরিণ বা কোন পশু আপনা থেকেই প্রবেশ করবে, তা হলে তার খাদ্য জুটবে না।

  • শ্লোক: 58

    যজ্ঞো বৈ বিষ্ণুঃ
    (অজ্ঞাত উৎস)
  • অনুবাদঃ- ভগবান শ্রীবিষ্ণু আর যজ্ঞ হচ্ছে অভিন্ন ।

  • শ্লোক: 59

    গুরুমুখপদ্মবাক্য, চিত্তেতে করিয়া ঐক্য,
    আর না করিহ মনে আশা ।।
    (নরোত্তম দাস ঠাকুর, প্রেমভক্তিচন্দ্রিকা)
  • অনুবাদঃ- শ্রীগুরুদেবের মুখপদ্ম-নিঃসৃত উপদেশকে তোমার চিত্তের সঙ্গে ঐক্যবদ্ধ কর এবং অন্য আর কোন কিছুই আশা করো না ।

  • শ্লোক: 60

    ন মেহভক্তশ্চতুর্বেদী মদ্ভক্তঃ শ্বপচঃ প্রিয়ঃ ।
    তস্মৈ দেয়ং ততো গ্রাহ্যং স চ পূজ্যো যথা হ্যহম্ ।।
    (হরিভক্তিবিলাস ১০/১২৭)
  • অনুবাদঃ- যে ব্যক্তি আমার শুদ্ধ ভক্ত নয়, তিনি যদি চতুর্বেদীও হন, তিনি আমার প্রিয় নন। অপরপক্ষে জ্ঞান ও কর্মবাসনা থেকে মুক্ত একজন শুদ্ধ ভক্ত যদি চণ্ডাল কুলেও জাত হন, তিনি আমার প্রিয়। প্রকৃতপক্ষে তাঁকেই দান করতে হবে, তাঁর থেকেই উচ্ছিষ্ট প্রসাদ গ্রহণ করতে হবে এবং তাঁকে আমার মতোই পূজা করতে হবে।

  • শ্লোক: 61

    চক্ষুদান দিল যেই, জন্মে জন্মে প্রভু সেই,
    দিব্যজ্ঞান হৃদে প্রকাশিত ।
    (নরোত্তম দাস ঠাকুর, প্রেমভক্তিচন্দ্রিকা)
  • অনুবাদঃ- যিনি চক্ষুদান করলেন, তিনিই জন্মে জন্মে আমার প্রভু। তাঁরই কৃপার প্রভাবে দিব্যজ্ঞান হৃদয়ে প্রকাশিত হয়।

  • শ্লোক: 62

    সাক্ষাদ্ধরিত্বেন সমস্তশাস্ত্রৈ-
    রুক্তস্তথা ভাব্যত এব সদ্ভিঃ ।
    কিন্তু প্রভোর্যঃ প্রিয় এব তস্য
    বন্দে শুরোঃ শ্রীচরণারবিন্দম্ ।।
    (শ্রীল বিশ্বনাথ চক্রবর্তী ঠাকুর, গুর্বষ্টক-৭ )
  • অনুবাদঃ- নিখিলশাস্ত্র যাঁকে সাক্ষাৎ শ্রীহরির অভিন্ন-বিগ্রহরূপে কীর্তন করেছেন এবং সাধুগণও যাঁকে সেইরূপেই চিন্তা করে থাকেন, কিন্তু যিনি ভগবানের একান্ত প্রেষ্ঠ, সেই (ভগবানের অচিন্ত্য-ভেদাভেদ-প্রকাশ-বিগ্রহ) শ্রীগুরুদেবের পাদপদ্ম আমি বন্দনা করি।

  • শ্লোক: 63

    গোড়া ডিঙিয়ে ঘাস খাওয়া
    (বাংলা প্রবাদ)
  • অনুবাদঃ- ঘোড়া বা গরু যখন গোড়া বা বেষ্টনী ডিঙিয়ে ঘাস খাওয়ার চেষ্টা করে, তখন তাদের পা ভাঙার সম্ভাবনা থাকে। দ্রঃ শ্রীল প্রভুপাদ এই প্রবাদের মাধ্যমে বুঝাতে চেয়েছেন যে, গুরুকে ডিঙিয়ে কেউ কৃষ্ণকে লাভ করতে পারে না।

  • শ্লোক: 64

    যস্য প্রসাদাদ্ভগবদৎপ্রসাদো
    যস্যাপ্রসাদান্ন গতিঃ কুতোহপি ।
    ধ্যায়ংস্তুবংস্তস্য যশস্ত্রিসন্ধ্যং
    বন্দে গুরোঃ শ্রীচরণারবিন্দম্ ।।
    (শ্রীল বিশ্বনাথ চক্রবর্তী ঠাকুর, গুর্বষ্টক-৮)
  • অনুবাদঃ- একমাত্র যাঁর কৃপাতেই ভগবদ্-অনুগ্রহ লাভ হয় এবং যিনি অপ্রসন্ন হলে জীবের আর কোথাও গতি থাকে নাম, আমি ত্রিসন্ধ্যা সেই শ্রীগুরুদেবের কীর্তিসমূহ স্তব ও ধ্যান করতে করতে তাঁর পাদপদ্ম বন্দনা করি।

  • শ্লোক: 65

    সাধু-শাস্ত্র-গুরু-বাক্য, চিত্তেতে করিয়া ঐক্য,
    (নরোত্তম দাস ঠাকুর, প্রেমভক্তিচন্দ্রিকা-২) (আমরা যদি সাধু হতে চাই, তা হলে) আমাদের সাধু, শাস্ত্র ও গুরুর অনুসরণ করা উচিত।
  • অনুবাদঃ- (আমরা যদি সাধু হতে চাই, তা হলে) আমাদের সাধু, শাস্ত্র ও গুরুর অনুসরণ করা উচিত।

  • (সূত্রঃ- বৈষ্ণব শ্লোকাবলী) = বিবিধ গুরুত্বপূর্ণ আরও কিছু শ্লোক

  • Add_6

    আপনার পছন্দমত যে কোন ধরনের লেখা পোস্ট করতে পারেন। মানসম্মত লেখা নামসহ সাইটে স্থায়ীভাবে পাবলিশ করা হয়।

    সুনির্বাচিত শ্লোকঃ-

    * * * Anupamasite-এ আপনাকে স্বাগতম। আপনার পছন্দমত যে কোন ধরনের লেখা পোস্ট করতে এখানে ক্লিক করুন।   আপনাদের পোস্ট করা লেখাগুলো এই লিংকে আছে, দেখতে এখানে ক্লিক করুন। ধন্যবাদ * * *

    জ্ঞানই শক্তি ! তাই- আগে নিজে জানুন , শেয়ার করে প্রচারের মাধ্যমে অন্যকেও জানতে সাহায্য করুন।

    Say something

    Please enter name.
    Please enter valid email adress.
    Please enter your comment.