সনাতন ধর্মের সুনির্বাচিত বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ কিছু শ্লোকঃ-

জ্ঞান-ই শক্তি ! নিজের ধর্ম সম্পর্কে আগে ভালোভাবে জানুন এবং অন্যকেও জানতে উৎসাহিত করুন।

আপনার পছন্দমত যে কোন ধরনের লেখা পোস্ট করতে পারেন। মানসম্মত লেখা নামসহ সাইটে স্থায়ীভাবে পাবলিশ করা হয়।

ভক্তিমূলক সেবা সম্পর্কে কিছু গুরুত্বপূর্ণ শ্লোক

  • শ্লোক: 17

    মহাপ্রসাদে গোবিন্দে নামব্রহ্মণি বৈষ্ণবে ।
    স্বল্পপুণ্যবতাং রাজন্ বিশ্বাসো নৈব জায়তে ।।
    (মহাভারত এবং স্কন্দ পূরাণ)
  • অনুবাদঃ- হে রাজন্ ! স্বল্প পুণ্যবান ব্যক্তিদের কখনও মহাপ্রসাদে, শ্রীগোবিন্দে, হরিনাম-রূপ শব্দব্রহ্মে ও বৈষ্ণবে বিশ্বাস উৎপন্ন হয় না।

  • শ্লোক: 18

    'শ্রদ্ধা'-শব্দে- বিশ্বাস কহে সুদৃঢ় নিশ্চয় ।
    কৃষ্ণে ভক্তি কৈলে সর্বকর্ম কৃত হয় ।।
    (চৈঃ চঃ মধ্য ২২/৬২)
  • অনুবাদঃ- কৃষ্ণভক্তি সম্পাদিত হলে অন্য সমস্ত কর্ম আপনা থেকেই সম্পাদিত হয়ে যায়। এই সুদৃঢ় বিশ্বাসকে বলা হয় শ্রদ্ধা।

  • শ্লোক: 19

    যস্য দেবে পরা ভক্তির্যথা দেবে তথা গুরৌ।
    তস্যৈতে কথিতা হ্যর্থাঃ প্রকাশন্তে মহাত্মনঃ ।।
    (শ্বেতাশ্বতর উপঃ ৬/৩৮)
  • অনুবাদঃ- সেই সব মহাত্মাগণ, যাঁদের গুরু ও ভগবানে পরা ভক্তি রয়েছে, কেবল তাঁদের কাছেই বৈদিক জ্ঞানের সমস্ত তাৎপর্য স্বতঃই প্রকাশিত হয়।

  • শ্লোক: 20

    অশ্রদ্দধানাঃ পুরুষাঃ ধর্মস্যাস্য পরন্তপ ।
    অপ্রাপ্য মাং নিবর্তন্তে মৃত্যুসংসারবর্ত্মনি ॥
    (গীতা ৯/৩)
  • অনুবাদঃ- হে পরন্তপ ! এই ভগবদ্ভক্তিতে যাদের শ্রদ্ধা উদিত হয়নি, তারা আমাকে লাভ করতে পারে না ৷ তাই তারা এই জড় জগতে জন্ম-মৃত্যুর পথে ফিরে আসে।

  • শ্লোক: 21

    আদৌ শ্রদ্ধা ততঃ সাধুসঙ্গোহথ ভজনক্রিয়া।
    ততোহনর্থনিবৃত্তিঃ স্যাৎ ততো নিষ্ঠা রুচিস্ততঃ ।।
    অথাসক্তিস্ততো ভাবস্ততঃ প্রেমাভ্যুদঞ্চতি ।
    সাধকানাময়ং প্রেমণঃ প্রাদুর্ভাবে ভবেৎ ক্রমঃ ।।
    (ভঃ রঃ সিঃ ১/৪/১৫-১৬)
  • অনুবাদঃ- প্রথমে শ্রদ্ধা, তা থেকে সাধুসঙ্গ, তা থেকে ভজনক্রিয়া, তা থেকে অনর্থ নিবৃত্তি, পরে নিষ্ঠা, তা থেকে রুচি ও আসক্তি- এই পর্যন্ত সাধন ভক্তি। তা থেকে ক্রমশ ভাব এবং অবশেষে প্রেম উদিত হয়। সাধকদের প্রেমোদয়ের এটিই ক্রম।

  • শ্লোক: 22

    যদবধি মম চেতঃ কৃষ্ণপদারবিন্দে
    নবনবরসধামন্যুদ্যতং রন্তমাসীৎ ।
    তদবধি বত নারীসঙ্গমে স্মর্যমানে
    ভবতি মুখবিকারঃ সুষ্ঠু নিষ্ঠীবনং চ ।।
    (ভক্তিরসামৃতসিন্ধু)
  • অনুবাদঃ- যেদিন থেকে আমার মন শ্রীকৃষ্ণের প্রতি দিব্য ভক্তিমূলক সেবায় নিযুক্ত হয়েছে এবং তাঁর মধ্যে নব নব রস আস্বাদন করতে শুরু করেছে, সেদিন থেকেই যখনই আমি জঘন্য যৌন সুখের কথা ভাবি, তখনই বিরক্তিতে আমার মুখ বিকৃত হয় এবং সেই জঘন্য চিন্তার উদ্দেশ্যে আমি থুথু ফেলি।

  • শ্লোক: 23

    অনন্যাশ্চিন্তয়ন্তো মাং যে জনাঃ পর্যুপাসতে।
    তেষাং নিত্যাভিযুক্তানাং যোগক্ষেমং বহাম্যহম্ ॥
    (গীতা ৯/২২)
  • অনুবাদঃ- অনন্য চিত্তে আমার চিন্তায় মগ্ন হয়ে, পরিপূর্ণ ভক্তি সহকারে যাঁরা সর্বদাই আমার উপাসনা করেন, তাঁদের সমস্ত অপ্রাপ্ত বস্তু আমি বহন করি এবং তাঁদের প্রাপ্ত বস্তুর সংরক্ষণ করি।

  • শ্লোক: 24

    ওঁ অপবিত্রঃ পবিত্রো বা সর্বাবস্থাং গতোহপি বা।
    যঃ স্মরেৎ পুণ্ডরীকাক্ষং স বাহ্যাভ্যন্তরঃ শুচিঃ ।।
    (গরুড় পুরাণ)
  • অনুবাদঃ- অপবিত্র হোক বা পবিত্র হোক, জড়-জাগতিক জীবনের সকল অবস্থা অতিক্রম করেও কেউ যদি কমললোচন শ্রীকৃষ্ণকে স্মরণ করেন, তা হলে অন্তরে ও বাইরে শুচিতা লাভ করেন।

  • শ্লোক: 25

    অনন্যচেতাঃ সততং যো মাং স্মরতি নিত্যশঃ ।
    তস্যাহং সুলভঃ পার্থ নিত্যযুক্তস্য যোগিনঃ ॥
    (গীতা ৮/১৪)
  • অনুবাদঃ- হে পার্থ ! যিনি একাগ্রচিত্তে কেবল আমাকেই নিরন্তর স্মরণ করেন, আমি সেই নিত্যযুক্ত ভক্তযোগীর কাছে সুলভ হই।

  • শ্লোক: 26

    মন্মনা ভব মদ্ভক্তো মদ্ যাজী মাং নমস্কুরু ।
    মামেবৈষ্যসি যুক্ত্বৈবমাত্মানং মৎপরায়ণঃ ॥
    (গীতা ৯/৩৪)
  • অনুবাদঃ- তোমার মনকে আমার ভাবনায় নিযুক্ত কর, আমার ভক্ত হও, আমাকে প্রণাম কর এবং আমার পূজা কর। এভাবেই মৎপরায়্ণ হয়ে সম্পূর্ণরূপে আমাতে অভিনিবিষ্ট হলে, নিঃসন্দেহে তুমি আমাকে লাভ করবে।

  • শ্লোক: 27

    মন্মনা ভব মদ্ভক্তো মদ্ যাজী মাং নমস্কুরু ।
    মামেবৈষ্যসি সত্যং তে প্রতিজানে প্রিয়োহসি মে ॥
    (গীতা ১৮/৬৫)

  • অনুবাদঃ- তুমি আমাতে চিত্ত অর্পণ কর, আমার ভক্ত হও, আমার পূজা কর এবং আমাকে নমস্কার কর। তা হলে তুমি আমাকে অবশ্যই প্রাপ্ত হবে ৷এই জন্য আমি তোমার কাছে সত্যই প্রতিজ্ঞা করছি, যেহেতু তুমি আমার অত্যন্ত প্রিয়।

  • শ্লোক: 28

    তস্মাদ্ভারত সর্বাত্মা ভগবানীশ্বরো হরিঃ ।
    শ্রোতব্যঃ কীর্তিতব্যশ্চ স্মর্তব্যশ্চেচ্ছতাভয়ম্ ।।
    (ভাগবত ২/১/৫)
  • অনুবাদঃ- হে ভারত! সমস্ত দুঃখ-দুঃর্দশা থেকে যে মুক্ত হওয়ার বাসনা করে, তাকে অবশ্যই পরমাত্মা, পরম নিয়ন্তা এবং সমস্ত দুঃখ হরণকারী পরমেশ্বর ভগবানের কথা শ্রবণ, কীর্তন ও স্মরণ করতে হবে।

  • শ্লোক: 29

    শ্রীবিষ্ণোঃ শ্রবণে পরীক্ষিদভবদ্বৈয়াসকিঃ কীর্তনে
    প্রহ্লাদঃ স্মরণে তদঙ্ঘ্রিভজনে লক্ষ্মীঃ পৃথুঃ পূজনে।
    অক্রুরস্ত্বভিবন্দনে কপিপতির্দাস্যেহথ সখ্যেহর্জুনঃ
    সর্বস্বাত্মনিবেদনে বলিরভূৎ কৃষ্ণাপ্তিরেষাং পরা ।।
    (ভঃ রঃ সিঃ ১/২/২৬৫)
  • অনুবাদঃ- শ্রীবিষ্ণুর কথা শ্রবণে মহারাজ পরীক্ষিৎ, কীর্তনে শুকদেব গোস্বামী, স্মরণে প্রহ্লাদ মহারাজ, তাঁর শ্রীপাদপদ্মের সেবায় লক্ষ্মীদেবী, তাঁর পূজনে পৃথু মহারাজ, তাঁর অভিবন্দনে অক্রুর, তাঁর দাস্যে কপিপতি হনুমান, তাঁর সখ্যে অর্জুন, তাঁর কাছে আত্মনিবেদন করার মাধ্যমে বলি মহারাজ, এভাবেই এঁরা সকলে শ্রীকৃষ্ণের শ্রীপাদপদ্মের আশ্রয় লাভ করেছিলেন।

  • শ্লোক: 30

    যেন তেন প্রকারেণ মনঃ কৃষ্ণে নিবেশয়েৎ ।
    সর্বে বিধিনিষেধাস্যুরেতয়োরেব কিঙ্করাঃ ।।
    (রূপ গোস্বামী)
  • অনুবাদঃ- যে কোনভাবে হোক মনকে শ্রীকৃষ্ণের পাদপদ্মে নিবিষ্ট করা উচিত। শাস্ত্রের সমস্ত বিধি-নিষেধ এর অনুগত।

  • (সূত্রঃ- বৈষ্ণব শ্লোকাবলী) এরপর দেখুন= ভক্তিমূলক সেবা সম্পর্কে আরও কিছু গুরুত্বপূর্ণ শ্লোক

  • Add_6

    আপনার পছন্দমত যে কোন ধরনের লেখা পোস্ট করতে পারেন। মানসম্মত লেখা নামসহ সাইটে স্থায়ীভাবে পাবলিশ করা হয়।

    সুনির্বাচিত শ্লোকঃ-

    * * * Anupamasite-এ আপনাকে স্বাগতম। আপনার পছন্দমত যে কোন ধরনের লেখা পোস্ট করতে এখানে ক্লিক করুন।   আপনাদের পোস্ট করা লেখাগুলো এই লিংকে আছে, দেখতে এখানে ক্লিক করুন। ধন্যবাদ * * *

    জ্ঞানই শক্তি ! তাই- আগে নিজে জানুন , শেয়ার করে প্রচারের মাধ্যমে অন্যকেও জানতে সাহায্য করুন।