সনাতন ধর্মের সুনির্বাচিত বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ কিছু শ্লোকঃ-

জ্ঞান-ই শক্তি ! নিজের ধর্ম সম্পর্কে আগে ভালোভাবে জানুন এবং অন্যকেও জানতে উৎসাহিত করুন।

আপনার পছন্দমত যে কোন ধরনের লেখা পোস্ট করতে পারেন। মানসম্মত লেখা নামসহ সাইটে স্থায়ীভাবে পাবলিশ করা হয়।

ভক্তিরসামৃত সিন্ধু থেকে কিছু গুরুত্বপূর্ণ শ্লোক


  • শ্লোক: 1

    ক্ষান্তিরব্যর্থকালত্বং বিরক্তির্মানশূন্যতা।
    আশাবন্ধঃ সমুৎকণ্ঠা নামগানে সদা রূচিঃ ।।
    আসক্তিস্তদ্ গুণাখ্যানে প্রীতিস্তদ্বসতিস্থলে।
    ইত্যাদয়োহনুভাবাঃ স্যুর্জাতভাবাঙ্কুরে জনে।।
    ভক্তিরসামৃতসিন্ধু ১/৩/২৫-২৬)
  • অনুবাদঃ- শ্রীকৃষ্ণের প্রতি ভাবের অঙ্কুর যাঁর বিকশিত হয়েছে, তাঁর ব্যবহারে নিম্নোক্ত নয়টি লক্ষণ প্রকাশ পায়- ক্ষমাশীলতা, সময় যাতে বৃথা না যায় সেই চিন্তা, ভোগে বিরক্তি, মিথ্যা অহংকার শূন্যতা, আশাবন্ধন, উৎকণ্ঠা, ভগবানের পবিত্র নামগানে রূচি, ভগবানের দিব্য গুণ আখ্যানে আসক্তি এবং ভগবানের বসতিস্থলে অর্থাৎ মন্দির বা বৃন্দাবনাদি তীর্থে প্রীতি। এগুলিকে অনুভাব বলা হয়, অর্থাৎ এগুলি হচ্ছে ভাবের অধীনস্থ লক্ষণ। যে ব্যক্তির হৃদয়ে ভাবের অঙ্কুর জাত হয়েছে, এই সমস্ত লক্ষণগুলি তাঁর মধ্যে প্রকাশিত হয়।


  • শ্লোক: 2

    ঈহা যস্য হরের্দাস্যে কর্মণা মনসা গিরা ।
    নিখিলাস্বপ্যবস্থাসু জীবন্মুক্ত স উচ্যতে ।।
    (ভঃ রঃ সিঃ ১/২/১৮৭)
  • অনুবাদঃ- যিনি তাঁর দেহ, মন ও বাক্য দিয়ে ভগবান শ্রীহরির দিব্য সেবায় নিযুক্ত আছেন, তিনি এই জড় জগতে থাকা কালেও সর্ব অবস্থাতেই মুক্ত থাকেন। তাঁকে জীবন্মুক্ত বলা হয়।


  • শ্লোক: 3

    আদৌ শ্রদ্ধা ততঃ সাধুসঙ্গোহথ ভজনক্রিয়া।
    ততোহনর্থনিবৃত্তিঃ স্যাৎ ততো নিষ্ঠা রুচিস্ততঃ ।।
    অথাসক্তিস্ততো ভাবস্ততঃ প্রেমাভ্যুদঞ্চতি ।
    সাধকানাময়ং প্রেমণঃ প্রাদুর্ভাবে ভবেৎ ক্রমঃ ।।
    (ভঃ রঃ সিঃ ১/৪/১৫-১৬)
  • অনুবাদঃ- প্রথমে শ্রদ্ধা, তা থেকে সাধুসঙ্গ, তা থেকে ভজনক্রিয়া, তা থেকে অনর্থ নিবৃত্তি, পরে নিষ্ঠা, তা থেকে রুচি ও আসক্তি- এই পর্যন্ত সাধন ভক্তি। তা থেকে ক্রমশ ভাব এবং অবশেষে প্রেম উদিত হয়। সাধকদের প্রেমোদয়ের এটিই ক্রম।


  • শ্লোক: 4

    যদবধি মম চেতঃ কৃষ্ণপদারবিন্দে
    নবনবরসধামন্যুদ্যতং রন্তমাসীৎ ।
    তদবধি বত নারীসঙ্গমে স্মর্যমানে
    ভবতি মুখবিকারঃ সুষ্ঠু নিষ্ঠীবনং চ ।।
    (ভক্তিরসামৃতসিন্ধু)
  • অনুবাদঃ- যেদিন থেকে আমার মন শ্রীকৃষ্ণের প্রতি দিব্য ভক্তিমূলক সেবায় নিযুক্ত হয়েছে এবং তাঁর মধ্যে নব নব রস আস্বাদন করতে শুরু করেছে, সেদিন থেকেই যখনই আমি জঘন্য যৌন সুখের কথা ভাবি, তখনই বিরক্তিতে আমার মুখ বিকৃত হয় এবং সেই জঘন্য চিন্তার উদ্দেশ্যে আমি থুথু ফেলি।


  • শ্লোক: 5

    শ্রীবিষ্ণোঃ শ্রবণে পরীক্ষিদভবদ্বৈয়াসকিঃ কীর্তনে
    প্রহ্লাদঃ স্মরণে তদঙ্ঘ্রিভজনে লক্ষ্মীঃ পৃথুঃ পূজনে।
    অক্রুরস্ত্বভিবন্দনে কপিপতির্দাস্যেহথ সখ্যেহর্জুনঃ
    সর্বস্বাত্মনিবেদনে বলিরভূৎ কৃষ্ণাপ্তিরেষাং পরা ।।
    (ভঃ রঃ সিঃ ১/২/২৬৫)
  • অনুবাদঃ- শ্রীবিষ্ণুর কথা শ্রবণে মহারাজ পরীক্ষিৎ, কীর্তনে শুকদেব গোস্বামী, স্মরণে প্রহ্লাদ মহারাজ, তাঁর শ্রীপাদপদ্মের সেবায় লক্ষ্মীদেবী, তাঁর পূজনে পৃথু মহারাজ, তাঁর অভিবন্দনে অক্রুর, তাঁর দাস্যে কপিপতি হনুমান, তাঁর সখ্যে অর্জুন, তাঁর কাছে আত্মনিবেদন করার মাধ্যমে বলি মহারাজ, এভাবেই এঁরা সকলে শ্রীকৃষ্ণের শ্রীপাদপদ্মের আশ্রয় লাভ করেছিলেন।


  • শ্লোক: 6

    অতঃ শ্রীকৃষ্ণনামাদি ন ভবেদ্গ্রাহ্যমিন্দ্রিয়ৈঃ ।
    সেবোন্মুখে হি জিহ্বাদৌ স্বয়মেব স্ফুরত্যদঃ ।।
    (পদ্ম পুরাণ, ভঃ রঃ সিঃ ১/২/২৩৪)
  • অনুবাদঃ- অতএব শ্রীকৃষ্ণের নাম-রূপ-লীলা কখনও প্রাকৃত চক্ষু, কর্ণ আদির গ্রাহ্য নয়। জীব যখন সেবোন্মুখ হন অর্থাৎ চিৎ-স্বরূপে কৃষ্ণোন্মুখ হন, তখনই অপ্রাকৃত জিহ্বা আদি ইন্দ্রিয়ে কৃষ্ণনাম আদি স্বয়ংই স্ফূর্তি লাভ করে।


  • শ্লোক: 7

    অনাসক্তস্য বিষয়ান্ যথার্হমুপযুঞ্জতঃ।
    নির্বদ্ধঃ কৃষ্ণসম্বন্ধে যুক্তং বৈরাগ্যমুচ্যতে ।।
    প্রাপঞ্চিকতয়া বুদ্ধ্যা হরিসম্বন্ধিবস্তুনঃ ।
    মুমুক্ষুভিঃ পরিত্যাগো বৈরাগ্যং ফল্গু কথ্যতে ।।
    (ভঃ রঃ সিঃ ১/২/২৫৫-৬)
  • অনুবাদঃ- কেউ যখন বিষয়ে অনাসক্ত হয়েও কৃষ্ণসেবার জন্য সব কিছু গ্রহণ করেন, তিনিই প্রকৃত বৈরাগ্যে স্থিত হয়েছেন। অপরপক্ষে, যিনি সমস্ত বস্তুর সঙ্গেই যে কৃষ্ণের সম্পর্ক রয়েছে, তা না জেনে সব কিছুই ত্যাগ করেন, তিনি পূর্ণ বৈরাগ্য লাভ করতে পারেননি।


  • শ্লোক: 8

    অন্যাভিলাষিতাশূন্যং জ্ঞানকর্মাদ্যনাবৃতম্ ।
    আনুকূল্যেন কৃষ্ণানুশীলনং ভক্তিরুত্তমা ।।
    (ভঃ রঃ সিঃ ১/১/১১)
  • অনুবাদঃ- যখন উত্তমা ভক্তি জাগ্রত হয়, তখন ভক্তকে অবশ্যই সমস্ত জড় অভিলাষ, অদ্বৈত মায়াবাদ দর্শন এবং সকাম কর্মের বন্ধন থেকে মুক্ত হতে হবে। শ্রীকৃষ্ণের ইচ্ছার অনুকূলে ভক্তকে নিরন্তর সেবা অনুষ্ঠান করতে হবে।


  • শ্লোক: 9

    কৃষ্ণার্থে অখিল চেষ্টা
    (ভঃ রঃ সিঃ)
  • অনুবাদঃ- শুধুমাত্র শ্রীকৃষ্ণকে সন্তুষ্ট করার জন্যই আমাদের সমস্ত প্রচেষ্টা নিয়োজিত হওয়া উচিত।


  • শ্লোক: 10

    কামাদীনাং কতি ন কতিধা পালিতা দুর্নিদেশো-
    স্তেষাং জাতা ময়ি ন করুণা ন ত্রপা নোপশান্তিঃ ।
    উৎসৃজ্যৈতানথ যদুপতে সাম্প্রতং লব্ধবুদ্ধি-
    স্তামায়াতঃ শরণমভয়ং মাং নিযুঙ্ক্ষ্বাত্মদাস্যে ।।
    (ভঃ রঃ সিঃ ৩/২/৩৫, অপরাধভঞ্জন)
  • অনুবাদঃ- হে ভগবান! আমার কামনা-বাসনার অবাঞ্ছিত আদেশের কোন শেষ নেই। যদিও আমি তাদের অনেক সেবা করেছি, কিন্তু তারা আমাকে কোনই করুণা প্রদর্শন করেনি। তাদের সেবা করে আমি কখনও লজ্জিত হইনি। তাদের ত্যাগ করার বাসনাও আমি কখনও করিনি। হে প্রভু ! হে যদুপতি ! সম্প্রতি আমার বুদ্ধি জাগ্রত হয়েছে এবং আমি তাদের ত্যাগ করেছি। চিন্ময় বুদ্ধির ফলে আমি এখন এই সব বাসনার অবাঞ্ছিত আদেশ অমান্য করছি। এখন আমি আপনার অভয়চরণে শরণ নিতে এসেছি। অনুগ্রহ করে আপনার ব্যক্তিগত সেবায় আমাকে নিযুক্ত করুন। আমাকে উদ্ধার করুন।

  • (সূত্রঃ- বৈষ্ণব শ্লোকাবলী) এরপর দেখুন= মহাভারতের বা অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ কিছু শ্লোক

  • Add_6

    আপনার পছন্দমত যে কোন ধরনের লেখা পোস্ট করতে পারেন। মানসম্মত লেখা নামসহ সাইটে স্থায়ীভাবে পাবলিশ করা হয়।

    সুনির্বাচিত শ্লোকঃ-

    * * * Anupamasite-এ আপনাকে স্বাগতম। আপনার পছন্দমত যে কোন ধরনের লেখা পোস্ট করতে এখানে ক্লিক করুন।   আপনাদের পোস্ট করা লেখাগুলো এই লিংকে আছে, দেখতে এখানে ক্লিক করুন। ধন্যবাদ * * *

    জ্ঞানই শক্তি ! তাই- আগে নিজে জানুন , শেয়ার করে প্রচারের মাধ্যমে অন্যকেও জানতে সাহায্য করুন।

    Say something

    Please enter name.
    Please enter valid email adress.
    Please enter your comment.