সনাতন ধর্মের সুনির্বাচিত বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ কিছু শ্লোকঃ-

জ্ঞান-ই শক্তি ! নিজের ধর্ম সম্পর্কে আগে ভালোভাবে জানুন এবং অন্যকেও জানতে উৎসাহিত করুন।

আপনার পছন্দমত যে কোন ধরনের লেখা পোস্ট করতে পারেন। মানসম্মত লেখা নামসহ সাইটে স্থায়ীভাবে পাবলিশ করা হয়।

ভক্ত ও ভক্ত সম্বন্ধীয়ঃ আরও কিছু গুরুত্বপূর্ণ শ্লোক

  • শ্লোক: 19

    ন চ তস্মান্মনুষ্যেষু কশ্চিন্মে প্রিয়কৃত্তমঃ ।
    ভবিতা ন চ মে তস্মাদন্যঃ প্রিয়তরো ভুবি ।
    (গীতা ১৮/৬৯)
  • অনুবাদঃ- এই পৃথিবীতে মানুষদের মধ্যে তাঁর থেকে অধিক প্রিয়কারী আমার কেউ নেই এবং তাঁর থেকে অন্য কেউ আমার প্রিয়্তর হবে না।

  • শ্লোক: 20

    মৎচ্চিত্তা মদ্ গতপ্রাণা বোধয়ন্তঃ পরস্পরম্ ।
    কথয়ন্তশ্চ মাং নিত্যং তুষ্যন্তি চ রমন্তি চ ॥
    (গীতা ১0/৯)
  • অনুবাদঃ- যাঁদের চিত্ত ও প্র্রাণ সম্পূর্ণরূপে আমাতে সমর্পিত, তাঁরা পরস্পরের মধ্যে আমার কথা সর্বদাই আলাচনা করে এবং আমার সম্বন্ধে পরস্পরকে বুঝিয়ে পরম সন্তোষ ও অপ্রাকৃত আনন্দ লাভ করেন।

  • শ্লোক: 21

    তিতিক্ষবঃ কারুণিকাঃ সুহৃদঃ সর্বদেহিনাম্ ।
    অজাতশত্রবঃ শান্তাঃ সাধবঃ সাধুভূষণাঃ ।।
    (ভাগবত ৩/২৫/২১)
  • অনুবাদঃ- ভগবদ্ভক্ত সর্বদাই সহিষ্ণু, অত্যন্ত কৃপা পরায়ণ, সর্বজীবের সুহৃদ, শাস্ত্রানুগ, অজাতশত্রু, শান্ত - এই সকল গুণাবলী সাধুর ভূষণস্বরূপ।

  • শ্লোক: 22

    মৎচ্চিত্তা মদ্ গতপ্রাণা বোধয়ন্তঃ পরস্পরম্ ।
    কথয়ন্তশ্চ মাং নিত্যং তুষ্যন্তি চ রমন্তি চ (গীতা ১০/৯)
  • অনুবাদঃ- যাঁদের চিত্ত ও প্র্রাণ সম্পূর্ণরূপে আমাতে সমর্পিত, তাঁরা পরস্পরের মধ্যে আমার কথা সর্বদাই আলাচনা করে এবং আমার সম্বন্ধে পরস্পরকে বুঝিয়ে পরম সন্তোষ ও অপ্রাকৃত আনন্দ লাভ করেন।

  • শ্লোক: 23

    চতুর্বিধা ভজন্তে মাং জনাঃ সুকৃতিনোহর্জুন ।
    আর্তো জিজ্ঞাসুরর্থার্থী জ্ঞানী চ ভরতর্ষভ ।।
    (গীতা ৭/১৬)
  • অনুবাদঃ- হে ভরতশ্রেষ্ঠ অর্জুন ! আর্ত, অর্থাথী, জিজ্ঞাসু ও জ্ঞানী- এই চার প্রকার পুণ্যকর্মা ব্যক্তিগণ আমার ভজনা করেন।

  • শ্লোক: 24

    কৃষ্ণভক্ত- নিষ্কাম, অতএব 'শান্ত' ।
    ভুক্তি-মুক্তি-সিদ্ধি-কামী-- সকলি 'অশান্ত' ।।
    (চৈঃ চঃ মধ্য ১৯/১৪৯)
  • অনুবাদঃ- কৃষ্ণভক্ত নিষ্কাম বলেই শান্ত। সকাম কর্মীরা জড় ভোগ কামনা করেন, জ্ঞানীরা মুক্তি কামনা করেন, আর যোগীরা জড়-জাগতিক সিদ্ধি কামনা করেন। তাই এরা সকলেই কামার্ত ও অশান্ত।

  • শ্লোক: 25

    যৎপাদসংশ্রয়াঃ সূত মুনয়ঃ প্রশমায়নাঃ ।
    সদ্যঃ পুনন্ত্ত্যপস্পৃষ্টাঃ স্বর্ধুন্যাপহনুসেবয়া ।।
    (ভাগবত ১/১/১৫)
  • অনুবাদঃ- হে সূত গোস্বামী ! যে সমস্ত মহর্ষিরা সর্বতোভাবে পরমেশ্বর ভগবানের শ্রীপাদপদ্মের আশ্রয় গ্রহণ করেছেন, তাঁদের সঙ্গ প্রভাবে অর্থাৎ দর্শন মাত্রই জীব পবিত্র হয়, কিন্তু সুরধনী গঙ্গার জল সাক্ষাৎ সেবা অর্থাৎ স্পর্শন, অবগাহন আদি করার পরেই কেবল মানুষকে পবিত্র করে।

  • শ্লোক: 26

    ন ধনং ন জনং ন সুন্দরীং
    কবিতাং বা জগদীশ কাময়ে ।
    মম জন্মনি জন্মনীশ্বরে
    ভবতাদ্ভক্তিরহৈতুকী ত্বয়ি ।।
    (শিক্ষাষ্টক ৪)
  • অনুবাদঃ- হে জগদীশ ! আমি ধন, জন, সুন্দরী স্ত্রী অথবা সকাম কর্ম কামনা করি না। আমি কেবল এই কামনা করি যে, জন্ম-জন্মান্তরে যেন আমি তোমার প্রতি অহৈতুকী ভক্তি লাভ করতে পারি।

  • শ্লোক: 27

    ক্ষান্তিরব্যর্থকালত্বং বিরক্তির্মানশূন্যতা।
    আশাবন্ধঃ সমুৎকণ্ঠা নামগানে সদা রূচিঃ ।।
    আসক্তিস্তদ্ গুণাখ্যানে প্রীতিস্তদ্বসতিস্থলে।
    ইত্যাদয়োহনুভাবাঃ স্যুর্জাতভাবাঙ্কুরে জনে।।
    ভক্তিরসামৃতসিন্ধু ১/৩/২৫-২৬)
  • অনুবাদঃ- শ্রীকৃষ্ণের প্রতি ভাবের অঙ্কুর যাঁর বিকশিত হয়েছে, তাঁর ব্যবহারে নিম্নোক্ত নয়টি লক্ষণ প্রকাশ পায়- ক্ষমাশীলতা, সময় যাতে বৃথা না যায় সেই চিন্তা, ভোগে বিরক্তি, মিথ্যা অহংকার শূন্যতা, আশাবন্ধন, উৎকণ্ঠা, ভগবানের পবিত্র নামগানে রূচি, ভগবানের দিব্য গুণ আখ্যানে আসক্তি এবং ভগবানের বসতিস্থলে অর্থাৎ মন্দির বা বৃন্দাবনাদি তীর্থে প্রীতি। এগুলিকে অনুভাব বলা হয়, অর্থাৎ এগুলি হচ্ছে ভাবের অধীনস্থ লক্ষণ। যে ব্যক্তির হৃদয়ে ভাবের অঙ্কুর জাত হয়েছে, এই সমস্ত লক্ষণগুলি তাঁর মধ্যে প্রকাশিত হয়।

  • শ্লোক: 28

    যত্র যোগেশ্বরঃ কৃষ্ণো যত্র পার্থো ধনুর্ধরঃ ।
    তত্র শ্রীর্বিজয়ো ভূতির্ধ্রুবা নীতির্মতির্মম ॥৭৮॥
    (গীতা ১৮/৭৮)
  • অনুবাদঃ- যেখানে যোগেশ্বর শ্রীকৃষ্ণ এবং যেখানে ধনুর্ধর পার্থ, সেখানেই নিশ্চিতভাবে শ্রী, বিজয়, অসাধারণ শক্তি ও নীতি বর্তমান থাকে৷ সেটিই আমার অভিমত।

  • শ্লোক: 29

    বয়ং তু ন বিতৃপ্যাম উত্তমঃশ্লোকবিক্রমে।
    যচ্ছৃণ্বতাং রসজ্ঞানাং স্বাদু স্বাদু পদে পদে ।।
    (ভাগবত ১/১/১৯)
  • অনুবাদঃ- উত্তম শ্লোকের দ্বারা বন্দিত হন যে পরমেশ্বর ভগবান, তাঁর অপ্রাকৃত লীলাকথা যতই আমরা শ্রবণ করি না কেন, আমাদের তৃপ্তি হবে না। যাঁরা তাঁর সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত হয়ে অপ্রাকৃত রস আস্বাদন করেছেন, তাঁরা নিরন্তর তাঁর লীলাবিলাসের রস আস্বাদন করেন।

  • শ্লোক: 30

    যাঁর চিত্তে কৃষ্ণপ্রেমা করয়ে উদয়।
    তাঁর বাক্য, ক্রিয়া, মুদ্রা বিজ্ঞেহ না বুঝয় ।।
    চৈঃ চঃ মধ্য ২৩/৩৯)
  • অনুবাদঃ- যাঁর চিত্তে কৃষ্ণপ্রেমের উদয় হয়, তাঁর কথাবার্তা, কার্যকলাপ এবং আচার-আচরণ বিজ্ঞেরাও বুঝতে পারেন না।

  • শ্লোক: 31

    যুগায়িতং নিমেষেন চক্ষুষা প্রাবৃষায়িতম্ ।
    শূন্যায়িতং জগৎ সর্বং গোবিন্দবিরহেণ মে।।
    (শিক্ষাষ্টকম- ৭)
  • অনুবাদঃ- হে গোবিন্দ! তোমার অদর্শনে আমার এক নিমেষকে এক যুগ বলে মনে হচ্ছে। চক্ষু থেকে বর্ষার ধারার মতো অশ্রুধারা ঝরে পড়ছে এবং সমস্ত জগৎ শূন্য বলে মনে হচ্ছে।

  • শ্লোক: 32

    আশ্লিষ্য বা পাদরতাং পিনষ্টু মা-
    মদর্শনান্মর্মহতাং করোতু বা।
    যথা তথা বা বিদধাতু লম্পটো
    মৎ প্রাণনাথস্তু স এব নাপরঃ ।।
    (শিক্ষাষ্টকম-৮)
  • অনুবাদঃ- এই পাদরতা দাসীকে কৃষ্ণ আলিঙ্গনপূর্বক পেষণ করুক অথবা দেখা না দিয়ে মর্মাহতই করুক, সেই লম্পট পুরুষ আমার প্রতি যেমনই আচরণ করুক না কেন, সে অন্য কেউ নয়, আমারই প্রাণনাথ।

  • শ্লোক: 33

    বিদ্যাবিনয়সম্পন্নে ব্রাহ্মণে গবি হস্তিনি ।
    শুনি চৈব শ্বপাকে চ পণ্ডিতাঃ সমদর্শিনঃ ॥
    (গীতা ৫/১৮)
  • অনুবাদঃ- জ্ঞানবান পণ্ডিতেরা বিদ্যা-বিনয়সম্পন্ন ব্রাহ্মণ, গাভী, হস্তী, কুকুর ও চণ্ডাল সকলের প্রতি সমদর্শী হন।

  • শ্লোক: 34

    ব্রহ্মভূতঃ প্রসন্নাত্মা ন শোচতি ন কাঙ্ক্ষতি ।
    সমঃ সর্বেষু ভূতেষু মদ্ভক্তিং লভতে পরাম্ ॥
    (গীতা ১৮/৫৪)
  • অনুবাদঃ- ব্রহ্মভাব প্রাপ্ত প্রসন্নচিত্ত ব্যক্তি কোন কিছুর জন্য শোক করেন না বা আকাঙ্ক্ষা করেন না৷ তিনি সমস্ত প্রাণীর প্রতি সমদর্শী হয়ে আমার পরা ভক্তি লাভ করেন।

  • শ্লোক: 35

    সুখমাত্যন্তিকং যত্তদ্ বুদ্ধি গ্রাহ্যমতীন্দ্রিয়ম্ ৷
    বেত্তি যত্র ন চৈবায়ং স্থিতশ্চলতি তত্ত্বতঃ ॥
    (গীতা ৬/২১)
  • অনুবাদঃ- এই অবস্থায় শুদ্ধ অন্তঃকরণ দ্বারা আত্মাকে উপলব্ধি করে যোগী আত্মাতেই পরম আনন্দ আস্বাদন করেন। সেই আনন্দময় অবস্থায় অপ্রাকৃত ইন্দ্রিয়ের দ্বারা অপ্রাকৃত সুখ অনুভূত হয়। এই পারমার্থিক চেতনায় অবস্থিত হলে যোগী আর আত্ম-তত্ত্বজ্ঞান থেকে বিচলিত হন না।

  • শ্লোক: 36

    যো মাং পশ্যতি সর্বত্র সর্বং চ ময়ি পশ্যতি ৷
    তস্যাহং ন প্রণশ্যামি স চ মে ন প্রণশ্যতি ॥
    (গীতা ৬/৩০)
  • অনুবাদঃ- যিনি সর্বত্র আমাকে দর্শন করেন এবং আমাতেই সমস্ত বস্তু দর্শন করেন, আমি কখনও তাঁর দৃষ্টির অগোচর হই না এবং তিনিও আমার দৃষ্টির অগোচর হন না ।

  • (সূত্রঃ- বৈষ্ণব শ্লোকাবলী) এরপর দেখুন= ভক্ত ও ভক্ত সম্বন্ধীয়ঃ আরও কিছু গুরুত্বপূর্ণ শ্লোক :-

  • Add_6

    আপনার পছন্দমত যে কোন ধরনের লেখা পোস্ট করতে পারেন। মানসম্মত লেখা নামসহ সাইটে স্থায়ীভাবে পাবলিশ করা হয়।

    সুনির্বাচিত শ্লোকঃ-

    * * * Anupamasite-এ আপনাকে স্বাগতম। আপনার পছন্দমত যে কোন ধরনের লেখা পোস্ট করতে এখানে ক্লিক করুন।   আপনাদের পোস্ট করা লেখাগুলো এই লিংকে আছে, দেখতে এখানে ক্লিক করুন। ধন্যবাদ * * *

    জ্ঞানই শক্তি ! তাই- আগে নিজে জানুন , শেয়ার করে প্রচারের মাধ্যমে অন্যকেও জানতে সাহায্য করুন।