শ্রীমদ্ভগবদ গীতা'র নিম্নোক্ত শ্লোকের তাৎপর্য সম্পর্কে আপনার মতামত জানান।

শ্রীল প্রভুপাদ প্রণীত শ্রীমদ্ভগবদ গীতা'র প্রতিটি শ্লোকের অনুবাদ, গীতার গান ও তাৎপর্য-

তাৎপর্যটি মোবাইলে ভালোভাবে দেখতে আপনার মোবাইলটি রোটেট করুন (ঘুরান)।
  • শ্রীমদ্ভগবদগীতা ১৫শ অধ্যায়:- পুরুষোত্তমযোগ-এর সার সংক্ষেপ:-

    লেখক- শ্রী স্বপন কুমার রায়
    মহা ব্যবস্থাপক, বাংলাদেশ ব্যাংক৷
    সাধারণ সম্পাদক, শ্রী শ্রী গীতাসংঘ, মতিঝিল শাখা, ঢাকা৷
    --------------------------------------
              পঞ্চদশ অধ্যায়ে পরমেশ্বর ভগবানের পুরুষোত্তম স্বরূপের কথা আলোচনা করা হয়েছে বিধায় ইহা পুরুষোত্তমযোগ নামে আখ্যায়িত হয়েছে। তবে মাত্র বিশটি শ্লোকবিশিষ্ট এ অধ্যায়টির শুরুতেই একটি উপমার আশ্রয়ে এ জগত-সংসারকে একটি অশ্বত্থ বৃক্ষের সাথে তুলনা করা হয়েছে। এই সংসাররূপ অশ্বত্থবৃক্ষটি সম্পর্কে বলা হয়েছে যে, এই বৃক্ষের মূল উর্ধদিকে কিন্তু শাখা-প্রশাখা নিম্নদিকে। বাস্তব জগতে আমাদের এমন কোন বৃক্ষের কথা অভিজ্ঞতায় নেই যে বৃক্ষের মূল উর্ধদিকে এবং শাখা-প্রশাখা নিম্নদিকে থাকে। কিন্তু গীতাতে এমন অশ্বত্থবৃক্ষের কথা বলা হলো, কারণ বেদশাস্ত্রমতে এই জগৎ-সংসারের উৎপত্তিস্থল হচ্ছে মূলতঃ ব্রহ্মলোকে। সেই অনাদির আদি পরমেশ্বর পরব্রহ্ম-ই হচ্ছে এসংসাররূপ বৃক্ষের সৃষ্টিকর্তা। কাজেই এ অশ্বত্থবৃক্ষের মূল উর্ধদিকে। ইহাকে ব্রহ্মবৃক্ষও বলা যায়। এই ব্রহ্মবৃক্ষ উর্ধমূল অর্থাৎ ব্রহ্মলোক থেকে মনুষ্যলোকে (অধঃলোকে) ধাবিত হয়েছে বিধায়ই ইহার শাখা-প্রশাখা অধোগামী। এই সংসারবৃক্ষকে তত্ত্বতঃ জানলে প্রকৃতপক্ষে জীব, জগৎ এবং ব্রহ্ম- এই তিন বিষয়েরই জ্ঞান জন্মে। কিন্তু জগতের সাধারণ মানুষ এই বৃক্ষের প্রকৃত স্বরূপ জানতে পারেনা। আর প্রকৃত স্বরূপ জানতে পারেনা বলেই জীব মায়াবদ্ধ থাকে, তার মুক্তিলাভ হয়না। সেকারণেই বৈরাগ্যরূপ অস্ত্র দ্বারা এই মায়াকে ছেদনপূর্বক পরমেশ্বরকে চিনে নেয়ার জন্য উপদেশ দেয়া হয়েছে। পরমেশ্বরের কথা বলতে গিয়ে ভগবান শ্রীকৃষ্ণ পুরুষোত্তম তত্ত্বেরও ব্যাখ্যা করেছেন। তিনি বললেন, জগতে সাধারণতঃ দু’শ্রেণীর পুরুষের কথা বিদিত। এদের একটি হচ্ছে ক্ষর পুরুষ এবং অপরটি হচ্ছে অক্ষর পুরুষ। কিন্ত শ্রীকৃষ্ণ জানালেন যে তিনি ক্ষরের অতীত এবং অক্ষর অপেক্ষা উত্তম, তাই তিনি পুরুষোত্তম। ভগবান শ্রীকৃষ্ণ এখানে অক্ষর অপেক্ষাও উত্তম পুরুষ বলতে কি বুঝালেন সেকথাটি অনুধাবন করা প্রয়োজন। এজগতে যা কিছু জন্ম, বৃদ্ধি ও মৃত্যুর আবর্তনাধীন তাই ক্ষর শ্রেণীভূক্ত। ক্ষর পুরুষ জন্ম গ্রহণ করে, তার বৃদ্ধি ঘটে এবং একটি সময়ান্তে তার মৃত্যু ঘটে বা বিনাশপ্রাপ্ত হয়। অপরপক্ষে অক্ষর পুরুষ অজ, নিত্য ও শ্বাশত। ইহা জন্ম-মৃত্যুর অতীত, অব্যয়, অদৃশ্যমান, ব্রহ্ম সনাতন। কিন্তু পুরুষোত্তম যিনি তিনি ক্ষরের অতীত অর্থাৎ জড় জগতের পঞ্চভৌতিক জীবের ন্যায় জন্ম-মৃত্যুরমধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। জগতে তাঁর আবির্ভাব ও অন্তর্ধ্যান সাধারণ জীবের জন্ম মৃত্যুর মত মনে হলেও তিনি মূলতঃ অজ ও অমর। লীলার কারণে তিনি জীবের ন্যায় আচরণ করেন মাত্র। কাজেই তিনি ক্ষর পুরুষের আওতাভূক্ত নন। আবার তিনি অক্ষর পুরুষের চেয়েও উত্তম, কারণ তিনি অব্যয় ও অক্ষর হওয়া সত্ত্বেও ইচ্ছানুযায়ী তিনি লীলা বিলাসের হেতু দেহধারণ করে ধরাধামে অবতীর্ণ হতে পারেন এবং হয়ে থাকেন। অক্ষর পুরুষ ক্ষর দেহধারণ করতে পারেন না, কিন্তু পুরুষোত্তম তাও করতে পারেন। একারণেই পুরুষোত্তম ক্ষর ও অক্ষর উভয় প্রকার পুরুষ অপেক্ষা উত্তম। এই পুরুষোত্তমবাদই মূলতঃ গীতার কর্ম, ভক্তি, ও জ্ঞানের মধ্যে সমন্বয়ের একটি ক্ষেত্র তৈরী করেছে। অতএব, যিনি ভগবানশ্রীকৃষ্ণকে পুরুষোত্তম বলে জানেন, তিনি-ই প্রকৃতপক্ষে সর্বজ্ঞ এবং তিনিই তাঁকে সর্বতোভাবে ভজনা করেন। জয় শ্রীকৃষ্ণ ।।

  • শ্রীমদ্ভগবদগীতা ১৬শ অধ্যায়: দৈবাসুরসম্পদবিভাগযোগ- এর সার সংক্ষেপ দেখুন
  • Add_6

    * * * Anupamasite-এ আপনাকে স্বাগতম। আপনার পছন্দমত যে কোন ধরনের লেখা পোস্ট করতে এখানে ক্লিক করুন।   আপনাদের পোস্ট করা লেখাগুলো এই লিংকে আছে, দেখতে এখানে ক্লিক করুন। ধন্যবাদ * * *

    জ্ঞানই শক্তি ! তাই- আগে নিজে জানুন , শেয়ার করে প্রচারের মাধ্যমে অন্যকেও জানতে সাহায্য করুন।

    Say something

    Please enter name.
    Please enter valid email adress.
    Please enter your comment.