শ্রীমদ্ভগবদ গীতা'র নিম্নোক্ত শ্লোকের তাৎপর্য সম্পর্কে আপনার মতামত জানান।

শ্রীল প্রভুপাদ প্রণীত শ্রীমদ্ভগবদ গীতা'র প্রতিটি শ্লোকের অনুবাদ, গীতার গান ও তাৎপর্য-

তাৎপর্যটি মোবাইলে ভালোভাবে দেখতে আপনার মোবাইলটি রোটেট করুন (ঘুরান)।
  • শ্রীমদ্ভগবদগীতা ২য় অধ্যায় সাংখ্যযোগ- এর সার সংক্ষেপ:-

    লেখক- শ্রী স্বপন কুমার রায়
    মহা ব্যবস্থাপক, বাংলাদেশ ব্যাংক৷
    সাধারণ সম্পাদক, শ্রী শ্রী গীতাসংঘ, মতিঝিল শাখা, ঢাকা৷
    --------------------------------------
              সাংখ্যযোগ গীতার দ্বিতীয় বৃহত্তম অধ্যায়। এতে ৭২ টি মন্ত্র রয়েছে। সাংখ্য শব্দটি এখানে আত্মতত্ত্ব বা তত্ত্বজ্ঞান অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে। এ অধ্যায়ের প্রথম থেকে দশম শ্লোক পর্যন্ত অর্জুনের বিষন্নতা নিয়েই আলাচিত হয়েছে। এখানে কিংকর্তব্যবিমূঢ় অর্জুন শ্রীকৃষ্ণ সমীপে জানতে চেয়েছেন কিভাবে তিনি তার বিষন্নতাকে দূরীভূত করে কর্তব্যকর্ম নির্ধারণ করতে পারেন। প্রিয় ভক্ত অর্জুনের শোক ও বিষাদ অপনোদন করতঃ তাকে কর্তব্যকর্মে উদ্বুদ্ধ করতে শ্রীকৃষ্ণ একাদশ শ্লোক থেকে ত্রিশতম শ্লোক পর্যন্ত আত্মতত্ত্ব আলোচনা করেন। এখানে দেহের নশ্বরতা ও আত্মার অবিনশ্বরতা, দেহ ও সুখ-দুঃখাদির অনিত্যতা এবং আত্মার নিত্যতা সম্পর্কে উপদেশ দিয়েছেন। পন্ডিতগণ কখনও কারো মৃত্যুতে শোক করেন না। এরূপ জ্ঞানোপদেশই এই মন্ত্রগুলোর মূল বিষয়। অতপর পরবর্তী সাতটি শ্লোকে তিনি স্বধর্ম পালনের আবশ্যকতা দেখিয়ে অর্জুনকে যুদ্ধে প্রণোদিত করতে প্রয়াসী হয়েছেন। কিন্ত্ত অর্জুনের সংশয় যে, আত্মা অবিনাশী বলেই কি লোকহত্যায় পাপ হয় না? যুদ্ধ ক্ষত্রিয়ের ধর্ম হলেও কি রাজ্যলাভের জন্য আত্মীয়-স্বজন, গুরুজনদেরকে বধ করা সমীচীন? অর্জুনের এ সংশয় নিরসনের জন্য শ্রীকৃষ্ণ অর্জুনকে নিষ্কাম কর্মযোগী হবার পরামর্শ দিলেন। তিনি জানালেন, ফলাকাঙ্খা ত্যাগ করে, লাভ-অলাভ, জয়-পরাজয়কে তুল্য জ্ঞান করে কর্ম করলে তাতে পাপ স্পর্শ করে না। এই সমত্ববুদ্ধি, নিষ্কাম কর্মের উপদেশই প্রদত্ত হয়েছে ৩৮ থেকে ৪০ তম শ্লোকে। অতপর শ্রীকৃষ্ণ অর্জুনকে ব্যবসায়াত্মিকা ভক্তি বা নিশ্চয়াত্মিকা বুদ্ধি বা ভক্তির কথা বললেন। নিশ্চয়াত্নিকা ভক্তি সর্বদাই এক, কিন্তু অনিশ্চয়াত্মিকা ভক্তি বহু প্রকারের হয়ে থাকে। অল্পবুদ্ধিসম্পন্ন বা বিবেকবর্জিত লোকেরা জাগতিক ভোগ ও ঐশ্বর্যে আসক্ত হয়ে পড়ে বিধায় তাদের বুদ্ধি বা ভক্তি একনিষ্ঠ হয় না। কিন্তু ভগবানকে লাভ করতে হলে প্রয়োজন একনিষ্ঠ ভক্তি বা নিশ্চয়াত্মিকা ভক্তি। তাই শ্রীকৃষ্ণ অর্জুনকে নির্গুণ স্তরে অধিষ্ঠিত করে সিদ্ধি ও অসিদ্ধিকে সমজ্ঞান করে যোগযুক্ত হয়ে স্বধর্ম বিহিত কর্ম করার উপদেশ দিলেন। অর্জুন তখন শ্রীকৃষ্ণ সমীপে জানতে চাইলেন যে,স্থিত প্রজ্ঞ বা অচলাবুদ্ধি সম্পন্ন মানুষের লক্ষণ কি? তিনি কিভাবে অবস্থান ও বিচরণ করেন? তদুত্তরে শ্রীকৃষ্ণ বললেন যে, জীব যখন সকল মনোগত কাম পরিত্যাগপূর্বক আত্মাতেই পূর্ণ পরিতৃপ্তি লাভ করে তখন তাকে স্থিত প্রজ্ঞ বলা হয়।স্থিত প্রজ্ঞ ব্যক্তি সর্বদা সুখ-দুঃখে অনুদ্বিগ্নমনা এবং তিনি রাগ,ভয়, ক্রোধ থেকে মুক্ত।তাঁর নিকট প্রিয় ও অপ্রিয় বস্তুতেও কোন প্রভেদ নেই। প্রকৃতপক্ষে তিনি সকল জড় বিষয়ে আসক্তি রহিত। কূর্ম তদ্রুপ তার অঙ্গসমূহ তার কঠিন আবরণের মধ্যে লুকিয়ে রাখে, স্থিত প্রজ্ঞ ব্যক্তিও তদ্রুপ তাঁর ইন্দ্রিয়গুলোকে বিষয় থেকে প্রত্যাহার করে চিন্ময় চেতনায় অধিষ্ঠিত থাকেন। পরিশেষে (৭১-৭২ শ্লোক) বলা হয়েছে যে, যিনি জীবনের অন্তিম সময়ে এরূপ ব্রাহ্মিস্থিতি লাভ করেন তিনি এ জড়জগতের সকল বন্ধন থেকে মুক্ত হয়ে ভগবৎধামে গমন করেন। জয় শ্রীকৃষ্ণ ।।

  • শ্রীমদ্ভগবদগীতা ৩য় অধ্যায় কর্মযোগ- এর সার সংক্ষেপ দেখুন
  • Add_6

    * * * Anupamasite-এ আপনাকে স্বাগতম। আপনার পছন্দমত যে কোন ধরনের লেখা পোস্ট করতে এখানে ক্লিক করুন।   আপনাদের পোস্ট করা লেখাগুলো এই লিংকে আছে, দেখতে এখানে ক্লিক করুন। ধন্যবাদ * * *

    জ্ঞানই শক্তি ! তাই- আগে নিজে জানুন , শেয়ার করে প্রচারের মাধ্যমে অন্যকেও জানতে সাহায্য করুন।