ভক্তসঙ্গে তীর্থ দর্শন, পূণ্যভূমী- তীর্থক্ষেত্র , গুরুত্বপূর্ণ তীর্থক্ষেত্রের মহিমা ও এসংক্রান্ত বিস্তারিত বিবরণ।

গুরুত্বপূর্ণ তীর্থক্ষেত্র গুলো কোথায় কোথায় অবস্থিত, সেখানে কীভাবে যাবেন? তীর্থক্ষেত্র দর্শনে যেয়ে কোথায় থাকবেন, কি খাবেন ইত্যাদি বিষয়ে ভগবদ্ভক্তদের বাস্তব অভিজ্ঞতালব্ধ জ্ঞান ।

  • সুপ্রাচীন তীর্থভূমি

    উজ্জ্বয়িনী

    সীতারাম দাস

    গত বাইশ বৎসর যাবৎ ভক্তরূপে কৃষ্ণভাবনামৃত আন্দোলনের সঙ্গে জড়িত থাকলেও আমার কখনও ভারতে আসা হয়নি । অবশেষে শ্রীমৎ ভক্তিচারু স্বামী মহারাজের আমন্ত্রণে সপরিবারে দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে ভারতে চলে এলাম , সুপ্রাচীন তীর্থভূমি উজ্জ্বয়িনীতে কৃষ্ণসেবায় নিজেকে নিয়োজিত করব বলে ।

        মুম্বাইতে আমরা যখন প্লেন থেকে নামলাম , তখন রাত দু'টো অত রাতেও সেখানে কত কোলাহল । সেইসঙ্গে গরম আবহাওয়া আর প্যাচপ্যাচে ঘাম । আমরা যাব উজ্জ্বয়িনী , কিন্তু কি করব কোন ধারণাই নেই । অবশেষে মুম্বাই বিমান বন্দরে আমাদের যার নিতে আসার কথা ছিল , তিনি আমাদের গাইড করে ষ্টেশনে নিয়ে গিয়ে উজ্জ্বয়িনী গামী ট্রেনে উঠিয়ে দিলেন । তিনি আমাদের ট্রেনে উঠিয়ে দিলেন বটে , কিন্তু আমাদের হাতে ট্রেনের টিকিটটি দিয়ে যেতে ভুলে গেলেন । আশ্চর্যজনকভাবে ট্রেনের দায়িত্বশীল কোন টিটি বা কেউই আমাদের ট্রেন থেকে নামিয়ে দিল না । সকলকেই দেখলাম সাহায্যের মনোভাবাপন্ন । মুম্বাই মন্দিরের অধ্যক্ষ আমাকে শ্রীশ্রীরাধা রাসবিহারী'র কিছু প্রসাদ দিয়েছিলেন , আমি সেই প্রসাদ থেকে কিছুটা ট্রেনের টিটিকে দিলাম । অবশেষে কোথা থেকে জানি না টিটি র মোবাইলে আমাদের টিকিটের নাম্বার ইত্যাদির নিশ্চয়তা জ্ঞাপন করে ফোন এল এবং আশ্চর্যজনকভাবেই সবকিছুর সমাধান হয়ে গেল ।

        সকালবেলার যাত্রাপথে অগণিত ছোট বড় ষ্টেশন আমার ট্রেনের জানালার দৃষ্টিপথে পার হয়ে যাচ্ছিল একের পর এক । আমার প্রথম ভারতীয় সকালের দৃষ্টিপথে আমি ভারতের বৈচিত্র্যময় ও সহজ সরল জীবনযাত্রাপূর্ণ স্থানসমূহ লক্ষ্য করছিলাম । এভাবেই লক্ষ্য করতে করতে একসময় দেখলাম ভূমি পাথুরে ও কঠিন হতে শুরু করেছে । আমার এক সহযাত্রী আমাকে জানালেন— ' উজ্জ্বয়িনী আসছে । অর্থাৎ সপরিবারে এবার আমাকে নেমে যেতে হবে । আমি আমার মালপত্তর দরজার দিকে এগিয়ে রাখতে থাকি I জিনিষপত্তর হাতে হাতে ধরে আমার সহযাত্রীরাও আমাকে ট্রেন থেকে নামতে সাহায্য করলেন । তাদের সকলেরই সাহায্য করার মানসিকতা দেখে ভালো লাগলো ।

        উজ্জ্বয়িনীর রাস্তায় নেমে অন্য এক অভিজ্ঞতা । রাস্তায় মানুষের ভীড় রয়েছে । গাড়ীগুলি একে বেকে চলেছে । সেই সঙ্গে একটি গরুকে দেখলাম রাস্তার মাঝখানে দাঁড়িয়ে খড় চিবুচ্ছে । উট , হাতী ও গরুর গাড়ীও রয়েছে । সেই সঙ্গে রয়েছে অসংখ্য হাতে টানা গাড়ী । ফলে বিভিন্ন ধরনের গাড়ী ও পশুরা রাস্তায় জায়গার জন্য পরস্পর পরস্পরের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করে চলেছে । এইসব দেখে আমার শিশুকন্যা তো বিস্ময়ে ও আনন্দে চিৎকার করে উঠল । আমাদের যিনি পথ দেখিয়ে নিতে এসেছিলেন , সেই লক্ষ্মীকান্তকে জিজ্ঞাসা করলাম , ' এরকমই কি উজ্জ্বয়িনীর রাস্তাঘাটের স্বাভাবিক পরিস্থিতি ? ’ আমার প্রশ্ন শুনে লক্ষ্মীকান্ত হেসে জানালেন ' উজ্জ্বয়িনীর সর্বত্র মানুষ রয়েছে ।

        রাস্তায় যেতে যেতে ইসকন উজ্জ্বয়িনীর এক বিরাট বিলবোর্ড চোখে পড়ল । পথে লক্ষ্মীকান্তকে আমি উজ্জ্বয়িনীর বিভিন্ন মন্দির প্রসঙ্গে জিজ্ঞাসা করেছিলাম । লক্ষ্মীকান্ত জানিয়েছিলেন উজ্জ্বয়িনীতে শিবের বহু মন্দির রয়েছে । তবে যে স্থানে শ্রীকৃষ্ণ ও বলরাম তাঁদের গুরুগৃহে সান্দীপনী মুনির আশ্রমে চৌষট্টি কলা শিক্ষা করেছিলেন , সেই স্থান , সেই আশ্রম আজও পবিত্র স্থান রূপে বহু মানুষের অন্যতম দর্শনের স্থান উজ্জ্বয়িনীর প্রধান মন্দির হল মহাকালেশ্বর মন্দির , যেখানে এক অপূর্ব শিব লিঙ্গের অর্চনা হয়ে থাকে । ভগবান শিবের নিবাস স্বরূপ সাতটি পবিত্র স্থানের মধ্যে উজ্জ্বয়িনী একটি । শিব সেখানে পবিত্র স্থানের সংরক্ষক রূপে নিত্যত বাস করেন ।

        ছবি মহাকালেশ্বর মন্দির উজ্জ্বয়িনী ঐতিহ্যগতভাবে ভারতের সাতটি অন্যতম পবিত্র স্থানের একটি বলে বিবেচিত হয় এবং অমৃতভাণ্ড নিয়ে দেবতা ও অসুরদের যুদ্ধের মাঝে পৃথিবীর যে চারটি স্থানে অমৃত পতিত হয়েছিল , উজ্জ্বয়িনী তার মধ্যে একটি । এই পৌরাণিক ঘটনা উজ্জ্বয়িনীকে এক পারমার্থিক গুরুত্ব প্রদান করেছে , যার ফলে প্রত্যেক বারো বৎসরে একবার এখানে কুম্ভমেলা অনুষ্ঠিত হয় । সেই সময় সারা ভারত থেকে আগত কয়েক লক্ষ তীর্থযাত্রীর ভীড়ে এই প্রাচীন নগরী উজ্জ্বয়িনী পূর্ণ হয়ে ওঠে । উজ্জ্বয়িনীর আর একটি তাৎপর্য এই যে , পবিত্র শিপ্রা নদীর তীরে এই সুপ্রাচীন শহরটি অবস্থিত । এখানে এই শিপ্রা নদীর তীরেই রয়েছে পবিত্র ' রামঘাট ' , যেখানে ত্রেতাযুগে ভগবান শ্রীরামচন্দ্র অবগাহন বা স্নান করতেন । ভারতের সাতটি পবিত্র স্থানের অন্যতম এই উজ্জ্বয়িনী । অন্য ছয়টি পবিত্র স্থান হল অযোধ্যা , মথুরা , হরিদ্বার , বেনারস , কাঞ্চীপুরম ও দ্বারকা । এই সাতটি পবিত্র স্থানকে মুক্তি স্থলও বলা হয় ।

        স্কন্দ পুরাণে উজ্জ্বয়িনীর মহিমা বিস্তৃতরূপে বর্ণিত হয়েছে । পূর্বে উজ্জ্বয়িনীকে মহাকাল বনও বলা হত । একসময় অবন্তী রাজ্যের রাজধানী ছিল এই উজ্জ্বয়িনী । রাজা উদয়ন এখানে রাজকন্যা বাসবদত্তাকে বিবাহ করেছিলেন । গুপ্ত সাম্রাজ্যের সময়ও সম্রাট চন্দ্রগুপ্ত বিক্রমাদিত্যের রাজধানী ছিল এই উজ্জ্বয়িনী । এখানেই সম্রাট বিক্রমাদিত্য তাঁর নবরত্ন পারিষদ সহ ( ধন্বন্তরি , ক্ষপণক , অমরসিংহ , শঙ্কু , বেতালভট্ট , ঘটখর্পরা , বরাহমিহির , বররুচি ও কালিদাস ) সভা করতেন ।

        উজ্জ্বয়িনীর সুবিখ্যাত মন্দির ‘ মহাকালেশ্বর মন্দির ' একটি হ্রদের ধারে অবস্থিত । কথিত আছে যে একবার দুষন নামে এক দানব অবস্তীর অধিবাসীদের উপর অত্যাচার শুরু করলে স্বয়ং শিব এখানকার ভূমি ভেদ করে উত্থিত হয়ে দানবকে পরাস্ত করেছিলেন । অতঃপর অবস্তীবাসীদের দ্বারা অনুরুদ্ধ হয়ে শিব উজ্জ্বয়িনীকে তাঁর এক নিত্য ধাম রূপে গ্রহণ করেন এবং মহাকালেশ্বর জ্যোতির্লিঙ্গ রূপে তিনি সেখানে এখনও বিরাজ করছেন ।

        সুপ্রাচীন পরিবেশে পরিমণ্ডিত হয়ে এখন এই মন্দির নগরী উজ্জ্বয়িনীতে নবনির্মিত ইসকন মন্দিরও এক বিশেষ স্থান অধিকার করেছে । অধিষ্ঠিত হয়েছেন শ্রীশ্রীরাধা - মদনমোহন । তাজমহল যে মার্বেল পাথরে সজ্জিত , রাজস্থানের সেই মাক্রানার শ্বেত মার্বেল পাথরে নির্মিত ইসকনের এই শুভ্র সুন্দর মন্দিরটিও এখন উজ্জ্বয়িনীর অন্যতম আকর্ষণীয় ও দ্রষ্টব্য এক মন্দির । শ্রীশ্রীরাধা - মদনমোহনজীর সঙ্গে এখানে অধিষ্ঠিত রয়েছেন শ্রীকৃষ্ণ ও বলরামের বিগ্রহও । একদিন এই উজ্জ্বয়িনীতেই তাঁরা তাঁদের গুরুগৃহে শিক্ষার কাল অতিবাহিত করেছিলেন । সেই সঙ্গে ইসকনের এই মন্দিরে অধিষ্ঠিত হয়েছেন গৌর - নিতাই রূপে শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভু ও শ্রীনিত্যানন্দ প্রভুও । শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুর নির্দেশ প্রচার করাইতো ইসকনের ব্রত ।

        উজ্জ্বয়িনীর ভরতপুরী এলাকায় ইসকনের এই নতুন শ্বেতশুভ্র মন্দিরটি নির্মিত হয়েছে মাত্র দেড় বছর হল । ২০০৬ খ্রিস্টাব্দের ১০ ফেব্রুয়ারী , শ্রীনিত্যানন্দ ত্রয়োদশী তিথিতে এই শ্রীশ্রীরাধা - মদনমোহন মন্দিরের দ্বারোদ্ঘাটন হয় । ইসকনের অন্যতম আচার্য শ্রীমৎ ভক্তিচারু স্বামী মহারাজের দায়িত্ব ও উদ্যোগে উজ্জয়িনীর এই মন্দিরটি নির্মিত হয়েছিল অত্যন্ত দ্রুতগতিতে । মাত্র দশ মাসে এই মন্দিরের নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হয়েছিল । এই প্রসঙ্গে কথা বলতে গিয়ে শ্রীমৎ ভক্তিচারু স্বামী মহারাজ জানালেন “ কি করে এত দ্রুত , মাত্র ১০ মাসে মন্দিরের কাজ সম্পূর্ণ হয়েছিল , তা ভেবে আমারও

        ছবি রামঘাট, সান্দীপনী মুনির আশ্রম বিস্ময় জাগে । প্রথমেই যে উপলব্ধি আমার মনে জাগে সেটি হল শ্রীকৃষ্ণের কৃপা । তাঁর কৃপা ছাড়া এত দ্রুত মন্দির নির্মাণ সম্ভব নয় । এবং প্রকৃতপক্ষে এটা প্রমাণিত হল যে , আপনি যখন ঐকান্তিকভাবে শ্রীকৃষ্ণের সেবা করার চেষ্টা করবেন , তখন শ্রীকৃষ্ণ আপনাকে সাহায্য করবেন । আর তখন সকল ধরনের অপূর্ব ক্রিয়াসমূহ ঘটবে । ”

        শ্রীমৎ ভক্তিচারু মহারাজ আরও স্মৃতিচারণ করেন , — “ ২০০৬ এ মন্দির উদ্বোধনের আগের দিনটির কথা আমার এখনও মনে পড়ে । সেদিন আমি প্রচণ্ড উদ্বিগ্নতার মধ্যে ছিলাম । কেননা কোন কিছুই তখনও প্রস্তুত নয় । মন্দির তখন সম্পূর্ণ হয় নি । উদ্বোধনের আগের দিন রাত্রে মন্দির কক্ষটি ছিল যেন এক যুদ্ধক্ষেত্র । চারিদিকে তখনও মিস্ত্রীদের ভাড়া বাঁধা রয়েছে । মেঝেতে নানা ধরনের জিনিস ডাই করে ছড়ানো সিলিং তখনও সম্পূর্ণ নয় । সাতাশ ফুট ডায়ামিটারের চিত্র তখনও লাগানো হয় নি । কিন্তু সকলেই যে যার ক্ষেত্রে মনোযোগ সহকারে সারা রাত্রি ধরে কাজ করেছিল ফলে কৃষ্ণের কৃপায় , সকালের মধ্যেই সবকিছু সম্পূর্ণ হয়ে যায় । কেবল মন্দির মার্জনের কাজটি বাকী থেকে গিয়েছিল । প্রকৃতপক্ষে মন্দির তখন ছিল একটি নির্মাণ স্থল । তাই মন্দিরের ভিতরে ও বাইরে রাবিশ , ধুলো বালি , ভাঙা চোরা এটা সেটা বিভিন্ন দ্রব্য ছড়িয়ে ছিটিয়ে ছিল । ইতিমধ্যে মন্দির উদ্বোধনের প্রাক্কালে বিভিন্ন স্থান থেকে প্রায় ২৫০০ ভক্ত এসে সমবেত হয়েছে । আমি তাই সকালবেলা মঙ্গল আরতির সময় ঘোষণা করলাম , ' যারা মন্দির মার্জন করতে চান , তাঁরা আসতে পারেন । প্রায় সকলেই তখন মঙ্গল আরতির পর মন্দির মার্জনের সেবায় নিজেদের নিয়োজিত করে । ফলে সকাল সাড়ে পাঁচটা থেকে সাড়ে সাতটা , দু ' ঘন্টার মধ্যে সমগ্র মন্দির ও মন্দির চত্বর ঝকঝকে পরিষ্কার হয়ে উদ্বোধনের জন্য প্রস্তুত হয়ে যায় । ”

        উজ্জ্বয়িনীর ইসকন মন্দির প্রকল্পটি বিরাট । তাই মন্দির নির্মাণ সম্পূর্ণ হলেও আনুষঙ্গিক পরিকল্পনাগুলোর রূপায়ণ ধীরে ধীরে হচ্ছে । ইতিমধ্যেই এখানে ২৮ কক্ষ বিশিষ্ট একটি আন্তর্জাতিক মানের অতিথিশালার নির্মিত হয়েছে , যার একতলায় রয়েছে সুসজ্জিত কৃষ্ণভাবনামৃত রেস্তোরা ‘গোবিন্দ’ । অতিথিশালার সর্বোচ্চ তলে নির্মিত হয়েছে একটি সভাগৃহ , যেখানে কৃষ্ণভাবনাময় নাটক , ভারতীয় ধ্রুপদী নৃত্য , গীত ও ভক্তিমূলক সম্মেলনের অনুষ্ঠান হয়ে থাকে । অতিথিশালা সংলগ্ন আরেকটি অনুরূপ অট্টালিকায় রয়েছে ব্রহ্মচারী আশ্রম , যার একতলায় রয়েছে প্রসাদকক্ষ ও কেন্দ্রীয় কার্যালয় ভবন । অতিথিশালা ও ব্রহ্মচারী আশ্রম উভয় অট্টালিকাই সাদা মার্বেলে আচ্ছাদিত ।

        ইসকন উজ্জ্বয়িনীর মন্দির প্রকল্পের কার্যাবলীর মধ্যে ইতিমধ্যেই যা সাড়া ফেলেছে তা হল স্কুল ছাত্র - ছাত্রীদের মধ্যে মিড ডে মিল প্রকল্প । মধ্যপ্রদেশের বিভিন্ন জেলার বিভিন্ন স্থানের প্রায় ২৮০০০ ছাত্র - ছাত্রীর মধ্যে উজ্জ্বয়িনীর ইসকন কেন্দ্রের ভক্তগণ প্রতিদিন মধ্যাহ্নের খাবার বিতরণ করছেন । প্রতিদিন এত বিপুল সংখ্যক ছাত্র - ছাত্রী বা মানুষের জন্য রান্না করবার জন্য এখানে এক সুবিশাল আধুনিক রান্নাঘর নির্মিত হয়েছে । এখানে হাতরুটি তৈরির একটি মেশিন রয়েছে যেখানে ঘণ্টায় দশ হাজার রুটি তৈরি হচ্ছে ।

        এখানে শ্রীল প্রভুপাদের বিগ্রহ তৈরীরও একটি প্রকল্প চালু হয়েছে । এখান থেকে শ্রীল প্রভুপাদের মূর্তি নির্মিত করে সারা বিশ্বে প্রেরণ করা হচ্ছে । এখানে একটি গোশালাও রয়েছে । তবে ভবিষ্যতে আরও বৃহৎ একটি গোশালার পরিকল্পনা রয়েছে । পরিকল্পনা রয়েছে একটি বৈদিক গ্রন্থাগার নির্মাণের । এছাড়াও তৈরী হবে জৈব কৃষি শিক্ষণ প্রকল্প , আয়ুর্বেদিক কলেজ ও চিকিৎসা কেন্দ্র , বরাহমিহির আই.টি পার্ক এবং বিমান চালনা শিক্ষণ কেন্দ্র ।

        শ্রীমৎ ভক্তিচারু স্বামী মহারাজ বললেন , “ এখন সবে শুরু । আমরা এখানে এমন অপূর্ব কিছু অর্জনের জন্য এসেছি যা একদিন সারা বিশ্ব বিস্ময়ের সঙ্গে লক্ষ করবে এবং ভারতের মহানতার কথা স্বীকার করবে । এই উজ্জ্বয়িনী অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি স্থান । শ্রীকৃষ্ণ ও বলরামের শিক্ষাভূমি । আমাদের উদ্দেশ্য মানুষকে শিক্ষিত করে তোলা । এই কৃষ্ণভাবনামৃত আন্দোলন প্রকৃতপক্ষে এক শিক্ষামূলক আন্দোলন । কৃষ্ণকে হৃদয়ঙ্গম করে , কিভাবে কৃষ্ণের সঙ্গে আমাদের সম্পর্কের উন্নয়ন ঘটিয়ে , কৃষ্ণের ভক্ত হওয়ার মাধ্যমে আমাদের জীবনকে সার্থক করে তোলা যায় , কৃষ্ণের গুরুগৃহে শিক্ষালাভের এই স্থান থেকে সারা বিশ্বে এই শিক্ষার বিস্তৃতি ঘটানই আমাদের উদ্দেশ্য । এই মহান ব্রতে সামিল হওয়ার জন্য আমরা তাই সকলকেই আমন্ত্রণ জানাচ্ছি । ”

  • পরবর্তী তীর্থস্থান ১৮ ) নাথদ্বার
  • * * * Anupamasite-এ আপনাকে স্বাগতম। আপনার পছন্দমত যে কোন ধরনের লেখা পোস্ট করতে এখানে ক্লিক করুন।   আপনাদের পোস্ট করা লেখাগুলো এই লিংকে আছে, দেখতে এখানে ক্লিক করুন। ধন্যবাদ * * *

    জ্ঞানই শক্তি ! তাই- আগে নিজে জানুন , শেয়ার করে প্রচারের মাধ্যমে অন্যকেও জানতে সাহায্য করুন।